চিত্র-সাংবাদিকদের সমিতিও মি আলমের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন।

আভা ডেস্ক : বাংলাদেশে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ন’দিন আগে যে আলোকচিত্রী শহীদুল আলমকে তার ঢাকার বাসভবন থেকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল, তার সমর্থনে পথে নেমেছেন ভারতের আলোকচিত্রী ও সাংবাদিকরা। ভারতের নামী ফোটোগ্রাফার রঘু রাই ইতিমধ্যেই শহীদুল আলমের মুক্তি দাবি করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে একটি খোলা চিঠি লিখেছেন।

তিনি বলেন, মি. আলম সত্যি কথা বলার কারণেই রাষ্ট্রের রোষানলে পড়েছেন বলে তার বিশ্বাস।

মুম্বাই প্রেস ক্লাব ও শহরের চিত্র-সাংবাদিকদের সমিতিও মি আলমের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন।

কিন্তু পাশের দেশের একজন আলোকচিত্রীর জন্য ভারতে কেন এই সমর্থনের ঢল?


বাংলাদেশ আলোকচিত্রী পুলিশের হেফাজতে শহীদুল আলম

গত সপ্তাহেই ভারতের বাণিজ্যিক রাজধানী মুম্বাইতে প্রায় শ’দুয়েক সাংবাদিক ও আলোকচিত্রী মুম্বাই প্রেস ক্লাবের সামনে জড়ো হয়েছিলেন শহীদুল আলমের নি:শর্ত মুক্তি চেয়ে।

প্রতিবেশী দেশের একজন চিত্র সাংবাদিকের সমর্থনে এ ধরনের আন্দোলন ভারতে বিরল ।

তবে এই আন্দোলনের সুরটা বেঁধে দিয়েছিলেন ভারতের সম্ভবত: সবচেয়ে বিখ্যাত আলোকচিত্রী রঘু রাই।

বন্ধু শহীদুল আলম আটক হওয়ার দুদিনের মধ্যেই তার মুক্তি চেয়ে প্রধানমন্ত্রী হাসিনাকে ফেসবুকে একটি খোলা চিঠি লেখেন মি রাই।

শহিদুল আলমের সমর্থনে মুম্বাই প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ

তিনি বলছিলেন, “বাংলাদেশ আমাকে ২০১২ সালে সে দেশের মুক্তিযুদ্ধের সময়কার বন্ধু হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিল। আর সেই বন্ধু ও শুভাকাঙ্ক্ষীর অধিকারেই আমি তাকে ওই চিঠি লিখেছি।”

“আসলে কী হয়, একটা দেশের সরকার যখন ক্রমশ জনবিচ্ছিন্ন হতে শুরু করে এবং মানুষের ক্ষোভ পুঞ্জীভূত হতে তাকে – তখনই শাসক সব ধরনের প্রতিবাদের কন্ঠরোধ করতে চায়।

কিন্তু শহীদুল আলমের বিরুদ্ধে ফেসবুক লাইভ করে আন্দোলনে উসকানি দেওয়ার যে কথা বলা হচ্ছে, সেটা তো কার্যত দেশে অস্থিরতা সৃষ্টির অভিযোগ। এই মারাত্মক অভিযোগ নিয়ে কী বলছেন রঘু রাই?

“পৃথিবীর কোথাওই কিন্তু এমন জিনিস ঘটা উচিত নয়।”

লেখিকা অরুন্ধতী রায়ও মুখ খুলেছেন শহিদুল আলমের সমর্থনে

“দেখুন, সরকার ও বিচারবিভাগ যখন দূষিত হয়ে পড়ে – এবং তারা যখন প্রতিশোধপরায়ণ হতে চায়, তখন তারা যা খুশি করতে পারে। আমার-আপনার সেখানে কিছুই করার থাকে না।”

“আর শহীদুলকে আমি তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে চিনি, সে একজন অসাধারণ মানুষ ও অ্যাক্টিভিস্ট – সত্যি কথা বলার জন্য কেন তাকে শাস্তি পেতে হবে এটাই আমি বুঝতে পারছি না”, বলছিলেন তিনি।

মুম্বাই প্রেস ক্লাবের সামনে যারা শহীদুল আলমের সমর্থনে জড়ো হয়েছিলেন তারা প্রায় কেউই অবশ্য ব্যক্তিগতভাবে মি. আলমকে চিনতেন না, কিন্তু তারপরও তার মুক্তির দাবিতে পথে নামতে তারা দ্বিধা করেননি।

কেন তারা ওই পদক্ষেপ নিয়েছেন, তা ব্যাখ্যা করে মুম্বাই প্রেস ক্লাবের সচিব লতা মিশ্র বিবিসিকে বলছিলেন, “আমি নিশ্চিত ভারতে যদি আজ এই ধরনের কোনও ঘটনা ঘটে তাহলে কিন্তু আমাদের প্রতিবেশী দেশের সাংবাদিকরাও আমাদের পাশে দাঁড়াবেন, সমর্থন করবেন।”
ভারতে আলোকচিত্রীরা বলছেন পুরো দক্ষিণ এশিয়াতেই মিডিয়া সরকারের চাপের মুখে পড়ছে
ভারতে আলোকচিত্রীরা বলছেন পুরো দক্ষিণ এশিয়াতেই মিডিয়া সরকারের চাপের মুখে পড়ছে

“যেভাবে আমাদের দেশগুলোতে সংবাদমাধ্যমকে চাপে রাখার বা কন্ঠরোধ করার চেষ্টা হচ্ছে তাতে সরকারের ওপর পাল্টা চাপ সৃষ্টি করার জন্য এটাই একমাত্র রাস্তা।”

শহীদুল আলম চোরের মতো চুপ না-থেকে নিজেকে সত্যিকারের মানুষ বলে প্রমাণ করেছেন, শায়েরি বলে তুলনা দিচ্ছিলেন রঘু রাই। বলছিলেন, “যো চোরোঁ কা তরহ ইন্তেজার করেঁ, ও ইনসান নেহি হ্যায়, শান নেহি হ্যায়!”

ভারত থেকে এই যে জোরালো প্রতিবাদ উঠে আসছে, সেটাকে বাংলাদেশ সরকার উপেক্ষা করতে পারবে না বলেই তাদের বিশ্বাস।
বিবিসি

Next Post

গুগল আপনাকে সবসময় চোখে চোখে রাখে

সোম আগস্ট ১৩ , ২০১৮
আভা ডেস্ক : গুগল সবসময়ই জানতে চায়, আপনি কোথায় যাচ্ছেন, কী করছেন। আপনি যদি তাকে কিছু জানাতে না চান, তবুও সে জেনে যায়। মোট কথা গুগল আপনাকে সবসময় চোখে চোখে রাখে। সেটা আপনি চাইলেও না চাইলে রাখে। আপনার ওপর নজরদারী করে আপনাকে ব্যবহার করেই। আপনি অ্যান্ড্রয়েড এমন কী আইওএস অপারেটিং […]

এই রকম আরও খবর

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links