আভা ডেস্কঃ দলের ভাবমূর্তি নষ্টকারী নেতাকর্মীদের কোনো ছাড় দেবে না ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। এক্ষেত্রে সাংগঠনিক ও আইনি ব্যবস্থা নিতে কঠোর অবস্থানে ক্ষমতাসীনরা। এই বিষয়ে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন ইউনিটের দায়িত্বশীলদেরও সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে অনুপ্রবেশকারী-সুযোগ-সন্ধানীদের বিষয়েও সচেতন থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে দলের হাইকমান্ড থেকে।
সম্প্রতি দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদা খানম ও তার বাবার ওপর হামলার ঘটনায় যুবলীগের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আলম ও সদস্য আসাদুল ইসলামকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
এর আগে ক্যাসিনোকাণ্ড থেকে শুরু করে রিজেন্টের সাহেদ করিমের নাম দুর্নীতির তালিকায় আসায় অস্বস্তিতে পড়ে আওয়ামী লীগ। তবে দলের ভাবমূর্তি নষ্টকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত সাংগঠনিক ও আইনি পদক্ষেপ নেওয়ায় প্রশংসাও কুড়ায় দলটি।
আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, বিশ্বজিৎ থেকে শুরু করে দিনাজপুরের ঘটনায় কোনো অপরাধীকেই ছাড় দেওয়া হয়নি। দলীয় পরিচয় আওয়ামী লীগের কাছে মুখ্য নয়। অপরাধী যেই হোক, ব্যবস্থা নিতে কঠোর নির্দেশনা আগে থেকেই রয়েছে।
দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘দলীয় পরিচয়ে অপকর্ম করলে দল দায় নেবে না। দলীয় পরিচয়ে কোনো ধরনের রক্ষা পাওয়ার সুযোগ নেই। দলের সভাপতি শেখ হাসিনা বিভিন্ন সময়ে তা বলেছেন।
দলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘অনেকে আমাদের দলে ও সরকারে ঢুকে বড় বড় ব্যক্তির সান্নিধ্যে এসেও রক্ষা পায়নি। শেখ হাসিনা অপরাধীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নিয়ে এসেছেন।
ক্ষমতাসীন দলের দায়িত্বশীল দু’জন নেতা বলেন, গোয়েন্দা সংস্থা দিয়ে খোঁজ নিয়ে করোনা প্রাদুর্ভাবের আগে বিভাগভিত্তিক অনুপ্রবেশকারীর তালিকা তৈরি করে আওয়ামী লীগ। করোনায় সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড স্থগিত থাকার কারণে এই বিষয়ে পদক্ষপ নেওয়ার সুযোগ হয়নি। একের পর এক দলের ভাবমূর্তি নষ্টের পর এবার নতুন করে আলোচনায় এসেছে সেই তালিকা।
দলের নেতারা মনে করছেন, দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার কারণে একশ্রেণির সুবিধাভোগীরা সুযোগ নিচ্ছে। তারা কখনোই আওয়ামী লীগের ছিল না। আবার অনেক ক্ষেত্রে দলের নেতাকর্মীরাও জড়িয়ে পড়ছেন অপকর্মে। এজন্য দলের বিভিন্ন পর্যায়ে কমিটিগুলোতে যেন সুবিধাভোগীরা ঢুকে না পড়ে, সেজন্য কঠোর নির্দেশনা দিয়েছে দল। দলের উপ-কমিটিতে রিজেন্টের সাহেদদের মতো অনুপ্রবেশকারীরা যেন ঢুকে পড়তে না পারে, সেজন্য আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সভায় কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এই ধরনের সুবিধাভোগীরা কমিটিতে ঢুকে পড়লে সংশ্লিষ্ট্ সম্পাদককে জবাব দিতে হবে।
এই সম্পর্কে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘শেখ হাসিনার সরকার অপরাধীকে অপরাধী হিসেবেই দেখে। অপরাধীর কোনো রাজনৈতিক পরিচয় নেই। প্রতিটি হত্যকাণ্ডে দলমতের ঊর্ধ্বে উঠে সরকার ব্যবস্থা নিয়েছে। কোনো কোনো এমপির বিরুদ্ধে দুদকের মামলা ঝুলছে। শেখ হাসিনা কোনো অপরাধীকেই ছাড়া দেননি। দুদকের মামলায় অনেক এমপির সাজাও হয়েছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দিনাজপুরের ইউএনও’র ওপর হামলার ঘটনায় কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। নেওয়া হয়েছে সাংগঠনিক ব্যবস্থা। দেশ ও জনগণের প্রতি কমিটমেন্ট আছে বলেই সরকার যেকোনো ধরনের ঘটনায় সবার আগে রেসপন্স করে। কারও হাতে আমরা ইস্যু তুলে দিতে চাই না।’ অপরাধী যেই হোক, তাকে আইনের আওতায় আনা হয় বলেও তিনি মন্তব্য করেন। সুত্রঃ রাইজিংবিডি