আভা ডেস্কঃ অনলাইনে ভুয়া খবর বন্ধে পদক্ষেপ নিচ্ছে এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশ। জেল-জরিমানার বিধান রেখে সংসদে আইন পাস করতে যাচ্ছে সিঙ্গাপুর, তাইওয়ানসহ বেশ কয়েকটি দেশ। এই সারিতে আছে অস্ট্রেলিয়াও।
‘দ্য ইকোনমিস্ট’-এর এক প্রতিবেদনে এ কথা জানানো হয়েছে। ১ এপ্রিল অনলাইনে ভুয়া বন্ধ করতে সংসদে নতুন বিল উত্থাপন করেছে সিঙ্গাপুর সরকার। বিলটি আইনে পরিণত হলে অনলাইনে ‘মিথ্যা বক্তব্য’ দেওয়ার দায়ে কোনো ব্যক্তিকে সর্বোচ্চ ১ মিলিয়ন সিঙ্গাপুর ডলার (প্রায় সোয়া ৬ কোটি টাকা) জরিমানা করা হবে। অর্থদণ্ড ছাড়াও সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়ার বিধান রাখা হবে এই আইনে। এ ছাড়া সরকারের কাছে কোনো ফেসবুক বা টুইটার পোস্টকে মিথ্যা মনে হলে সেটি সরিয়ে নেওয়ার জন্যও বলা হবে ফেসবুক ও টুইটার কর্তৃপক্ষকে।
সম্প্রতি নিউজিল্যান্ডে মসজিদে সন্ত্রাসী হামলায় ৫০ জন নিহত হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম-সংক্রান্ত নতুন আইন আনতে চলেছে অস্ট্রেলিয়া সরকারও। মসজিদে ঢুকে নির্বিচারে গুলি চালানোর দৃশ্য ফেসবুকে লাইভ করেছিলেন খুনি ব্রেন্টন টারান্ট। সেই বীভৎস দৃশ্য ১০ লাখের বেশিবার শেয়ার হয়েছিল ফেসবুকে, যা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছিল। এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে নতুন আইন করছে অস্ট্রেলিয়া। নতুন এই আইনে সন্ত্রাস, ধর্ষণ কিংবা খুনের দৃশ্য সরিয়ে নেওয়া না হলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কোম্পানিগুলোর বিপক্ষে জরিমানা করা যাবে। জরিমানার অঙ্কটাও নেহাত কম নয়। কোম্পানিগুলোর বার্ষিক বিনিয়োগের এক-দশমাংশ পর্যন্ত জরিমানা দাবি করতে পারবে দেশটির সরকার।
তবে সমালোচকেরা বলছেন, স্বৈরাচারী সরকারগুলো এমন আইনের অপব্যবহারও করতে পারে। ভুয়া খবর ছড়ানো বন্ধের অজুহাত দেখিয়ে তাদের বিপক্ষে ওঠা সমালোচনাকে স্তিমিত করতে এমন আইন ব্যবহার করতে পারে স্বৈরাচারী সরকারগুলো, সমালোচকেরা এমন আশঙ্কা করছেন। থাইল্যান্ডের সামরিক জান্তার প্রধান প্রাউত চান-ওচা কিছুদিন আগেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোর তীব্র সমালোচনা করেছিলেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে ভুয়া খবর ছড়ানোর কেন্দ্রস্থল বলেও মন্তব্য করেছিলেন তিনি। সমালোচকদের দাবি, মূলত গত মাসে অনুষ্ঠেয় থাইল্যান্ডের জাতীয় নির্বাচনে নিজের অনিয়ম সম্পর্কে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনা হওয়ায় এমন বিষোদগার করেছেন তিনি।
এদিকে তাইওয়ান সরকারের আশঙ্কা, দেশটিতে আসন্ন নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে মিথ্যা তথ্য ছড়াতে পারে চীন। যে কারণে কিছুদিন আগে দেশটিতে চীননিয়ন্ত্রিত ভিডিও সম্প্রচার বন্ধ করে দিয়েছে দেশটি। ভুয়া খবর ছড়ানো আটকাতে না পারায় সমালোচনার জের ধরে ২ এপ্রিল পদত্যাগও করেন দেশটির জাতীয় যোগাযোগ কমিশনের চেয়ারম্যান।
প্রথম আলো