আভা ডেস্ক: গত রোববার সড়ক দুর্ঘটনায় রাজধানীর শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর পরিপ্রেক্ষিতে দুর্ঘটনা রোধে যানবাহনের ফিটনেস জরিপের জন্য কমপক্ষে ১৫ সদস্যের একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ বিশেষজ্ঞ অনুসন্ধান কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
একইসঙ্গে ওই কমিটিকে তিন মাসের মধ্যে ফিটনেসবিহীন পরিবহনের তালিকা আদালতে দাখিলেরও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ নির্দেশ দ্রুত বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন।
উল্লেখ্য, যে দুটি বাসের রেষারেষির জের ধরে দুই শিক্ষার্থী নিহত এবং অন্তত ১৫ জন আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে, তার একটিরও ফিটনেস ছিল না।
এদিকে দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে এবং রাজধানীর অপ্রাপ্তবয়স্ক ও লাইসেন্সবিহীন চালকদের ধরার নির্দেশ দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। ওই দুর্ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী নিজেও মর্মাহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
অন্যদিকে সড়কপথে দুর্ঘটনা এড়াতে এবং নিরাপদ ভ্রমণ নিশ্চিত করতে বিআরটিএ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়ার কথা জানিয়েছে। তবে বাস্তবতা হল, দুই শিক্ষার্থীর করুণ মৃত্যুর রেশ কাটতে না কাটতেই গতকাল যাত্রাবাড়ীতে শিক্ষার্থীদের ওপর পিকআপ উঠিয়ে দেয়ার ঘটনা ঘটেছে।
এদিকে কুমিল্লায় স্কুল শিক্ষার্থীদের ওপর উঠিয়ে দেয়া হয়েছে বালুবাহী একটি ট্রাক। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছে দশম শ্রেণীর একজন ছাত্রী। আহত হয়েছে আরও দু’জন। অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে, দুই শিক্ষার্থীর নির্মম মৃত্যুর ঘটনা যানবাহন চালকদের মনে কোনো রেখাপাতই করেনি। তাদের মধ্যে আগের মতোই দুবির্নীত ও বেপরোয়া মনোভাব বিরাজ করছে।
বস্তুত চালকের খামখেয়ালিপনা ও নিয়ম না মেনে গাড়ি চালানোর কারণেই অধিকাংশ সড়ক দুর্ঘটনার সূত্রপাত। দুঃখজনক হল, পরিবহন মালিক ও শ্রমিক নেতাদের দাপটে দোষী চালকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছে না।
এ ক্ষেত্রে মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্যের মদদ রয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। সড়ক দুর্ঘটনার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে বিভিন্ন মহল থেকে নানা ধরনের পরামর্শ ও সুপারিশ করা হলেও তা যে অরণ্যে রোদনে পর্যবসিত হচ্ছে- দুই শিক্ষার্থীসহ প্রতিনিয়ত মানুষের আহত-নিহত হওয়ার ঘটনা তারই প্রমাণ।
সড়ক-মহাসড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা সমাধানের অযোগ্য কোনো বিষয় নয়। এজন্য দরকার ইতিবাচক চিন্তা ও সমন্বিত পদক্ষেপ। সড়কপথে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হলে দুর্ঘটনার হার অনেক কমে যাবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। এক্ষেত্রে হাইকোর্ট ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশের বাস্তবায়ন দুর্ঘটনা হ্রাসে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে আমাদের বিশ্বাস।
যুগান্তর