সরকারের চরম অবহেলায় বিনা চিকিৎসায় রোগী মারা যাচ্ছে, ফখরুল ।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘চারদিকে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘ হচ্ছে। মানুষের আহাজারিতে দেশের আকাশ ভারী হয়ে উঠছে। শুধু ঢাকা নয়, অনেক জেলায় লাশ দাফন করার জায়গা খালি নেই। শুধু রাজধানীর কবরস্থানগুলোতে গত চার মাসে লাশ দাফন হয়েছে দুই-তৃতীয়াংশ বেশি। নারায়ণগঞ্জে এ সংখ্যা দ্বিগুণ।’

শনিবার (১৩ জুন) সকালে ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপি গঠিত জাতীয় করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সেলের পক্ষ থেকে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে অনলাইনে যুক্ত ছিলেন পর্যবেক্ষণ সেলের প্রধান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দলের ভাইস চেয়ারম্যান এজেডএম জাহিদ হোসেন।

এসময় লিখিত বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকারের সীমাহীন ব্যর্থতায় করোনা ভাইরাসে মৃত্যুর মিছিল বেড়েই চলেছে। সরকারের চরম অবহেলা ও দায়িত্বহীন আচরণে বাংলাদেশে কোভিড-১৯ ভয়াবহভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। সরকারি হিসাবে দেশে মৃত্যু হাজার ছাড়িয়েছে, আক্রান্ত প্রায় লাখের কাছে। বেসরকারি বা অন্য সূত্রে আক্রান্ত ও মৃত্যর সংখ্যা কয়েকগুণ বেশি।’

তিনি বলেন, ‘ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে করোনা ওয়ার্ডে ২ মে থেকে এখন পর্যন্ত ৫৯৯ জন রোগী মারা গেছেন। এর মধ্যে করোনা পজিটিভ ছিলেন ১৩৯ জন। বাকিদের করোনা পরীক্ষা করা হয়নি। পরীক্ষার বাইরে উপসর্গে মৃত ও আক্রান্তদের পরিসংখ্যান সরকারি হিসাবে আসছে না।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অন্য যে কোনো দেশের তুলনায় বাংলাদেশের মানুষ চিকিৎসা সেবা পাচ্ছে না বললেই চলে। শুধু ভিআইপি ও সরকার দলীয় লোকেরা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসার সুযোগ পাচ্ছেন। দেশে একটি ভেন্টিলেটর, আইসিউ বেড ও অক্সিজেন সিলিন্ডারের জন্য হাহাকার চলছে। হাসপাতালে হাসপাতালে ঘুরে চিকিৎসা না পেয়ে অ্যাম্বুলেন্সেই রোগী মারা যাচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘প্রতি বছর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বাজেটে হাজার হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ থাকে। এ বরাদ্দের টাকা দিয়ে যদি স্বাস্থ্যখাতের উন্নতি করা হতো তাহলে কোভিড-১৯ মোকাবিলায় বাংলাদেশ মুখ থুবড়ে পড়তো না। সত্যিকার অর্থে করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় সমন্বিত কোনো কাজ করেনি সরকার বরং সরকারের মন্ত্রী ও নেতাদের দায়িত্বজ্ঞানহীন ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ কথাবার্তার মাধ্যমে তারা এ সংকট আড়াল করার চেষ্টা করছে।’

বিএনপির পক্ষ থেকে করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় কতগুলো সুপারিশ তুলে ধরেন মির্জা ফখরুল।

তিনি বলেন, ‘প্রয়োজনে সারাদেশে এলাকাভিত্তিক কঠোর লকডাউন ঘোষণা করে সংক্রমণ প্রতিরোধে ব্যবস্থা নিতে হবে। চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, সাংবাদিক ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের পর্যাপ্ত মানসম্মত স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। প্রত্যেক জেলায় করোনা

ভাইরাস শনাক্তকরণ ও চিকিৎসা সেবা সম্প্রসারিত করতে হবে। অভাবগ্রস্ত পরিবারগুলোর কাছে রেশন কার্ডের মাধ্যমে চাল, ডাল, তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী বিতরণের ব্যবস্থা করতে হবে। অর্থনীতির চালিকা শক্তি গার্মেন্টস কর্মী ও শ্রমিক শ্রেণির মানুষ সবচেয়ে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। তাদের আর্থিক সুবিধা ও সুচিকিৎসা দিতে হবে। সরকারি ত্রাণ ও অর্থ বিতরণে সেনাবাহিনীকে দায়িত্ব দিলে তা সঠিকভাবে পালন হবে। দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীও এতে উপকৃত হবে। এখানে একটি কথা উল্লেখ করতে চাই, সরকারি দলের কিছু নেতা ও বিভিন্ন সংস্থা বিএনপির জনপ্রতিনিধি লুটপাটে জড়িত বলে মিথ্যা প্রচারণা চালানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে। অথচ এসব নির্বাচনে বিএনপি কাউকে মনোনয়নই দেয়নি। আক্রান্ত ও মৃতের সঠিক সংখ্যা উপস্থাপন করতে হবে। তথ্য লুকিয়ে মিথ্যে সাফল্য দেখানোর প্রবণতা জনগণের জন্য ভয়াবহ বিপদ ডেকে আনতে পারে।’

 

Next Post

নীলফামারীতে নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল বিক্রির ধুম চলছে ।

শনি জুন ১৩ , ২০২০
নীলফামারী প্রতিনিধিঃ মৌসুম শুরুর আগে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার হাট-বাজারে আগাম বেচা-কেনা চলছে নিষিদ্ধ কারেন্ট জালের। কোনোভাবেই বন্ধ হচ্ছে না এ ব্যবসা। এ জাল দিয়ে নিধন করা হচ্ছে দেশি প্রজাতির সব ধরনের ও কার্প জাতীয় মাছের পোনা। ফলে উপজেলার বিভিন্ন নদ-নদী সহ তিস্তা চরাঞ্চলে নানান প্রজাতির মাছের বংশ বিপন্নতার মধ্যে পড়ার […]

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links