যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসী শোধনাগারগুলোতে শিশুদের ওপর বর্বর নির্যাতন চালায় পুলিশ। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পরিবর্তে শিশুদের হাতকড়া পরিয়ে নগ্ন করে পেটানো হয়। যুক্তরাজ্যের ভার্জিনিয়ার শেনানদোয়াহ ভ্যালি কিশোর শোধনাগারে তাদের নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরে শুক্রবার এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে এপি।
প্রতিবেদন তৈরিতে কয়েকজন অভিবাসীর সাক্ষাৎকার নেয়া হয়েছে। অধিকাংশ আটক শিশু বলেছে, অভিবাসী কারাগারে পুলিশ তাদের কাপড়চোপড় কেড়ে নেয়। দিনের পর দিন উলঙ্গ করে বেঁধে রেখে যৌন হেনস্থা করে। কখনও কখনও বেধড়ক পিটুনিও দেয়া হয়। চেয়ারের সঙ্গে মাথা চেপে ধরে বেঁধে রাখা হয়। শিশুদের ওপর চালানো এসব অমানবিক কর্মকাণ্ডকে ‘উপযুক্ত দাওয়াই’ বলেই মনে করে অভিবাসী পুলিশ।
অধিবাসী নিয়ে এমন তুলকালামের মধ্যেই শিশুদের আটক রাখার নীতি বহাল রাখতে ক্যালিফোর্নিয়ার ফেডারেল আদালতে আবেদন জানিয়েছে মার্কিন বিচার বিভাগ। মার্কিন আদালতের রায় অনুযায়ী, ২০ দিনের বেশি কোনো শিশুকে আটকে রাখার এখতিয়ার নেই অভিবাসন কর্তৃপক্ষের।
১৯৯৭ সালের দেয়া এ রায় পরিবর্তনের জন্য আবেদন জানিয়েছেন বিচার বিভাগ। সাম্প্রতিক সময়ে অবৈধভাবে সীমান্ত পেরিয়ে আসা অভিবাসীদের বিরুদ্ধে ট্রাম্প প্রশাসন ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণের পর ২৩০০ শিশুকে তাদের পরিবার থেকে আলাদা করে ফেলা হয়।
শিশু-কিশোরদের তাদের পরিবার থেকে সরিয়ে নেয়ার ছবি ও তাদেরকে তালাবন্ধ কুঠুরিতে আটকে রাখার ছবি প্রকাশ হয়ে যাওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক অঙ্গনে সমালোচনার ঝড় ওঠে। এরই ধারাবাহিকতায় শিশুদের আশ্রয়কেন্দ্র গড়ে তোলাকে কেন্দ্র করে রমরমা ব্যবসার বিষয়টি উঠে এসেছে।
অবৈধ অভিবাসীদের সন্তানদের থাকা-খাওয়া, আশ্রয়ের ব্যবস্থা করে দেয়ার আড়ালে শতকোটি ডলারের রমরমা ব্যবসা জমে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্রে। অলাভজনক প্রতিষ্ঠানগুলো বহু আগে থেকেই এ কাজে জড়িয়ে রয়েছে। তবে সম্প্রতি ডোনাল্ড ট্রাম্প সরকার অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর নীতি গ্রহণের পর রীতিমতো ফুলে ফেঁপে উঠেছে এ ব্যবসা।
‘সাউথওয়েস্ট কি’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্র ও আটককেন্দ্রে থাকা অভিবাসী শিশুদের বিভিন্ন সেবা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ২০১৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত সরকারের কাছ থেকে ৯৫৫ মিলিয় ডলারের কাজ পেয়েছে। অভিবাসীদের আশ্রয়কেন্দ্র গড়ে তোলার নামে গজিয়ে উঠেছে অন্তত ডজনখানেক প্রতিষ্ঠান। শুধু টেক্সাসেই খুলে বসেছে ৩০টিরও বেশি আশ্রয়কেন্দ্র। দেশটির অন্য ১৬টি রাজ্যেও আরও অনেক প্রতিষ্ঠানের শ’খানেক এমন স্থাপনা রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদে অভিবাসন প্রশ্নে রিপাবলিকানদের উত্থাপিত সমঝোতামূলক বিলটি পাসের জন্য ভোটাভুটির দিনক্ষণ পিছিয়ে দেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু নিয়ে আইনপ্রণেতারা মতৈক্যে পৌঁছতে ব্যর্থ হওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
যুগান্তর
জনস্বার্থে প্রচার।