পত্রিকায় লেখালেখি করে দু-একবার অন্যের বিরাগভাজনও যে হইনি তা নয়।

ava desk :২৬ জুন ‘যত্রতত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান’ শিরোনামে দৈনিক সমকাল পত্রিকায় আমি একটি কলাম লিখেছিলাম। এরপর লেখাটির ব্যাপারে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে অনেক মেইল এবং টেলিফোন পেয়েছি। অধিকাংশ রেসপন্স ছিল লেখাটির সমর্থনসূচক। পত্রিকায় লেখালেখি করে দু-একবার অন্যের বিরাগভাজনও যে হইনি তা নয়।

যেমন- ২৬ তারিখের লেখাটি নিয়ে খোদ আমার এলাকারই দু-চারজন হাতেগোনা মানুষ খুব ক্ষুব্ধ হয়েছেন বলে শুনেছি। এলাকায় তারা আমার সম্পর্কে ব্যক্তিগত কুৎসা রটিয়ে বেড়াচ্ছেন, এখানে-ওখানে মিথ্যাচার করে আমার বিরুদ্ধে উড়ো চিঠি বিতরণ করছেন। আমি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ার বিরুদ্ধে, এমন অলীক সব অভিযোগ তারা তুলছেন।

কিন্তু কী ছিল আমার সেই লেখায়? পাঠকের উদ্দেশে ওই লেখাটির কিছু অংশ এখানে তুলে ধরছি। ‘সম্প্রতি ঈদুল ফিতরের পরের দিন আমি বাগেরহাট জেলার রামপালে আমার গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিলাম। গ্রামে গিয়ে জানতে পারি সেখানে ইসলামী ফাউন্ডেশন থেকে নতুন করে একটি ইবতেদায়ি পর্যায়ের মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার অনুমতি দেয়া হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানলাম এ মাদ্রাসাটি স্থাপনের প্রাথমিক অনুমতি দেয়া হয়েছিল রামপাল উপজেলার মল্লিকেরবেড় ইউনিয়নে (খুলনার বর্তমান মেয়র তালুকদার আবদুল খালেকের বাড়ি)।

সেখান থেকে সেটি কেটে এনে পার্শ্ববর্তী বাইনতলা ইউনিয়নের কুমলাই গ্রামে প্রতিষ্ঠার উদ্যোক্তা এই গ্রামের এক অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত জেলা জজ। তিনি দাবি করছেন, তার সঙ্গে ইসলামী ফাউন্ডেশনের বর্তমান মহাপরিচালক (তিনিও একজন অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজ) মহোদয়ের নাকি ভালো খাতির এবং সেই খাতিরের সুবাদে মাদ্রাসাটি তিনি অন্য জায়গা থেকে কেটে এনে তার নিজ গ্রামে প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছেন। এ মাদ্রাসাটি তিনি প্রতিষ্ঠা করতে চাইছেন ওই গ্রামে অবস্থিত একটি পাবলিক গোরস্থানের জমিতে।’

উল্লেখ্য, ‘জান্নাতুল বাকি সাধারণ কবরস্থান’ নামে প্রতিষ্ঠিত এ অঞ্চলের একমাত্র পাবলিক কবরস্থানে একখণ্ড জমি এ উদ্যোক্তা স্থানীয় এক ব্যক্তির কাছে বিক্রির ওয়াদা করে দুই বছর আগে তার কাছ থেকে দেড় লাখ টাকা নিয়ে নিয়েছেন। জনসমক্ষে সেই ক্রেতা এ জমি কবরখানায় দান করার ঘোষণা দিয়েছেন।

জমি বিক্রির ওয়াদাকারী এবং ক্রেতা দু’জনই পাবলিক কবরখানার উন্নয়ন কাজ শুরু করার কথা জনসমক্ষে জানান দেয়ায় খুলনার বর্তমান মেয়র এবং রামপাল-মোংলার তৎকালীন এমপি তালুকদার আবদুল খালেক দু’বছর আগে কবরখানাটির উন্নয়ন কাজ উদ্বোধন করেন। অতঃপর স্থানীয় সরকার, বাগেরহাট জেলা পরিষদ, রামপাল উপজেলা পরিষদের অর্থায়নসহ স্থানীয় জনসাধারণের টাকায় কবরখানাটির (প্রায় ৮০-৮৫ শতক জমির ওপর নির্মিত) মাটি ভরাট, গেট তৈরি, রাস্তা নির্মাণ, পরিখা খননসহ আংশিক বাউন্ডারির কাজ সমাপ্ত হয়। সেখানে লাশ দাফন প্রক্রিয়াও চলমান।

এই পর্যায়ে হঠাৎ করে অবসরপ্রাপ্ত এই জজ সাহেব আওয়াজ তুলেছেন, তিনি এখন ওই কবরখানার মধ্যে অবস্থিত তার জমি খণ্ডের (যার টাকা তিনি ইতিমধ্যে নিয়ে নিয়েছেন এবং তা এখন কবরখানার সীমানার মধ্যে সরকারি টাকায় ভরাটকৃত) দলিল দেবেন না; তিনি এখানে ওই মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা করতে চান। এলাকায় জনশ্র“তি রয়েছে, ইতিমধ্যে ওই মাদ্রাসার জন্য ৩-৪ জন শিক্ষকও নির্বাচিত করা হয়েছে এবং সেখানে একটি বড় আর্থিক ডিল সংঘটিত হয়েছে।

বাড়িতে থাকাকালে আমি খবর নিয়ে জেনেছি, ওই গ্রামে এখনই- ১. কুমলাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২. পূর্ব কুমলাই শহীদ মুক্তিযোদ্ধা সরদার ইব্রাহীম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৩. হাজী তছির উদ্দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৪. আমতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পবনতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ (ক) শরাফপুর মাদ্রাসা, (খ) কুমলাই সালেহিয়া মাদ্রাসা, (গ) রাশিদিয়া-তছিরিয়া মাদ্রাসা (ঘ) কুমলাই গাববুনিয়া মাদ্রাসা ইত্যাদি প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

এর মধ্যে কোনো কোনো মাদ্রাসার কোনো কোনো ক্লাসে শিক্ষার্থী সংখ্যা ৩-৪ জন; গাববুনিয়া মাদ্রাসা প্রায় ছাত্রশূন্য এবং অন্য দুটি মাদ্রাসার শিক্ষার্থী সংখ্যাও খুবই কম। কেবল শরাফপুর মাদ্রাসায় কিছু শিক্ষার্থী রয়েছে। এ ছাড়াও এই গ্রামটিতে ইসলামী ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে পরিচালিত বেশ কয়েকটি মসজিদভিত্তিক এবং পাড়াভিত্তিক শিক্ষালয়ও রয়েছে। একই গ্রামে একটি হাইস্কুল, একটি নিুমাধ্যমিক স্কুল এবং একটি গার্লস হাইস্কুলও রয়েছে।

দু-একটি প্রতিষ্ঠান বাদে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী সংকট প্রবল। সব জেনেশুনে আমার মনে হয়েছে এই এলাকাটি এমনিতেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আধিক্যে ভারক্রান্ত। এখানে নতুন কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মানে শুধু যেন সরকারি কোষাগার থেকে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা প্রদান করা।

একদিকে সরকার যেখানে ইতিমধ্যে সারা দেশে বিদ্যমান ৫ হাজার ২৪২টি প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্তি করতে না পারায় শিক্ষকরা রাস্তায় রাত যাপন করছেন, সেখানে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ম্যাপিং ছাড়া কীভাবে শিক্ষা বিভাগ বা ইসলামী ফাউন্ডেশন (সরেজমিন বাস্তবতা যাচাই না করে স্রেফ দু’একজন মানুষের পরিচয় বা সম্পর্কের কারণে) আরও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার অনুমতি দেয় তা কোনোভাবেই বোধগম্য নয়।

যত্রতত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার এ ধরনের নৈরাজ্য দেখে ওই এলাকার সরকারসমর্থক এক প্রতিনিধি অনুযোগ করে বললেন- সরকার যা ইচ্ছা তাই করুক; শেষমেশ বুঝবেন প্রধানমন্ত্রী।

পাঠকের নিশ্চয়ই জানা আছে, গেল রমজান মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে দেশের প্রায় ৫ হাজর ২৪২টি নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আশি হাজারেরও বেশি শিক্ষক ঢাকায় এসে কখনও শহীদ মিনারে, কখনো বা প্রেস ক্লাবসংলগ্ন ফুটপাতে বসে অবস্থান ধর্মঘট করেছেন। তারা গত ঈদের নামাজ পড়েছেন রাস্তায়, তাদের অবস্থান ধর্মঘটস্থলে। কিন্তু কিছুতেই কিছু না হওয়ায় তারা ২৫ জুন থেকে আমরণ অনশন কমসূচি শুরু করেন।

এই কর্মসূচিকালে এদের মধ্যে আড়াইশ’র বেশি অসুস্থ হওয়ার কারণে তাদেরকে হাসপাতালে স্থানান্তরিত করতে হয়েছিল। লেখাটি যখন লিখছি তখন পর্যন্তও তারা তাদের এই কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছিলেন (কিছুতে কিছু না হওয়ায় সেদিন দুপুরে তারা জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান ও রাশেদা কে চৌধুরীর অনুরোধে কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছেন)। শিক্ষকদের এ আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী লিখেছিলেন (বাংলাদেশ প্রতিদিন, ৯ জুলাই ২০১৮)- আমরা না হয় সেই পাকিস্তান আমল থেকে রাস্তাঘাটের মানুষ।

চিৎকার-চেঁচামেচি করাই ছিল আমাদের কাজ। প্রয়োজন হলে আন্দোলন করবে ছাত্ররা, শিক্ষকরা কেন? শিক্ষকদের প্রতি সমাজ ও সরকারের নিদারুণ অবহেলা অত্যন্ত নির্মম এবং কল্পনাতীত। তাদের প্রতিষ্ঠানকে যেদিন মন্ত্রণালয় স্বীকৃতি দিয়েছে সেদিনই এমপিওর অর্ধেক হয়ে গেছে। এর আগে প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্র“তি দিয়েছিলেন নন-এমপিও শিক্ষকদের খুব দ্রুত এমপিওভুক্ত করা হবে। এটা নন-এমপিও শিক্ষকদের ন্যায্য দাবি। তাদের এখনও এমপিওভুক্তি না করাই বরং সংবিধানবিরোধী এবং অন্যায়।

নন-এমপিও শিক্ষকদের দাবি অতিরিক্ত কিছু নয়। এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠান যে সিলেবাস পড়ায়, নন-এমপিওরাও একই সিলেবাস পড়িয়ে থাকে। এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীরা যে নিয়মে পরীক্ষা দেয় সেই একই নিয়মে নন-এমপিও প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীরা পরীক্ষা দেয়। এমপিও আর নন-এমপিও প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীদের রেজাল্টে কোনো বৈষম্য হয় না। তাদের অবহেলা করা জাতির জন্য কোনো শুভ লক্ষণও নয়।

অনতিবিলম্বে শিক্ষকদের দাবি-দাওয়া মেনে সম্মানের সঙ্গে বাড়ি পাঠানো দরকার। তারা পরিবার-পরিজন, সন্তান-সন্ততি ছেড়ে এক ঈদের নামাজ ঢাকার রাজপথে পড়েছেন, আরেক ঈদের জামাত যেন এখানে পড়তে না হয়। সবার সঙ্গে বাড়িতে পরের ঈদ করতে পারেন সদাশয় সরকারের কাছে কাদের সিদ্দিকী সেই অনুরোধ রেখেছেন।

একজন মানুষ এবং একজন শিক্ষক হিসেবে কাদের সিদ্দিকীর অনুভূতির সঙ্গে আমার কোনো ভিন্নমত নেই। তবে একটি বিষয় আমাদের সবাইকে একটু ভাবা দরকার। বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে মূলত বিক্ষিপ্তভাবে; বেসরকারি উদ্যোগ ও ব্যবস্থাপনায়। স্বাধীনতার পর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই ব্যাপক আকারে শিক্ষকদের রুটি-রুজির নিশ্চয়তাদানের ব্যবস্থা করতে ব্যাপকভাবে প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ করেন।

এরপর বিভিন্ন সরকারের সময় শিক্ষকদের জন্য আংশিকভাবে কিছু বেতন-ভাতা প্রদানের ব্যবস্থা করা হয় তাদের চাকরি-পদ এমপিওভুক্তকরণের মধ্য দিয়ে। ১৯৭৫ সালের পর আবারও ব্যাপক আকারে একদিনে প্রায় ৭৭৩টি স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসার এমপিওভুক্তির ব্যবস্থা করা হয় ১৯৯৮ সালে। সেটিও শেখ হাসিনার প্রথম সরকারের আমলে।

এর ফলে শিক্ষকরা যখন সরকারের কাছ থেকে বেতন-ভাতা পেতে শুরু করেন এবং সরকার যখন শিক্ষার হার বাড়াতে ব্যাপক উদ্যোগ গ্রহণ করে, তখন থেকেই সারা দেশের আনাচে-কানাচে নানা কিসিমের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গজিয়ে উঠতে শুরু করে। প্রয়োজন-অপ্রয়োজনে দেশের বিভিন্ন এলাকায় গড়ে ওঠে হাজার হাজার বিভিন্ন ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্যক্তিগতভাবে শিক্ষকদের প্রতি খুবই দুর্বল এ কথা সর্বজনবিদিত। ২০১০ সাল নাগাদ দেশে যখন বিপুলসংখ্যক, বিশেষ করে প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (স্কুল-মাদ্রাসা নির্বিশেষে) গড়ে ওঠে এবং সেসব প্রতিষ্ঠানে লক্ষাধিক শিক্ষক বিনা বেতনে পাঠদানে নিয়োজিত থাকেন, তাদের কথা মাথায় রেখে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীই আবারও ব্যাপকভাবে ওইসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (প্রায় ১ হাজার ৬২৪টি) এমপিওভুক্তি নিশ্চিত করেন এবং প্রায় সোয়া লাখ শিক্ষকের বেতন-ভাতা সরকারি কোষাগার থেকে প্রদানের ব্যবস্থা করেন।

সে সময় সরকার স্পষ্ট ঘোষণা দেয়, এরপর আর যত্রতত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠার সুযোগ দেয়া হবে না। আমার জানা নেই সরকার কীভাবে তার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করছে। জনসংখ্যা, দূরত্ব, প্রয়োজন এসব বিবেচনা করে সরকার কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ম্যাপিংয়ের কাজ সম্পন্ন করেছে কিনা সে সম্পর্কেও আমার ধারণা নেই। এটা করে থাকলে কীভাবে দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে, আবার কখনও কখনও ব্যক্তির ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে তা একটি বড় প্রশ্ন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এমএম আকাশ ২০১৭ সালের ১৩ এপ্রিল তার ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় শিক্ষাব্যবস্থা ও আমাদের করণীয়’ শীর্ষক একটি প্রবন্ধে উল্লেখ করেছেন, ১৯৭০-২০১৪ কালপর্বে দেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা বেড়েছে ২৭৩.২ শতাংশ এবং মূলধারার মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বৃদ্ধির হার হচ্ছে ২৩৯ শতাংশ। তিনি তার একই লেখায় উল্লেখ করেছেন, ১৯৯০-২০১৪ কালপর্বে দেশে মাধ্যমিক ও পরবর্তী পর্যায়ের মাদ্রাসার সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে ৫১৫ শতাংশ।

বর্তমান সরকারের আমলেই ২০১০ সালে প্রণীত শিক্ষানীতির আলোকে মাদ্রাসা শিক্ষাকে যথেষ্ট মাত্রায় আধুনিক ধাঁচে যুগোপযোগী করার ফলে যে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (সেটি স্কুলই হোক কিংবা মাদ্রাসা) গড়ার জন্য প্রয়োজন জনবসতি, ছাত্র সংখ্যা ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট বিষয়।

অধ্যাপক আকাশ তার প্রবন্ধে ইঙ্গিত দিয়েছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর, স্কুল-মাদ্রাসা নির্বিশেষে সিংহভাগই (তার ভাষায় প্রায় শতভাগই) গড়ে উঠছে ব্যক্তি উদ্যোগে। ব্যক্তি উদ্যোগে গড়ে ওঠা এসব প্রতিষ্ঠানের দিকে তাকালে দেখা যাবে কেউ কেউ তা গড়ে তুলছেন সম্পদশালী হিসেবে, কেউ কেউ উদ্যোগ নিচ্ছেন রাজনীতিতে ও সামাজিকভাবে তার প্রভাব প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে, আবার কেউ কেউ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলছেন তার নিজের কিংবা পরিবারের অতীত রাজনৈতিক গ্লানি মুছে ফেলতে কিংবা সুযোগমতো তার অতীত অবস্থানকে মজবুত করতে।

আমার গ্রামে যে মাদ্রাসাটি গড়ে তোলার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, সেই উদ্যোক্তা বা তার পরিবারের অতীত-বর্তমান রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বিশ্লেষণ করলে শেষোক্ত সত্যই বেরিয়ে আসবে। কোনো ম্যাপিং ছাড়া যত্রতত্র এ ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠলে একসময়ে এসে তা কেবল সরকারকেই বিড়ম্বনায় ফেলবে। আর তখন সরকারসমর্থকদের পর্যন্ত বলতে হবে ‘যা হয় হোক, বুঝবেন প্রধানমন্ত্রী’।

ড. শেখ আবদুস সালাম : অধ্যাপক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
jugantor

Next Post

উত্তাল সাগর থেকে সুন্দরবনে এসে অপহৃত হওয়া ট্রলার এফবি মা-মণির ১২ জেলেকে ছেড়ে দিয়েছে জলদস্যুরা।

মঙ্গল জুলাই ২৪ , ২০১৮
আভা ডেস্ক : উত্তাল সাগর থেকে সুন্দরবনে এসে অপহৃত হওয়া ট্রলার এফবি মা-মণির ১২ জেলেকে ছেড়ে দিয়েছে জলদস্যুরা। মুক্তিপণ পরিশোধের শর্তে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়। শনিবার ট্রলারটি নিরাপদ আশ্রয়ের উদ্দেশ্যে আড়পাঙ্গাশিয়া পৌঁছলে দস্যুরা ১৬ জেলেকে অপহরণ করে। ২ দিন পর সোমবার ৪ জেলেকে জিম্মি রেখে ১২ জনকে ছেড়ে দেয়। বিকালে […]

এই রকম আরও খবর

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links