পাঁচ বছরে রেলের আয় বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে।যাত্রী পরিবহন বেড়েছে প্রায় ১৬ শতাংশ।

আভা ডেস্ক : গত কয়েক বছর ধরেই বাড়ছে বাংলাদেশ রেলওয়ের যাত্রী পরিবহন। এতে রেলের আয়ও প্রতি বছর বাড়ছে। এর মধ্যে গত অর্থবছরই রেলের যাত্রী পরিবহন বেড়েছে প্রায় ১৬ শতাংশ। এছাড়া পণ্য পরিবহন বেড়েছে ১৪ শতাংশ। এতে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটির আয় বেড়েছে প্রায় ২৪ শতাংশ। আর পাঁচ বছরে রেলের আয় বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে।

আয়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ব্যয় বাড়ায় রেলওয়ের লোকসান কমানো যায়নি। ফলে গত পাঁচ বছরে সংস্থাটির লোকসানও প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।
তথ্যমতে, ২০১২-১৩ অর্থবছরে রেলের আয় ছিল ৮০৪ কোটি টাকা। গত অর্থবছর তা বেড়ে দাঁড়ায় এক হাজার ৬২৩ কোটি ৫১ লাখ টাকা। অর্থাৎ পাঁচ বছরে সংস্থাটির আয় বেড়েছে ৮১৯ কোটি ৫১ লাখ টাকা বা প্রায় ১০২ শতাংশ। এছাড়া ২০১৩-১৪ অর্থবছরে রেলওয়ে আয় করে ৯৩১ কোটি ৯৩ লাখ টাকা, ২০১৪-১৫তে ৯৫৬ কোটি ১২ লাখ, ২০১৫-১৬তে এক হাজার ২৩ কোটি ৭৯ লাখ ও ২০১৬-১৭তে এক হাজার ৩০৬ কোটি ৫৪ লাখ টাকা।

আয়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে গত পাঁচ বছরে রেলের ব্যয়ও প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। ফলে রেলের লোকসান কমানো যায়নি। এর মধ্যে ২০১২-১৩ অর্থবছরে রেলের ব্যয় ছিল এক হাজার ৬৮৫ কোটি টাকা। গত অর্থবছর তা বেড়ে হয়েছে তিন হাজার ১৮৩ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। অর্থাৎ পাঁচ বছরে রেলের ব্যয় বেড়েছে এক হাজার ৪৯৮ কোটি ৯৩ লাখ টাকা বা ৮৯ শতাংশ। এছাড়া ২০১৩-১৪ অর্থবছরে রেলওয়ের ব্যয় ছিল এক হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা, ২০১৪-১৫তে এক হাজার ৮২৭ কোটি ২৭ লাখ, ২০১৫-১৬তে দুই হাজার ২২৯ কোটি ২২ লাখ ও ২০১৬-১৭তে তিন হাজার ১৪২ কোটি ৩০ লাখ টাকা।

এদিকে ২০১৭-১৮ অর্থবছর রেকর্ড পরিমাণ আয় করলেও উচ্চ ব্যয়ের কারণে বড় অঙ্কের লোকসান গুনেছে রেলওয়ে। এ সময় সংস্থাটি লোকসান দাঁড়ায় এক হাজার ৭৭৭ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। তবে চূড়ান্ত হিসেবে এ লোকসান আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা। আর ২০১২-১৩ অর্থবছরে রেলের লোকসানের পরিমাণ ছিল ৮৮১ কোটি টাকা। অর্থাৎ পাঁচ বছরে সংস্থাটির লোকসান বেড়েছে ১০২ শতাংশ। এছাড়া ২০১৩-১৪ অর্থবছর রেলওয়ের লোকসান ছিল ৮০৩ কোটি টাকা, ২০১৪-১৫তে ৮৭১ কোটি ১৫ লাখ, ২০১৫-১৬তে এক হাজার ২০৫ কোটি ৪৩ লাখ ও ২০১৬-১৭তে এক হাজার ৮৩৫ কোটি ৭৬ লাখ টাকা।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আমজাদ হোসেন শেয়ার বিজকে বলেন, লোকসান কমানোর জন্য আয় বৃদ্ধিতে জোড় দিচ্ছে রেলওয়ে। এক্ষেত্রে বিনা টিকিটে ভ্রমণ বন্ধে অভিযান চালানো হচ্ছে। চেকিং ব্যবস্থা জোরদার করা হচ্ছে। এতে গত অর্থবছর ব্যয়ের পাশাপাশি রেলের আয় অনেকটা বেড়েছে। ফলে গত অর্থবছর লোকসান কিছুটা কমেছে। এছাড়া রেলের লোকসান কমানোর জন্য ট্যারিফ রিফর্ম পলিসি করা হয়েছে। আগামীতে রেলের লোকসান আরও কমানো যাবে বলে আশা করা যায়।

সূত্র জানায়, গত অর্থবছর পূর্বাঞ্চল থেকে রেলওয়ে আয় করে ৮৮৯ কোটি ৮১ লাখ আর পশ্চিমাঞ্চল থেকে আয় করে ৫৯৬ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এ দুই অঞ্চল থেকে রেলওয়ের আয় ছিল যথাক্রমে ৭২৯ কোটি ৪০ লাখ ও ৪৭৮ কোট ১১ লাখ টাকা। অর্থাৎ দুই অঞ্চলে রেলের আয় বেড়েছে যথাক্রমে ২২ ও ২৫ শতাংশ।

২০১৭-১৮ অর্থবছর রেলওয়ে যাত্রী পরিবহন করে ৯ কোটি ৫৭ হাজার। আগের অর্থবছর এর পরিমাণ ছিল সাত কোটি ৭৮ লাখ সাত হাজার। এ হিসাবে গত অর্থবছর রেলওয়ের যাত্রী পরিবহন বেড়েছে প্রায় ১৬ শতাংশ। এছাড়া ২০১৫-১৬ অর্থবছর রেলওয়ে যাত্রী পরিবহন করেছিল সাত কোটি আট লাখ ৩১ হাজার।

এদিকে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে যাত্রী পরিবহন খাতে রেলের আয় হয় এক হাজার তিন কোটি ৫০ লাখ টাকা ও পণ্য পরিবহনে ২৯৪ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। আগের অর্থবছর এ দুই খাতে আয়ের পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ৭৮৪ কোটি ২৩ লাখ ও ২৬৫ কোটি ১৯ লাখ টাকা।
সূত্রমতে, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) ঋণের শর্তের কারণে ২০১৫ সালে ট্যারিফ রিফর্ম পলিসি করে রেলওয়ে। এর আওতায় ব্যয় বৃদ্ধির অনুপাতে প্রতি বছর রেলের ভাড়া বাড়ানোর কথা। এতে আয় বৃদ্ধি ও রেলের লোকসান নিয়ন্ত্রণে রাখার পরিকল্পনা করা হয়। ওই পলিসি অনুযায়ী, ২০১৫-১৬ অর্থবছর রুটভেদে যাত্রী পরিবহন ভাড়া ৭-৯ শতাংশ বাড়ানো হয়। পণ্য পরিবহনেও একই হারে ভাড়া বাড়ানো হয়। একই ধারাবাহিকতায় গত ২০১৬-১৭ অর্থবছর রেলের ভাড়া ১৭ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়। তবে এ প্রস্তাব অনুমোদন করেনি রেলপথ মন্ত্রণালয়।

ওয়ার্ক ফর বেটার বাংলাদেশ (ডব্লিউবিবি) ট্রাস্টের প্রকল্প কর্মকর্তা মো. আতিকুর রহমান এ প্রসঙ্গে বলেন, ভাড়া বৃদ্ধি না করেও ট্রেনের যাত্রীসেবা লাভজনক করা সম্ভব। এজন্য ট্রেনপ্রতি কোচের সংখ্যা বাড়ানো যেতে পারে। এতে খরচ না বাড়লেও যাত্রী পরিবহন আয় বৃদ্ধি পাবে। পাশাপাশি ট্রেনের টার্ন অ্যারাউন্ড বাড়িয়ে ট্রিপ বৃদ্ধি করা সম্ভব, যা ট্রেনের আয় বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। আর জমির সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করা গেলে রেলের আয় অনেক বাড়বে। অথচ তা না করে রেলওয়ের অদক্ষতার বোঝা যাত্রীদের ওপর চাপানো হচ্ছে।

Next Post

এবারই সবচেয়ে বড় ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে ফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এইচটিসি।

সোম সেপ্টে. ১০ , ২০১৮
আভা ডেস্ক ; বিগত ১৫ বছরের মধ্যে এবারই সবচেয়ে বড় ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে ফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এইচটিসি। তাদের আয় কমেছে অন্তত ৯৭ শতাংশ। এরপরও, নতুন ফোন তৈরি করছে প্রতিষ্ঠানটি। নতুন উদ্যোমে তারা স্ন্যাপড্রাগন ৮৫৫ প্রসেসর সমৃদ্ধ এবং ৫জি নেটওয়ার্ক সমর্থন করবে এমন ফোন নিয়ে কাজ শুরু করছে। নতুন এক তথ্যে […]

এই রকম আরও খবর

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links