আভা ডেস্কঃ ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের কারণে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে অচলাবস্থার শঙ্কা উড়িয়ে দিয়েছে রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান রোসাটম।
তারা জানিয়েছে, ইউক্রেন ইস্যুতে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণকাজে কোনো ধরনের প্রভাব পড়বে না। নির্ধারিত সময়েই শেষ হবে প্রকল্পের কাজ।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করছে রোসাটম। সংস্থাটি মঙ্গলবার এক বার্তায় বলেছে, ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের প্রতিশ্রুতি ও কাজের সময়সূচিতে কোনো পরিবর্তন হবে না।’
সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী বছরই এই পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট চালুর কথা রয়েছে। এটি দেশের প্রথম পারমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র, যা রাশিয়ার আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় নির্মাণ হচ্ছে।
প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হচ্ছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অধীনে। মন্ত্রণালয় বলছে, দ্রুতগতিতে অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ চলছে। গত বছরের অক্টোবরে স্থাপন করা হয়েছে বিদ্যুৎকেন্দ্রের মূল অংশ রিঅ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল বা পরমাণু চুল্লি।
সরকারের লক্ষ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে। আর দ্বিতীয় ইউনিট চালু হবে ২০২৪ সালে।
সামরিক অভিযানের কারণে রাশিয়ার বেশ কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংকের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্র। এর ফলে রাশিয়া আর্থিকভাবে বেশ চাপে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকে।
রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণে বিনিয়োগ রাশিয়ার। ফলে ইউক্রেনে অভিযান দীর্ঘমেয়াদি হলে তার প্রভাব বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণের ওপরও পড়তে পারে- এমন শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে খরচ হচ্ছে ১ লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা। এর ৯০ শতাংশই ঋণ দিচ্ছে রাশিয়া। ঋণের বড় অংশ আসছে দেশটির ভিবি ব্যাংক থেকে। রাশিয়ার যে প্রতিষ্ঠানগুলো পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার মধ্যে পড়েছে, তার মধ্যে ভিবি ব্যাংকও রয়েছে।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় বলছে, তারাও সার্বিক পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান বলেন, ‘পুরো বিষয়টি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দেখছে। এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে চাচ্ছি না। এখানে ন্যাশনাল স্ট্যান্ডের ব্যাপার আছে।’
তিনি বলেন, ‘সারা বিশ্বই তো এখন ওলটপালট। আমরাও এর বাইরে নই। তবে স্থানীয় পর্যায় থেকে আমার কথা বলা ঠিক হবে না।’
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব ও রাষ্ট্রদূত ওয়ালিউর রহমান বলেন, ‘রাশিয়া এখন একটা যুদ্ধে লিপ্ত আছে, তারা ইউক্রেনকে আক্রমণ করেছে। কাজেই সাধারণ ব্যবসা-বাণিজ্য এবং বিশেষ করে পশ্চিমা দেশগুলো অবরোধ আরোপ করেছে। ব্যাসিক্যালি কয়েকটি দেশ ছাড়া সারা পৃথিবী স্যাংশন দিয়েছে। ইউরোপ এবং আমেরিকা ন্যাটো অ্যালাইস ইনক্লুডিং জাপান, অস্ট্রেলিয়া, সাউথ কোরিয়াও এর মধ্যে আছে।
‘কাজেই এ ক্ষেত্রে আমার ধারণা, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র যে গতিতে চলছিল, অ্যাজ অ্যা অ্যানালিস্ট, এ ব্যাপারে আমি স্বাভাবিকভাবে উদ্বিগ্ন। আমি মনে করি যে কিছুটা (কাজ) বাধাগ্রস্ত হবে।’