রাজশাহীতে পুলিশ সদস্যকে অপহরণ, ছিনতাই ও নির্যাতনের অপরাধে আটক-৪

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ রাজশাহীতে পুলিশ সদস্যকে অপহরণ পূর্বক নির্যাতন এবং ছিনতাই এর ঘটনায় চক্রের ৪ জন চিহ্নিত চোর ও ছিনতাইকারীকে আটক করা হয়েছে।

৯ এপ্রিল (রোববার) গভির রাতে অভিযান করে চক্রের ৪ জনকে আটক করেন মতিহার থানা পুলিশ।

অপহরণের শিকার পুলিশ সদস্য হলেন, দাঙ্গা দমন বিভাগে, আরএমপি পুলিশ লাইনের জয়ন্তু কুমার।

আটক অপহরণ চক্রের চার সদস্য হলেন, ১. মোঃ পলাশ কবির (২৫)। সে নগরীর কাশিয়াডাঙ্গা থানাধীন হড়গ্রাম বাজার এলাকার মৃত সুরে জামালের ছেলে। ২. মোঃ সাগর ইসলাম ওরফে ইমন (২৯)।  সে মতিহার থানাধীন সোরাফানের মোড় আমবাগান এলাকার মোঃ সামাদ মন্ডলের ছেলে। ৩. মোঃ রকি (৩৫)। সে বোয়ালিয়া থানাধীন শিরোইল কলোনী দোসর মন্ডলের মোড় এলাকার মোঃ আব্দুর রহমানের ছেলে ও একই থানার মৃত ইসলাম শেখের ছেলে ৪. মো:  সোহেল (৪০)।

বিষয়টি নিশ্চিত করেন মতিহার থানা অফিসার ইনচার্জ হাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, আরএমপি পুলিশ লাইনের দাঙ্গা দমন বিভাগে কর্মরত এক পুলিশ সদস্যকে অপহরণ ও নির্যাতন পূর্বক ছিনতাইয়ের ঘটনায় থানায় মামলা হয়। এ ঘটনায় ৪ জন পেশাদার চোর ও ছিনতাইকারীকে আটক করা হয়েছে। আটকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

অভিযান পরিচালনা করা এস আই গোলাম মোস্তফা বলেন, গত বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) নগরীর রাজপাড়া থানাধীন রেঞ্জ ডিআইজি অফিসের সামনে থেকে বাজারে আসার জন্য একটি অটো রিক্সায় উঠেন। ওই সময় মুখে মাস্ক পরিহিত দুইজন যুবক অটোতে ছিলো। ৩/৪ মিনিটের মধ্যে মাস্ক পরিহিত দুইজন যুবকের মধ্যে একজন পুলিশ সদস্যের মুখে রুমাল ধরলে তিনি তাৎক্ষনিক জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। এদিন ইফতারের আগে জ্ঞান ফিরে দেখেন তিনি একটি বাসার মেঝেতে পড়ে আছে। পাশে অজ্ঞাতনামা কয়েকজন তাকে বলে যা আছে বের করে দে। ভয়ে তিনি তার কাছের নগদ ৩৫০০/-টাকা দেন। এসময় ১৫ হাজার টাকা মূল্যের ২টি রূপার আংটি ও ১টি স্বর্ণের আংটি ছিনিয়ে নেয় অপহরনকারীরা। এ সময়  তাকে মারধর করে এবং আরও টাকা দাবি করে। ওই সময় পুলিশ সদস্যদের কাছে রক্ষিত ডাচ্ বাংলা ব্যাংকের এটিএম কার্ড কেড়ে নেয় এবং পিন নম্বর চায়। নম্বর না দেওয়ায় তাকে ব্যাপক মারধর করে। নিরুপায় হয়ে তিনি তার কার্ডের পিন নম্বর বলে দেন। পিন নম্বর পেয়ে উদয়, পলাশ ও রকি মিলে মতিহার থানাধীন তালাইমারী ডাচ্ বাংলা ব্যাংকের এটিএম বুথে ঢুকে কার্ড থেকে ৮ হাজার টাকা উত্তোলন করে। অতিরিক্ত মারধরের কারণে পুলিশ সদস্য জয়ন্তু কুমার পূণরায় জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। তাকে জ্ঞান ফেরানোর জন্য ছিনতাইকারীরা সিগারেটের আগুন দিয়ে হাতে ও পায়ে ছ্যাক দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। এদিন সন্ধ্যার পর ছিনতাইকারীরা নিজেদের বাঁচানোর জন্য ওই পুলিশ সদস্যকে নিয়ে মতিহার থানাধীন রেডিও (বেতার) সেন্টারের মাঠে বাগানে ভেতর নিয়ে ফেলে রাখে। এক সময় জ্ঞান ফিরলে তিনি উঠে দাড়ালে তাকে পলাশ, উদয় পাওয়ার হাউজ পাড়া এলাকার কুখ্যাত চোর ও ছিনতাইকারী জাহেদ আলীর ছেলে রুমেল তাকে মারধর করতে থাকে। ওই সময় আশে পাশে বসতির বসবাসরত ও মোটরশ্রমিকের কাজে জড়িত লোকজন এগিয়ে আসলে অটো চোর বলে চিৎকার করে অপহরণকারী ও ছিনতাইকারীরা। এ সময় জনতা পুলিশকে খবর দেওয়ার জন্য ৯৯৯-এ ফোন দিলে ছিনতাইকারীরা পালিয়ে যায়। বিষয়টি লোকমুখে শুনে মতিহার থানা পুলিশের টহল দল ঘটনাস্থলে গিয়ে আহত পুলিশ সদস্যকে উদ্ধার করে। এ ব্যপারে ভুক্তভোগী পুলিশ সদস্য বাদী হয়ে মতিহার থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

থানা সুত্রে আরও জানা যায়,  আসামীরা সংঘবদ্ধ চোর ও ভয়ংকর ছিনতাইকারী চক্র। পুরো রাজশাহীজুড়ে তাদের নেটওয়ার্ক রয়েছে। এদের লিডার পাওয়ার হাউজপাড়ার জাহেদ আলির ছেলে রুমেল। তাদের নির্দিষ্ট আয়-রোজগারের কোন উৎস নাই। তারা সকলেই মাদক সেবন করে। মাদক সেবনের টাকার জন্য অপহরণ, চুরি, ছিনতাই এমন কোন অপকর্ম নেই যা তারা করে না। পলাতক ও প্রধান আসামী রুমেলকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

রবিবার সকালে গ্রেফতারকৃতদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে ।

Next Post

পানি না পেয়ে আবারও কৃষকের আত্মহত্যার চেষ্টা

মঙ্গল এপ্রিল ১১ , ২০২৩
নিজস্ব প্রতিনিধি:  রাজশাহীতে বোরো ধানের খেতে পানি না পেয়ে আবারও এক সাঁওতাল কৃষক বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। অসুস্থ অবস্থায় তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি হাসপাতালের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ঐ কৃষকের নাম মুকুল সরেন (৩৫)। গোদাগাড়ী উপজেলার দেওপাড়া ইউনিয়নের বর্ষাপাড়া গ্রামে তাঁর বাড়ি। বাবার […]

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links