নওগাঁ প্রতিনিধিঃ নওগাঁয় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের কয়েকটি জায়গা ভেঙে জেলার রানীনগর, আত্রাই ও মান্দা উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে প্রায় চার হাজার হেক্টর জমির ফসলের ক্ষতি হয়েছে।
এতে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। আত্রাই উপজেলার চারটি স্থানে সড়ক ভেঙে গিয়ে মান্দা-আত্রাই আঞ্চলিক সড়কের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। মান্দা উপজেলার আত্রাই নদীর উভয় তীরের নুরুল্লাবাদ উত্তরপাড়া, জোকাহাট, চকরামপুর ও কয়লাবাড়ি নামক স্থানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে মান্দা-আত্রাই আঞ্চলিক সড়কের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
আত্রাই নদীর জোতবাজার ও আহসানগঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ায় আত্রাই ও ফকিরনি নদীর উভয় তীরের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের অন্তত ৫০টি পয়েন্ট ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এই দুই উপজেলার কমপক্ষে নয়টি ইউনিয়ন বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। বন্যায় ভেসে গেছে কয়েকশ পুকুরের কোটি কোটি টাকার মাছ।
নওগাঁ জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফিরোজ আহমেদ জানান, উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে আত্রাই নদী, ফকির্নি ও ছোট যমুনা নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের নয়টি স্থানে ও বেরী বাঁধের সাতটি স্থানে ভেঙে গিয়ে তিন উপজেলার ২৪২টি পুকুরের ৬৮ হেক্টর জমিতে ৩ কোটি ৪২ লাখ টাকার মাছ ভেসে গেছে।
নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. রবী আহ নূর আহমেদ বলেন, গত দুই দিনে জেলায় ৩ হাজার ৮৪৮ হেক্টর জমির ধান ও শাকসবজি পানির নিচে চলে গেছে। এ পর্যন্ত ৩১৩৪ হেক্টর আউশ, ৩৭৬ হেক্টর রোপা আমণের বীজতলা, ২০০ হেক্টর বপণ আমণ, ৫০ হেক্টর রোপন কৃত আমণ, ১১ হেক্টর মরিচ, ১৫৪ হেক্টর সবজি এবং ৭৭ হেক্টর পাটসহ সর্বমোট ৩৮৪৮ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্থ্য হয়েছে। যেহেতু নদীর পানি কমতে শুরু করেছে, এতে পানি নেমে গেলে ক্ষতির পরিমান অনেকাংশে কমে আসবে।
জেলা ত্রাণ ও পূনর্বাসন কর্মকর্তা মো. কামরুল আহসান জানান, উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে জেলার তিনটি উপজেলার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙ্গে ১৮ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এসব এলাকায় ১৩৫ মেট্রিকটন চাল ও ২ লাখ ২ হাজার ৫ শত নগদ টাকা ত্রাণ হিসেবে দেওয়া হয়েছে, পর্যাপ্ত ত্রাণ মজুদ রয়েছে। নদীর পানি কমতে শুরু করেছে আজ শুক্রবার বন্যা পরিস্থিতির অনেকটা উন্নতি হয়েছে।