আভা ডেস্কঃ প্রশাসনিক ব্যবস্থাকে জনগণের দোরগোড়ায় নিয়ে যথাযথ দায়িত্ব পালনে সরকারি কর্মকর্তাদের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক প্রদান অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে যুক্ত হয়ে শনিবার তিনি এ নির্দেশ দেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা প্রশাসনিক ব্যবস্থাটাকে ঢেলে সাজিয়ে জনগণের দোরগোড়ায় নিয়ে যেতে চাই, যেন প্রত্যেক প্রজাতন্ত্রের যারা কর্মচারী, যেখানে সংবিধানে সুনির্দিষ্ট আছে, তারা যেখানেই দায়িত্বে থাকবেন, সেটা যথাযথ পালন করা। একটা রাষ্ট্রকে যদি উন্নত করতে হয়, তাহলে একটি লক্ষ্য সুনির্দিষ্ট করতে হয়। একটা দিকনির্দেশনা থাকতে হয়; দিকদর্শন থাকতে হয়। কর্মপন্থা প্রণয়ন ও তা আন্তরিকতার সঙ্গে বাস্তবায়ন—এটাই লক্ষ্য।
‘অর্থাৎ জনগণের প্রতি যে দায়িত্ববোধটা…কারণ এই জনগণের অর্জিত অর্থ দিয়েই বেতন-ভাতা, আরাম-আয়েশ সবকিছু। কাজ করতে হবে তাদের জন্য, তাদের স্বার্থে, তাদের কল্যাণে। তৃণমূলের যে মানুষগুলো, তাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নই হচ্ছে আমাদের মূল লক্ষ্য। আর সে লক্ষ্য নিয়েই কিন্তু আমাদের সরকার কাজ করে।’
তিনি বলেন, ‘প্রশাসনসহ বিভিন্ন সরকারি কর্মকাণ্ডে যারা কর্মরত, তাদের সুযোগ-সুবিধা যেন থাকে। অর্থাৎ কর্মক্ষেত্রে একটি কর্মপরিবেশ তৈরি করে আপনি যেন নির্বিঘ্নে আপনার ওপর দায়িত্ব পালন করতে পারেন, তার জন্য কিন্তু আমরা অনেক ব্যবস্থা করে দিয়েছি। আমাদের লক্ষ্যটাই ছিল প্রশাসনের অবকাঠামোকে আরও উপযোগী করা।’
সরকারি চাকরিজীবিদের জন্য সরকারের উদ্যোগ তুলে ধরে সরকারপ্রধান বলেন, ‘আপনারা জানেন, আমি বিসিএস প্রশাসন একাডেমির ৯ তলা ভবন নির্মাণ করে দিয়েছিলাম ২০০১ সালেই। তার পরে প্রশিক্ষণটা আমরা কিছুদিন বৃদ্ধি করেছি। আমরা চাচ্ছি আরও ভালো প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে। এর জন্য আমরা উদ্যোগ নিয়েছি।
‘আমাদের প্রশাসনে যারা দায়িত্বরত, যারা জনগণকে সেবা দেবেন, আমি মনে করি আপনাদের যে সমস্যাগুলো আগে ছিল, সেগুলো দূর করা, অর্থাৎ বেতন-ভাতা বৃদ্ধি, গাড়ি বা ফ্ল্যাট, জমি কেনার জন্য আমরা বিশেষভাবে ব্যবস্থা নিয়েছি, যাতে আপনারা সেগুলো করতে পারেন। সংসারের চিন্তা লাঘব করে দিয়ে জনগণের চিন্তা যেন করতে পারি, সে সুযোগটা যাতে সৃষ্টি করা যায়।’
তিনি বলেন, ‘যাদের দিয়ে দায়িত্ব পালন করাব, তারা যেন মনপ্রাণ ঢেলে জনগণের সেবা করতে পারে। এটাই আমাদের লক্ষ্য ছিল। আমরা সেভাবেই কাজ করে গিয়েছি। সেই সঙ্গে কর্মসম্পাদন চুক্তি, অর্থাৎ কী কাজ করবে, প্রত্যেকটা কাজের জবাবদিহিতা বা সুষ্ঠু পরিকল্পনা থাকা উচিত। কর্মসম্পাদন চুক্তির যে ব্যবস্থাটা নিয়েছি, আমি মনে করি এতে আমরা যে সিদ্ধান্তটা নিচ্ছি, তা বাস্তবায়ন অনেক সহজ হয়ে যাচ্ছে।
‘সেই সঙ্গে শুদ্ধাচার অনুশীলন করার ব্যবস্থাটাও নিয়েছি। এই দক্ষ কর্মসম্পাদনের মাধ্যমে যারা যোগ্য হচ্ছেন, তাদের একটি পুরস্কারের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। পুরস্কার এ কারণে যে, শুধু আপনারাই না; নতুন প্রজন্ম যখন দায়িত্বে আসবে, তারাও যেন উৎসাহিত হয় এবং নিজেদের সেভাবে তৈরি করে।’
করোনা মহামারির মধ্যেও অর্থনীতি সচল রাখায় কর্মকর্তাদের ধন্যবাদও জানান সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, “আপনাদের আমি ধন্যবাদ জানাই যে, একদিকে করোনা…এই করোনা মহামারির কারণে সারা বিশ্বের অর্থনীতিতে আজকে মন্দা। উন্নত দেশগুলোই হিমশিম খাচ্ছে। সেই অবস্থাতেও বাংলাদেশে আমরা কিন্তু আমাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের গতিটা অব্যাহত রাখতে পেরেছি। এটা ঠিক, আজকে বিশ্বে কোনো দেশই এককভাবে চলতে পারে না।
“বর্তমান বিশ্ব গ্লোবাল ভিলেজ; অনেক ক্ষেত্রেই আমরা নির্ভরশীল। এটাও যেমন ঠিক…জাতির পিতার একটা কথা আমি সবসময় মনে করি। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে তিনি যখন দায়িত্ব নিয়েছেন, তখন তাকে সাংবাদিকরা জিজ্ঞেস করেছিল, ‘এ দেশের তো কোনো সম্পদ নাই। আপনি কীভাবে গড়ে তুলবেন?’ তিনি বলেছিলেন, ‘আমার মাটি আছে, মানুষ আছে। আমি সেটা দিয়েই এ দেশটাকে গড়ে তুলব।’ আমি সেটা বিশ্বাস করি, বাংলাদেশের মাটি অনেক উর্বর। যেখানে একটা বীজ ফেললে গাছ হয়, ফল দেয়, সে দেশের মানুষ না খেয়ে কষ্ট পেতে পারে না। আমরা সেভাবেই চিন্তা করি।”
তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতু নিয়ে অনেক কথা, অনেক ঝড় ছিল। তখন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম নিজেদের অর্থে পদ্মা সেতু করব। অনেক বাধা এসেছিল। কিন্তু আমার আত্মবিশ্বাস ছিল পারব। কেন পারব না? বাংলাদেশের জনগণ আমার সঙ্গে পাশে দাঁড়িয়েছিল। জনগণের শক্তিই তো সবচেয়ে বড় শক্তি। এতে আমাদের দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে একটা বিরাট সুযোগ তৈরি করেছে।
‘কোনো মানুষ গৃহহীন থাকবে না। ভূমিহীন, গৃহহীনদের ঘর করে দেব। জাতির পিতার গুচ্ছগ্রাম প্রকল্পের পদাঙ্ক অনুসরণ করে আশ্রয়ণ প্রকল্প প্রণয়ন শুরু করি। ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য প্রকল্প আমরা সফলভাবে প্রণয়ন করে যাচ্ছি। আমাদের সামান্য কিছু এখন বাকি আছে। আরও ৫৬ হাজার ঘর আমরা করে দেব। এরই মধ্যে দুটি জেলা ও ৫৬ উপজেলা ভূমিহীন, গৃহহীন হিসেবে ঘোষণা দিতে পেরেছি। আমি আশা করি আগামীতে আমরা সমগ্র বাংলাদেশকেই ভূমিহীন, গৃহহীন ঘোষণা করতে পারব।’
শনি জুলাই ২৩ , ২০২২
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ রাজনৈতিক দল হিসেবে দায়িত্বশীল আচরণ না করলে এবং জনস্বার্থ পরিপন্থি কর্মকাণ্ড বন্ধ না করলে দেশের মানুষ বিএনপিকে ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষেপ করবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। শনিবার এক বিবৃতিতে তিনি এ মন্তব্য করেন। কাদের বলেন, ‘জনগণ আশা করে একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি নেতারা […]
এই রকম আরও খবর
-
১৭ জুন, ২০২১, ৩:৪০ অপরাহ্ন
-
৩১ আগস্ট, ২০২০, ৬:২৩ অপরাহ্ন
-
২৩ এপ্রিল, ২০২২, ৮:৩৭ অপরাহ্ন
-
২ এপ্রিল, ২০২১, ৬:২৯ অপরাহ্ন
-
১৮ অক্টোবর, ২০২১, ৭:৩৯ অপরাহ্ন
-
১২ ডিসেম্বর, ২০২০, ৯:৪০ অপরাহ্ন