আভা ডেস্কঃ ফরিদপুরের সালথায় এক স্কুলছাত্রীকে গণধর্ষণ এবং এর ভিডিও ধারণ করে তা ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ৫ এপ্রিল রাতে ছাত্রীটি ঘর থেকে বের হলে প্রতিবেশী দুই যুবক তার মুখ চেপে ধরে তাকে পাশের বাগানে নিয়ে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের ভিডিও মোবাইল ফোন সেটে ধারণ করে তারা পরে ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়।
এ ঘটনায় এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অপরদিকে শনিবার কুমিল্লার লাকসামে পঞ্চম শ্রেণীর এক ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এ ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়া মানিকগঞ্জের সিংগাইরে এক প্রতিবন্ধী শিশু, টাঙ্গাইলের নাগরপুরে ৯ম শ্রেণীর ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়েছে।
নগরকান্দা (ফরিদপুর) : সালথা উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের যুগীকান্দা-লক্ষণদিয়া গ্রামে ৫ এপ্রিল রাতে প্রকৃতির ডাকে নবম শ্রেণীর স্কুলছাত্রী ঘর থেকে বের হলে প্রতিবেশী শাকিল ফকির ও জাবের মাতুব্বর তার মুখ চেপে ধরে তাকে পাশের বাগানে নিয়ে যায়। এরপর তারা তাকে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের ভিডিও মোবাইল ফোন সেটে ধারণ করে তারা তা ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়। এ ঘটনার পর এলাকার মাতুব্বরদের কাছে ছাত্রীটির পরিবারের সদস্যরা বিচার দাবি করেন।
বিচার না পেয়ে মেয়েটির ভাই থানায় মামলা করেন। মামলার পর ধর্ষক শাকিলকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে জাবের পলাতক রয়েছে। একই গ্রামের মাসুদ ফকিরের ছেলে শাকিল এবং বজলু মাতুব্বরের ছেলে জাবের। ছাত্রীটির ভাই জানান, ধর্ষণের পর এসব কথা কাউকে না বলতে শাকিল ও জাবের আমাদের হুমকি দেয়। প্রাণভয়ে আমরা চুপ করেছিলাম।
কিন্তু ধর্ষণের ভিডিও তারা ইন্টারনেটে ছেড়ে দিয়েছে। এলাকার মাতুব্বরদের কাছে এর বিচার দিয়ে আমরা কোনো বিচার পাইনি। তাই বাধ্য হয়ে সোমবার সালথা থানায় মামলা করেছি। সালথা থানার ওসি দেলোয়ার হোসেন খান বলেন, ধর্ষণের অভিযোগে শাকিলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জাবেরকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
লাকসাম (কুমিল্লা) : উত্তর লাকসামে শনিবার পঞ্চম শ্রেণীর এক ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়েছে। কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। ধর্ষককে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলা সূত্রে জানা যায়, বাসচালক আবু তাহের মেয়ের বান্ধবীকে ১৩ এপ্রিল দুপুরে নিজের বাসায় ধর্ষণ করে। ধর্ষিতার চিৎকারে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে।
এরপর প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে কুমিল্লা হাসপাতালে পাঠানো হয়। শনিবার ধর্ষক তাহেরকে আসামি করে শিশুটির বাবা লাকসাম থানায় মামলা করেন। সোমবার রাতে লাকসাম রেলওয়ে জংশন এলাকা থেকে ধর্ষক তাহেরকে পুলিশ গ্রেফতার করে। লাকসাম থানার ওসি মনোজ কুমার দে বলেন, মঙ্গলবার ধর্ষককে কুমিল্লা আদালতে পাঠানো হয়েছে।
মানিকগঞ্জ ও সিঙ্গাইর : সিঙ্গাগাইরের মধ্যধল্লা গ্রামে রোববার সকালে এক প্রতিবন্ধী শিশু (১৩) ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এ ঘটনায় সোমবার মামলা করা হয়েছে। মঙ্গলবার ধর্ষিতার ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয়েছে।
সিঙ্গাইর থানার ওসি খোন্দকার ইমাম হোসেন জানান, মধ্যধল্লা গ্রামের রফিজ উদ্দিন দেওয়ানের ছেলে আল-আমিন দেওয়ান (২৫) শিশুটিকে ধর্ষণ করে। খাওয়ানোর প্রলোভন দেখিয়ে দোকানের পাশে একটি বাগানে নিয়ে ধর্ষণ করা হয়। তিনি বলেন, ঘটনাটি শিশুর মা তাকে অবহিত করেছেন। এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে মিটমাটের চেষ্টাও করেন গ্রাম্য মাতুব্বর ও জনপ্রতিনিধিরা। কিন্তু ফয়সালা না হওয়ায় ভুক্তভোগীর মা সিঙ্গাইর থানায় ধর্ষণের মামলা করেছেন।
ওসি ইমাম হোসেন আরও জানান, ধর্ষককে এখনও গ্রেফতার করা যায়নি। তবে অভিযান চালানো হচ্ছে। শিশুটির মায়ের অভিযোগ, প্রায় মাসখানেক আগে ধর্ষকের বাবা রফিজ উদ্দিন দেওয়ানও শিশুটিকে ধর্ষণ করেন। তখন লোকলজ্জার ভয়ে তারা বিষয়টি চেপে যান।
নাগরপুর (টাঙ্গাইল) : নাগরপুর উপজেলার সহবতপুর ইউনিয়নের সারাংপুর গ্রামে শুক্রবার রাত ৯টার দিকে নবম শ্রেণীর এক ছাত্রী (১৪) ধষর্ণের শিকার হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা হওয়ার পর মো. সুমন মিয়া (২৮) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পাছ ইরতা গ্রামের আবুল হাসেম ওরফে ননী মিয়ার ছেলে সুমন।
এলাকাবাসীরা জানান, পাছ ইরতা গ্রামের বাসিন্দা ওই ছাত্রী নির্মাণ শ্রমিক মাসুদকে সঙ্গে বাড়ির সামনের পাকা রাস্তায় শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে হাঁটাহাঁটি করছিল। কিছু দূর যাওয়ার পর একই গ্রামের ওয়াজেদ আলীর ছেলে আবদুর রহমানের সঙ্গে তাদের দেখা হয়। বেড়ানোর কথা বলে দুইজনকে মোটরসাইকেল করে রহমান সারাংপুর নিয়ে যায়। এরপর ভয় দেখিয়ে মাসুদকে তাড়িয়ে দিয়ে সারাংপুর চকে (মাঠ) নিয়ে মেয়েটিকে রহমান ধর্ষণ করে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে মেয়েটিকে উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ব্যাপারে নাগরপুর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) গোলাম মোস্তফা জানান, ছাত্রীটি বাদী হয়ে মামলা করেছে। মামলার ভিত্তিতে সুমন নামে এক যুবককে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পরীক্ষার জন্য ছাত্রীকে ভর্তি করা হয়েছে।
যুগান্তর