নওগাঁতে সরকারীভাবে ধান ক্রয়ের দাবি

নওগাঁ প্রতিনিধিঃ নওগাঁর রাণীনগর উপজেলায় ইরি-বোরো ধান কাটা মৌসুমের শুরুতেই এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতিমন ধানের দর কমেছে ২০০ থেতে ২৫০ টাকা। এতে করে দিশেহারা হয়ে লোকসানের আশংকায় দুশ্চিন্তায় পড়েছে চাষীরা।

কৃষকরা বলছেন, সরকারি ভাবে ধান-চাল ক্রয় অভিযান শুরু হলে বাজারে কিছুটা প্রভাব পড়তো। এতে কৃষকরা ধানের ভাল দর পেয়ে লাভবান হতো। তাই দ্রুত সরকারি ভাবে ধান-চাল ক্রয় অভিযান শুরুর দাবি জানিয়েছেন কৃষকরা।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, রাণীনগর উপজেলা জুড়ে প্রায় ১৮ হাজার ৮ শত হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো ধানের আবাদ করেছেন কৃষকরা। শুরু থেকে আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এবং তেমন রোগ বালায় না থাকায় ধানও ভাল হয়েছে।

কৃষি অফিসের তথ্যমতে চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে ৭৭ হাজার ৮৫০ মেট্রিককটন ধান উৎপাদন লক্ষ মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে প্রাকৃতিক দূর্যোগ না হলে এলক্ষমাত্রা অতিক্রম করবে বলে দাবি করেছেন কৃষি কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম।

তবে কৃষকরা বলছেন, ধানের গাছ ভাল হলেও মৌসুমের শুরু থেকে অনা বৃষ্টির কারনে কিছুটা ফলন কম হচ্ছে। ধানের গাছ দেখে প্রতি বিঘা জমিতে ২৪ থেকে ২৭ মন হারে ফলন হতে পারে এমনটা আশা করলেও ধান কাটা মাড়াই করে প্রতি বিঘা জমিতে ১৮ থেকে ২২ মন ধান পাচ্ছেন।

রাণীনগর তথা কয়েক উপজেলার মধ্যে ধানের মোকামখ্যাত রাণীনগর উপজেলার আবাদপুকুর হাটে রোববার জিরাশাইল প্রতিমন ধান রকম ভেদে বিক্রি হয়েছে ৮৪৫ থেকে সর্বোচ্চ ৯০০ টাকা পর্যন্ত। এছাড়া শনিবার এই হাটে ৮২০ টাকা থেকে ৮৬০ টাকা পর্যন্ত ধান বিক্রি করেছেন কৃষকরা।

উপজেলার আবাদপুকুর হাটের ধান-চাল আড়ৎদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক হেলাল উদ্দিন হেলু মন্ডল বলেন, গত এক সপ্তাহ আগে জিরাশাইল ধান এই হাটে ১০৫০ টাকা থেকে ১০৯০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। কিন্তু এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতিমন ধানে প্রায় ২০০ থেকে ২৫০ টাকা দর কমেছে।

আবাদপুকুর হাটে ধান বিক্রি করতে আসা বর্গাচাষী কৃষক হামিদুল ইসলাম, মোকলেছুর রহমান, জিল্লুর রহমান, ফরিদ উদিন, বেলাল হোসেনসহ অনেক কৃষকরা জানান, জমি তৈরি থেকে শুরু করে কাটা-মাড়াই পর্যন্ত প্রতি বিঘা জমিতে অঞ্চল ভেদে ১১ হাজার থেকে ১৪ হাজার পর্যন্ত খরচ হয়েছে। এর সাথে জমির বাৎসরিক ভাড়াসহ প্রায় ১৮ হাজার থেকে ২০ হাজার পর্যন্ত খরচ পরেছে।

কিন্তু চলমান স্থানীয় বাজার অনুযায়ী ধান বিক্রি করে জমির খোদ মালিকরা কিছুটা লাভবান হলেও বিঘা প্রতি দেড় থেকে আড়াই হাজার টাকা করে লোকসান হচ্ছে বর্গাচাষীদের।

তারা বলছেন, গত বোরো মৌসুমের শুরুতেই সরকার ১০৪০ টাকা প্রতিমন দরে ধান ক্রয় শুরু করেছিল। ফলে স্থানীয় বাজারে সরকার নির্ধারিত দরের চেয়ে প্রায় দেড় থেকে দুইশ টাকা বেশি দরে স্থানীয় বাজারে ধান বিক্রি করতে পেরেছিলেন কৃষকরা।

এতে ধানের ন্যায্য দর পেয়ে বেশ লাভবান হযেছিলেন কৃষকরা। এবারও মৌসুমের শুরুতেই সরকারি ভাবে ধান-চাল ক্রয় অভিযান শুরু করলে হয়তো কৃষকদের লোকসান হতোনা।

রাণীনগর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম সরকার বলেন, চলতি মৌসুমে সরকারিভাবে নতুন করে ধান ক্রয়-বিক্রয়ের দর এসেছে। এ মৌসুমের বেধে দেওয়া ১০৮০ টাকা দরেই এখনো ধান ক্রয়-বিক্রয় হবে।

রাণীনগর উপজেলা সরকারি ধান-চাল ক্রয় কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুশান্ত কুমার মাহাতো বলেন, চলতি মৌসুমে ধান কাটা-মাড়াই শুরু হলেও সরকারিভাবে ক্রয় অভিযান শুরুর এখনো কোন নির্দেশনা আসেনি। নির্দেশনা আসা মাত্রই ক্রয় অভিযান শুরু করা হবে।

Next Post

নাচোলে অর্ধ ঝুলন্ত অবস্থায় যুবকের মরদেহ উদ্ধার

মঙ্গল এপ্রিল ২৭ , ২০২১
নাচোল প্রতিনিধিঃ চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে গাছে অর্ধ ঝুলন্ত অবস্থায় এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে নাচোল থানা পুলিশ। মৃত যুবক হচ্ছে নাচোল বাজার পাড়ার মৃত:ফারুক হোসেনের ছেলে নিশান (২৩)। নাচোল পৌরসভার মেয়র আব্দুর রশিদ খান ঝালু ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান,নাচোল বাজার পাড়ার তুলা ব্যবসায়ী পালুর ভাগ্নে নিশান,তার বাবা মারা গেছে, মা […]

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links