‘আওয়ামী লীগকে খেলার ভয় দেখিয়ে লাভ নেই”- লিটন

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেছেন, দেশে আর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দরকার নেই। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর মতোই ক্ষমতাসীন সরকার ক্ষমতায় থেকে নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে যেভাবে নির্বাচন, আগামীতেও বাংলাদেশে সেইভাবে নির্বাচন হবে। আওয়ামী লীগকে খেলার ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। আওয়ামী লীগ কখনো চোরাপথে ক্ষমতায় আসেনি, দরকারও নেই। আওয়ামী লীগের জন্য লক্ষ-কোটি জনতা আছে।

১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে সোমবার বিকেলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর পার্কে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শাখা আয়োজিত শোক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বারবার সর্তক করা হলেও তিনি সতর্কবানী বিশ্বাস করেননি। যে জিয়াউর রহমানকে চারটি প্রমোশন দিয়ে মেজর থেকে মেজর জেনারেল করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। সেই জিয়াউর রহমান খন্দকার মোশতাকের কাঁধে বন্দুক রেখে ডালিম, রশীদ, ফারুক, হুদাদেরকে দিয়ে হত্যাকাণ্ডটি করলেন। তারপরে তিনি খুনি মোশতাককে কয়েকদিনের জন্য ক্ষমতায় বসালেন। তারপর তাকে কারাগারে পাঠালেন এবং খুনিদের বিচার করা যাবে না-এই মর্মে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে পরবর্তীতে সংসদে আইন হিসেবে পাস করেন জিয়াউর রহমান। সেই কারণে খুনিদের বিচার দীর্ঘদিন করা যায়নি। ৭৫ পরবর্তী বাংলাদেশকে পাকিস্তানী ভাবধারায় পরিচালিত করার সূচনা করেন জিয়াউর রহমান। পরবর্তীতে এরশাদ সাহেব এবং তারপরে খালেদা জিয়া সেই পথেই হেটেছে।

অরাজক পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করলে দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে হুঁশিয়ারি দিয়ে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, আগামী ১ সেপ্টেম্বর বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী, আমরা শুনতে পাচ্ছে, সেপ্টেম্বর মাস থেকে বিএনপি সারাদেশে জানান দেবে, আওয়াজ দেবে। আমাদের নেতাকর্মীরা প্রস্তুত থাকবেন। বিএনপি যদি কোন অরাজক পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করে, তাহলে তার দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে।

শোক সমাবেশে এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন আরো বলেন, ৭৫ পরবর্তী সারা বাংলাদেশে নানা রকম অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল। যারা দিনের পর দিন, মাসের পর মাস, বছরের পর বছর রাত ১২টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত কারফিউ দিয়ে সেনাবাহিনীর সদস্য, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের মানুষকে হত্যা-গুম করেছিল, অনেকের লাশও পাওয়া যায়নি। তারাই আজ মানবাধিকার লঙ্ঘনের কথা বলে। যেদিন মায়ের কাছে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে শিশু শেখ রাসেলকে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল, সেদিন কোথায় ছিল মানবাধিকার? যেদিন শেখ পরিবারের দুই পুত্রবধূকে হত্যা করা হয়েছিল,যাদের হাতের মেহেদী তখন শুকায়নি, সেদিন কোথায় ছিল মানবাধিকার? যেদিন জিয়াউর রহমান হ্যা/না ভোটে হ্যা বাক্সে ভোট ভরে দিয়ে নিজের জনপ্রিয়তা-গ্রহণযোগ্যতা প্রমাণের চেষ্টা করলো- সেদিন মানবাধিকার কোথায় ছিল? আমরা যদি বলতে চাই ১ঘন্টা বলা যাবে। তারা কীভাবে ইচ্ছে করে পায়ের তলে মানবাধিকার নষ্ট করেছিল।

আওয়ামী লীগ জনগণের কল্যানে কাজ করছে জানিয়ে রাসিক মেয়র বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার উন্নয়নে বিশ্বাসী। আমরা দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করছি। দেশের সর্বক্ষেত্রে উন্নয়ন আজ দৃশ্যমান।

খায়রুজ্জামান লিটন আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের ব্যক্তি ও সুফলভোগীদের খুঁজে বের করতে হবে। এজন্য কমিশন গঠনের জোর দাবি উঠেছে। জিয়াউর রহমান ও তাঁর পরিবার ছাড়া আর কারা কারা বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে সুফলভোগী, তাদের খুঁেজ বের করতে হবে।

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত চারদলীয় জোট সরকারের নির্মম শাসন, হত্যা-নির্যাতন, রগ কাটা, বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া, মায়ের সামনে কন্যানে ধর্ষণ করা সহ এমন কোন কাজ নেই, যা তারা করেনি। সেই পাপে তারেক জিয়া দেশের বাইরে পলাতক, খালেদা জিয়া জেলখানায় ছিল সাজাপ্রাপ্ত হয়ে। নেত্রী শেখ হাসিনার অনুকম্পায় এখন বাড়িতে আছে। আজকে বিএনপি মনে করে তারা আবার ক্ষমতায় যাবে, আবার হাওয়া ভবন হবে, সেখানে মানুষ আসবে চাকরি নেওয়ার জন্যে, কোটি কোটি টাকা দিয়ে তাদের বাক্স ভরে দিয়ে যাবে।-এই স্বপ্ন দেখছে বিএনপি। তাদের সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে না।

সমাবেশে প্রধান বক্তা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগের সেকেন্ড হোম হচ্ছে রাজপথ। পঁচাত্তরের খুনিদের জন্য রাজপথ না, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলাকারীদের জন্য রাজপথ না, জঙ্গি-সন্ত্রাসীদের জন্য রাজপথ না। দুর্নীতিবাজ বিএনপি-জামায়াতের জন্য রাজপথ না। রাজপথ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের মানুষের জন্য, রাজপথ জনগণের জন্য।

তিনি আরো বলেন, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী আছেন বলেই বাংলাদেশের মানুষ ভালো আছে। শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী আছেন বলেই সংকটেও বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মুহঃ জিয়াউর রহমানের সভাপতিত্বে ও  সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওদুদের সঞ্চালনায় শোক সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য ডা. সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল ও সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য ফেরদৌসি ইসলাম জেসি। সমাবেশে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীসহ জনসাধারণ উপস্থিত ছিলেন।

Next Post

এক দশকে জিরো থেকে হিরো, সনদ বানিজ্যে কোটিপতি, দুদকে মামলা

মঙ্গল আগস্ট ৩০ , ২০২২
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ রাজশাহীতে তিনটি টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট তৈরি করেন নন্দনগাছি থেকে আসা সহকারী স্কুল শিক্ষক আবুল হাসনাত মো. কামরুজ্জামান মুকুল। সেই তিনটি টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট থেকে সনদ বাণিজ্য করে এক দশকেই কোটিপতি বনে গেছেন তিনি। রাজশাহী শহরে প্রাণকেন্দ্রে ক্রয় করেছেন ৫টি বাড়ি। তাঁর নিজ গ্রাম, চারঘাটের নন্দনগাছিতে ১০০ বিঘার পেয়ারা বাগান এবং […]

এই রকম আরও খবর

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links