আভা ডেস্কঃ ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগের প্রতিবাদ জানিয়ে ও দোষীদের বিচার দাবিতে ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করেছেন শিক্ষকরা।
সোমবার কোনও শিক্ষক কলেজে ক্লাস নিতে আসেনি। শিক্ষার্থীরাও আসেনি ক্লাস করতে। ফলে গোটা ক্যাম্পাস ছিল ফাঁকা।
এর আগে রোববার রাতে শিক্ষকদের এক সভায় ৪৮ ঘণ্টা লাগাতার ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের কর্মসূচি ঘোষণা দেন তারা।
ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শিক্ষক ডা. মনির হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা কাদের ইন্ধনে একজন ভালো শিক্ষক ও চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছে, তা তদন্ত কমিটিকে বের করতে হবে। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে হুকুমদাতাদের চিহ্নিত করতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তা না হলে লাগাতার আন্দোলন চলবে। আমরা চাই যৌন হয়রানি নিয়ে ধূম্রজাল পরিস্কার হোক।’
ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করলেও হাসপাতালের চিকিৎসা কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এর আগে গত বুধবার দুপুরে ময়মনসিংহ মেডিক্যালের কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে মানববন্ধনে দাঁড়িয়েছিল অন্তত ৩০ জন শিক্ষার্থী।
তখন শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছিল, অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ ম-৫৩ ব্যাচের শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানি করেছেন। তার কারণে ওই শিক্ষার্থী কলেজ ছেড়ে চলে গেছেন। এ ছাড়া তিনি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন শিক্ষার্থীদের কু-প্রস্তাব দিয়ে আসছেন।
তাৎক্ষণিক বিষয়টি গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে পাল্টা ক্ষোভ ছড়ায় ওই ব্যাচের সাধারণ শিক্ষার্থী এবং কলেজের শিক্ষকসহ হাসপাতালের চিকিৎসকদের মাঝে।
তাদের দাবি, যৌন হয়রানির শিকার ওই শিক্ষার্থীর পরিচয় কেউ জানেন না। এগুলো শিক্ষকের বিরুদ্ধে চক্রান্ত। কারও ইশারায় বানোয়াট অভিযোগ তোলা হয়েছে।
এ বিষয়ে অধ্যক্ষ চিত্ত রঞ্জন দেবনাথের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন ম-৫৩ ব্যাচের সব শিক্ষার্থী।
স্মারকলিপিতে শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, ‘বুধবারের মানববন্ধনে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীদের কেউ ম-৫৩ ব্যাচের ছিল না। তাদের এ বিষয়ে জানানোও হয়নি।’
এমন দাবির পর মানববন্ধনে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ হয়। অনেকেই মানববন্ধনে অংশ নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জানান, সেদিন তাদের জোর করে মানববন্ধনে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। না গেলে নানা রকম সমস্যা হবে বলে হুমকি দেয়া হয়। কে তাদের বাধ্য করেছিল তা বলেননি কোনো শিক্ষার্থী।
এ ঘটনায় গাইনী বিভাগের অধ্যাপক তায়েবা তানজিন মির্জাকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা করা হয়েছ। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল হান্নান মিয়া ও শিশু সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক লোকমান হোসেন। পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।