বরগুনার তালতলী উপজেলার ভূমি অফিস দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে।

আভা ডেস্ক : বরগুনার তালতলী উপজেলার ভূমি অফিস দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। টাকা না দিলে নিষ্পত্তি হয় না কোনো কাজ। ফাইল ঝুলে থাকায় হয়রানির শিকার হচ্ছেন এই উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফারজানা রহমান তালতলীতে আসার পর থেকেই মূলত হয়রানি আরও বেড়েছে। খতিয়ানের নামজারি, মিস কেস, হাল দাখিলা, ভূমিহীনদের নামে জমি বন্দোবস্ত দেয়াসহ সব কাজে টাকা দিতে হয়।

বিভিন্ন কোম্পানির নামজারির ফাইল অহেতুক মাসের পর মাস পড়ে থাকলেও স্বাক্ষর করেন না এই কর্মকর্তা। তার এই খামখেয়ালিতে জিম্মি হয়ে আছে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ এলাকার মানুষ।

জানা গেছে, ২০১২ সালে তালতলী উপজেলা হিসেবে ঘোষণা দেয়ার এক বছরের মাথায় ভূমি অফিসের কার্যক্রম শুরু হয়। ওই সময় থেকেই একটি কুচক্রীমহল অফিস বদলের নামে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করে আসছে। ভুক্তভোগীরা জমির কোনো কাগজের জন্য ভূমি অফিসে গেলেই এ কাগজ এখানে পাওয়া যাবে না বলে জানিয়ে দেয়।

মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে আমতলী অফিস থেকে এনে দেয়া যাবে বলে দিনের পর দিন ঘুরাতে থাকে। এভাবে হয়রানির কারণে সাধারণ মানুষ ওই ভূমি অফিসের প্রতি মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। খতিয়ানের নামজারি, মিস কেস ও হাল দাখিলা সরকার নির্ধারিত তালিকার ১০ গুণ বেশি টাকা আদায় করা হয়।

টাকা না দিলে কোনো ফাইল নড়ে না। দিনের পর দিন ভূমি অফিসের সহকারী বাসুদেব ঘোষ, মোশাররফ হোসেন ও জাহিদুল ইসলামের কাছে ধরনা দিতে হয়।

এদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফারজানা রহমান তালতলীতে চলতি বছর ফেব্র“য়ারি মাসে যোগদান করেন। এরপর থেকেই অফিসটিতে অনিয়ম-দুর্নীতি আরও বেড়ে যায়। তার খামখেয়ালিতে ভূমি অফিস যেন দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে।

অফিস সহকারীরা নামজারি কেসসহ বিভিন্ন কাগজপত্র তৈরি করে ভূমি কর্মকর্তা ফারজানা রহমানের কাছে দাখিল করলেও চাহিদামতো টাকা না পেলে তিনি ফাইলে স্বাক্ষর করেন না বলে অভিযোগ রয়েছে। বিভিন্ন কোম্পানির নামজারি কেসের ফাইল মাসের পর মাস পড়ে থাকে তার টেবিলে।

চায়না কোম্পানি আইসোটেক ও বরিশাল ইলেকট্রিক পাওয়ার কোম্পানি, যমুনা আয়রন অ্যান্ড স্টিল মিলস লি.সহ বিভিন্ন কোম্পানি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নামজারির ফাইল মাসের পর মাস অফিসে পড়ে আছে। ওই কর্মকর্তার খামখেয়ালি ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়রানিতে ব্যবসা প্রতষ্ঠানসহ সাধারণ মানুষকে বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে।

সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, তালতলী উপজেলার ছোট নিশানবাড়ীয়া মৌজার ১, ২ ও ৩নং ম্যাপের ছাপটে (খোট্টার চর) ২০০৫ সালে সৃজিত চর্চাম্যাপভুক্ত কৃষি খাস জমি। নদী ভরাট চর ১নং খাস খতিয়ানের অন্তর্ভুক্ত জমি নতুন দাগ সৃষ্টি করে ৩২-আম/২০০৫-২০০৬ মিস কেসের মাধ্যমে চর্চাম্যাপ তৈরি করে আমতলী উপজেলা ভূমি অফিস।

ওই ম্যাপ বরগুনা জেলা প্রশাসক অনুমোদন দেয়। এ খাস খতিয়ানের জমি তালতলী ভূমি অফিসের অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে জালিয়াত চক্র মো. জাহাঙ্গীর জোমাদ্দার, সেলিম হাওলাদার, মো. সোহরাব জোমাদ্দার, আবুল কালাম ও তৈয়ব আলী মিলে বিভিন্ন নামে ১৯৫৯-৬০ সালে বন্দোবস্তের ভুয়া কাগজ তৈরি করেন।

পরে ওই বন্দোবস্ত জমির কাগজ দিয়ে তালতলী ভূমি অফিসের কিছু অসাধু কর্মকর্তার সহযোগিতায় জালিয়াতির মাধ্যমে জমির ভুয়া রেকর্ড সৃষ্টি করা হয়।

ভুক্তভোগী মোহাম্মদ আলী, কামাল হোসেন, নজরুল ইসলাম ও জাহাঙ্গীর আলম অভিযোগ করেন, তারা ৪-৫ মাস আগে তালতলী ভূমি অফিসে নামজারি কেস দিয়েছেন, কিন্তু এখনও ফাইলটি নিষ্পত্তি হয়নি। অফিসে গেলে সহকারীরা নানা অজুহাতে ঘুরাতে থাকে। তাদের আরও অভিযোগ, সরকার নির্ধারিত ফির চেয়েও ১০ গুণ বেশি টাকা দিয়েছি। তারপরও হয়রানির শিকার হচ্ছি।

এছাড়া আরেক ভুক্তভোগী ফরহাদ হোসেন আক্কাস মৃধা অভিযোগ করেন, ১৯৬৫ সালে আবদুর রাজ্জাক নামে তার এক ভাই ৮ বছর বয়সে মারা যান। ওই ভাইয়ের ভুয়া স্ত্রী সাজিয়ে তালতলী ভূমি অফিস তার নামে ভূমি রেকর্ড করে দেয়। এ বিষয়টি তিনি জানতে পেরে তালতলী ভূমি অফিসে সইমোহরের জন্য আবেদন করেন। সেটিও ঝুলে আছে।

যমুনা গ্রুপের ভূমি ক্রয়ের এজিএম মো. মাহবুবুল মাওলা বলেন, ২০১৭ সালের ৩১ অক্টোবর নামজারির জন্য ৪টি কেসের প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র দেয়া হলেও আজ পর্যন্ত তা চূড়ান্ত হয়নি।

অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফারজানা রহমানকে রোববার ফোন করা হলে তিনি কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
যুগান্তর

Next Post

‘অবোধ’ সিনেমা দিয়ে বলিউডে পা রাখেন মাধুরী।

সোম জুলাই ২৩ , ২০১৮
আভা ডেস্ক :বলিউড তারকা মাধুরী দীক্ষিতের হাসিতে ঘায়েল হয়নি, এমন পুরুষ কমই আছে। কিন্তু এই সুন্দরীকেই বিয়ে করতে অস্বীকার করেছিলেন এক গায়ক। কিন্তু কেনই বা তিনি রাজি ছিলেন না? মাত্র ১৭ বছর বয়সে, ১৯৮৪ সালে ‘অবোধ’ সিনেমা দিয়ে বলিউডে পা রাখেন মাধুরী। নব্বইয়ের দশকে ‘তেজাব’ সিনেমায় তার ‘এক দো তিন’, […]

এই রকম আরও খবর

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links