আভা ডেস্কঃ ইউনাইটেড হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডে চিকিৎসাধীন ৫ রোগী নিহতের ঘটনায় হাসপাতালের অব্যবস্থাপনা এবং গাফিলতির বিষয়টি ফুটে উঠেছে পুলিশের তদন্তে।
করোনারোগীর চিকিৎসায় অনুমোদন ছাড়াই তৈরি অস্থায়ী আইসোলেশন ওয়ার্ডে অগ্নিনির্বাপনের কোনো ব্যবস্থা ছিলো না। এমনকি অগ্নিকাণ্ডের পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রাথমিকভাবে আগুন নেভানোর কোনো চেষ্টাই করেনি।
ইউনাইটেড হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা তদন্তে গঠিত পুলিশের কমিটি বুধবার (১০ জুন) ডিএমপি কমিশনারের কার্যালয়ে প্রতিদেবন জমা দিয়েছে। ওই প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র। এর আগে ফায়ার সার্ভিসের তদন্ত প্রতিবেদনেও ইউনাইটেড হাসপাতালে স্থাপিত অস্থায়ী করোনা ইউনিটকে ত্রুটিপূর্ণের হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
ডিএমপির গুলশান বিভাগের গঠিত তদন্ত কমিটির ওই প্রতিবেদনে এসি থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয়েছিল বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ভিডিও ফুটেজ অন্যান্য আলামতের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। আগুন লাগার পরপরই ডাক্তার-নার্সসহ অন্যরা রোগীদের সরানোর চেষ্টা না করেই নিরাপদে সরে যান।
স্বজনদের বরাতে সংশ্লিষ্টরা জানান, আগুন নেভানোর ব্যাপারে হাসপাতালের ক্লিনার আরাফাত ছাড়া অন্যরা দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করেনি। আরাফাত শেষ পর্যন্ত একাই মগে মগে পানি ঢেলেছেন। এ ঘটনায় সে পুরস্কার পাওয়ার মতো কাজ করেছে।
এ বিষয়ে গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) সুদীপ কুমার চক্রবর্তী জানান, ইউনাইটেড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যথাযথ কোনো অনুমতি না নিয়েই অস্থায়ী আইসোলেশন ইউনিট তৈরি করেছিলো। অগ্নিকাণ্ডের পর উপস্থিত কেউ কেউ আগুন নেভানোর চেষ্টা করলেও মেয়াদহীন ফায়ার এক্সটিংগুইশার থাকায় তা কাজে আসেনি।
গত ২৭ মে রাতে ইউনাইটেড হাসপাতালের অস্থায়ী করোনা ইউনিটে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় চিকিৎসাধীন পাঁচ রোগী মারা যান। তারা হলেন- রিয়াজুল আলম (৪৫), খাদেজা বেগম (৭০), ভের্নন এন্থনি পল (৭৪), মো. মনির হোসেন (৭৫) ও মো. মাহাবুব (৫০)।
এ ঘটনায় ইউনাইটেড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একটি অপমৃত্যু মামলা করলেও আগুনে নিহত ভের্নন এন্থনি পলের পরিবারের পক্ষ থেকে ইউনাইটেড হাসপাতালের বিরুদ্ধে ‘অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগে’ মামলা করা হয়েছে।
মামলায় ইউনাইটেড হাসপাতালের চেয়ারম্যান, এমডি, সিইও, পরিচালক, করোনা ইউনিটে সে সময় কর্মরত ডাক্তার-নার্স, সেফটি ও সিকিউরিটি কর্মকর্তাদের আসামি করা হয়েছে।
বাংলা নিউজ