গোদাগাড়িতে প্রতিবন্ধী ও ভিজিডি কার্ড বিক্রির অভিযোগ ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ গ্রামীণ দুর্বল জনগোষ্ঠির  জন্য বরাদ্দ “ভিজিডি ও প্রতিবন্ধী” কার্ড পাইয়ে দেওয়ার নামে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মোঃ মুক্তার আলীর বিরুদ্ধে। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে রয়েছে নৌবাহিনীতে চাকরি দেওয়ার নামে টাকা নেওয়ার অভিযোগ। মুক্তার আলী চর কাঁনাপাড়া গ্রামের মৃত মাহাতাব আলীর ছেলে। তিনি রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার ৯ নং চর আষাড়ীয়াদহ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি।

“কারো কাছে প্রকাশ করলে র‍্যাব, পুলিশ দিয়ে তুলে নিয়ে মামলা দিয়ে জেলে পাঠিয়ে দিব” এভাবে ভয় দেখিয়ে হুমকি দিয়েছেন চর ডাগরি (নতুনপাড়া) গ্রামের মিন্টুর বউ শরিফা বেগমকে। মুক্তার আলী’র এমন হুমকির অডিও মিডিয়ার হাতে এসেছে।

সেই অডিও’র মাধ্যমে জানাযায়, বেশ কিছুদিন যাবত মিন্টুর বউ মারুফার মাধ্যমে ঐ এলাকার ৫০ জন অসহায় হতদরিদ্র মানুষের কাছ থেকে প্রতিবন্ধীর জন্য আট হাজার এবং ভিজিডি’র কার্ডের জন্য ছয় হাজার টাকা করে নিয়েছেন। কিন্তু কোন ব্যক্তির কার্ড করে দিতে না পারায় টাকা ফেরত নিতে চান মারুফা ও মুরসালিন। এতে টাকা ফেরত দিতে অস্বিকার করেন সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি মুক্তার আলী। রেকর্ডে বলছেন,  আমি টাকা কোথায় থেকে দিব? আমি টাকা চেয়ারম্যানকে দিয়ে দিয়েছি।

পরে বিষয়টির সত্যতা যাচাইয়ে চর আষড়িয়াদহ এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অবৈধ উপায়ে টাকা হাতিয়ে নিতে চর ডাগরিপাড়া গ্রামের মাবুদ আলীর ছেলে মুরসালিন’কে এজেন্ট (দালাল) হিসেবে প্রলুব্ধ করেন মুক্তার। আর মুক্তার আলীর পাতা ফাঁদে আঁটকে যায় মিন্টুর বউ মারুফা বেগম। কারন মারুফাকে বোঝানো হয়েছে তিনি এমপি ও চেয়ারম্যানের লোক। এতে বিশ্বাস করে প্রথমেই একমাত্র ছেলের নৌবাহিনীতে চাকরি নিয়ে দেওয়ার নাম করে ৯ লক্ষ টাকা কন্টাক্ট করে এবং কিছু টাকা এ্যাডভান্স হিসেবে নেয় মুক্তার। পরে  মুরসালিন’কে কাজে লাগিয়ে ডাগরিপাড়া গ্রামের অসহায় মহিলা মারুফার মাধ্যমে প্রতারণাপূর্বক টাকা হাতিয়ে নেয় ছাত্রলীগ নেতা মুক্তার। এই প্রতারণার শিকার হন চর ডাগরিপাড়া গ্রামের আতারুলের প্রতিবন্ধী ছেলে মিনারুল, চর আমতলা গ্রামের তোজাম্মেলের প্রতিবন্ধী স্ত্রী শেফালি বেগম ও ডাগরিপাড়া গ্রামের তারিকুলের স্ত্রী সাবানা বেগমের থেকে ভিজিডি কার্ড করে দেওয়ার নামে টাকা নিয়েছেন ঐ প্রতারক মুক্তার আলী।

পরে মুক্তার কার্ড করে দিতে না পারায় সকল ভুক্তভোগীরা মারুফাকে চাপ দিতে থাকে। তখন মারুফা বাধ্য হয়ে মুক্তারের নিকট টাকা ফেরত চাইলে বিভিন্ন ধরনের হুমকি ধামকি ও মামলার ভয় দেখান। মিডিয়াকর্মীদের তথ্য অনুসন্ধানে আরও জানাযায়, গোদাগাড়ি বসন্তপুর এলাকায় প্রতারণার সাইনবোর্ড হিসেবে একটি সামাজিক সংগঠন করে মুক্তার। যার নাম দেওয়া হয় “মিতালি কনজুমার সোসাইটি লিঃ”। তবে এই সংগঠনের কোন লাইসেন্স বা রেজিষ্ট্রেশন রয়েছে কিনা তা নিয়েও সন্ধীহান এলাকাবাসি। এরপর থেকে এই সাইনবোর্ডের আড়ালে বিভিন্নভাবে প্রতারণা করছেন এই  ছাত্রনেতা মুক্তার আলী। ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ে সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি মুক্তার আলীর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, বিষয়টি পুরো সত্য নয়। আমি প্রতিটি বাড়ি বাড়ি গিয়ে জিজ্ঞেস করেছি তাদের কোন আপত্তি নাই। আমার সম্মান ক্ষুন্ন করতে একটি মহল এগুলো গুজব ছড়াচ্ছে।  ভুক্তভোগীদের নাম ও টাকার বিবরণের কথা বলতেই তিনি প্রতিবেদকের সাথে দেখা করতে মরিয়া হয়ে উঠেন মুক্তার।পরে তিনি তার বিভিন্ন শুভাকাঙ্ক্ষীদের দিয়ে ফোন করিয়ে সংবাদ প্রকাশ না করার অনুরোধ করেন।

সত্যতা যাচাইয়ে চর আষাড়িয়াদহ ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আশরাফুল ইসলাম ভোলা’র সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, আমিও শুনেছি কেউ কার্ড করে দেওয়ার নামে টাকা নিচ্ছে।  আমার ইউনিয়নে মোট কার্ড এসেছে ২৩৫ টা। এর মধ্যে দলকে দিয়েছি ৯০ টা, প্রতি মেম্বার ৬ টা, মহিলা মেম্বারকে দেওয়া হয়েছে প্রতিটি ওয়ার্ডে ৭ টা করে। আর আমার জন্য ২৮ কার্ড।  আমার এই ২৮ কার্ডের মধ্যে যদি কেউ বলতে পারে যে, আমি কারো থেকে টাকা নিয়েছি, তাহলে আমি আইনের যেকোন শাস্তি মাথা পেতে নিব। আমাকে টাকা দিয়েছে এমন কারো রেকর্ড থাকলে আমাকে দেন,  আমি তার বিরুদ্ধে মামলা করবো। আমার ইউনিয়নে টাকা দিয়ে কোন কার্ড বিক্রি হয়না।

পরে বিষয়টি নিয়ে গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ জানে আলম এর সাথে মুঠোফোনের মাধ্যমে কথা বললে তিনি বলেন, আমি এই ধরনের কোন অভিযোগ পাইনি। কার্ড দেওয়ার নামে টাকা নেওয়ার কোন নিয়ম রয়েছে কি? জানতে চাইলে তিনি উত্তরে বলেন, এবিষয়ে আমার কোন মন্তব্য নাই। টাকা নেওয়ার নিয়ম আছে কি?  তারপরও তিনি বলেন, আমি জানিনা!! আপনার কোন কিছু জানার থাকলে আমার অফিসে আসেন, সাক্ষাতে কথা বলবো।

Next Post

প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ

রবি ফেব্রু. ১২ , ২০২৩
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিঃ গত ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ রোজ শুক্রবার জাতীয় কিছু দৈনিক পত্রিকায় রাজশাহী মহানগরীর গোলজারবাগ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমজাদ হোসেনকে স্কুল থেকে বের করে দেওয়া, স্কুলে আসতে নিষেধ করাসহ তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার বিষয়ে রাজশাহী মহানগর যুবলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নাহিদ আক্তার নাহানকে জড়িয়ে যে সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে- […]

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links