বিএনপি নেতারাই সহিংসতা ছাড়া স্বস্তি পায় না, হাছান মাহমুদ ।

আভা ডেস্কঃ বিএনপি নেতারাই সহিংসতা ছাড়া স্বস্তি পায় না বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।

বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ‘শেখ হাসিনা ও ঘুরে দাঁড়ানোর বাংলাদেশ’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।

‘আওয়ামী লীগ নেতারা সহিংসতা ছাড়া স্বস্তি পায় না’- সম্প্রতি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এ মন্তব্যের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, এটা বিএনপি নেতাদের বেলায় প্রযোজ্য, বিএনপি নেতারাই সহিংসতা ছাড়া স্বস্তি পায় না। তিনি (মির্জা ফখরুল) আসলে সম্ভবত এটাই বলতে চেয়েছিলেন, ভুল করে অন্য কথা বলেছেন।

তিনি বলেন, বিএনপির আন্দোলনের নামে যেভাবে পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করে মানুষ হত্যা করা হয়েছে, জীবন্ত মানুষের গায়ে পেট্রল ঢেলে পুড়িয়ে, ঘুমিয়ে থাকা ট্রাকচালক, বিশ্ব-ইজতেমা ফেরত মুসল্লি এমনকি স্কুলছাত্রের ওপর পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করে তাদের হত্যা করা হয়েছে, সমসাময়িক বিশ্বে কোনো রাজনৈতিক দল রাজনীতির নামে কিংবা নিজেদের দাবি বাস্তবায়নে এ ধরনের কাজ করেছে বলে আমার জানা নেই।

হাছান মাহমুদ বলেন, গত সাড়ে ১১ বছর ধরে তাদের কোনো সমাবেশ হলেই যেভাবে সেই সমাবেশের আড়ালে সহিংসতা করা হয়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলা পরিচালনা করা হয়, এতেই প্রমাণিত হয়- তারাই সহিংসতা ছাড়া স্বস্তি পায় না; তাই এটি বিএনপির বেলাতেই প্রযোজ্য।

তথ্যমন্ত্রী এ সময় ‘শেখ হাসিনা ও ঘুরে দাঁড়ানোর বাংলাদেশ’ গ্রন্থের সম্পাদক শামীম আহমেদকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, বইটিতে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভানেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঘটা উন্নয়নের বিষয়গুলো ফুটে উঠেছে। প্রকৃতপক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ শুধু ঘুরে দাঁড়িয়েছে তা নয়, তার জাদুকরি নেতৃত্বে বাংলাদেশ পৃথিবীর সামনে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

ড. হাছান বলেন, আজকে আমরা শোকের মাস অতিক্রম করছি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশকে একটি উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখেছিলেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে সাড়ে তিন বছরের মাথায় হত্যা করার কারণে, তিনি সেই স্বপ্নের বাস্তবায়ন করে যেতে পারেননি। আজকে তার কন্যা যার কণ্ঠে বঙ্গবন্ধুর কণ্ঠ প্রতিধ্বনিত হয়, তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ একটি উন্নত রাষ্ট্রে রূপান্তরের স্বপ্নপূরণের পথে অদম্য গতিতে এগিয়ে চলছে।

দুঃখের বিষয় দেশের এই উন্নয়ন কেউ কেউ দেখেও না দেখার ভান করে, চোখ এবং কান থাকা সত্ত্বেও অন্ধ এবং বধিরের মতো আচরণ করে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা আশা করব- তারা সেটি থেকে বেরিয়ে আসবে এবং আমরা সবাই সম্মিলিতভাবে আমাদের দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাব।

তথ্যমন্ত্রী সোশ্যাল মিডিয়া বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সার্ভিস প্রোভাইডাররা তাদের প্লাটফর্ম অপব্যবহারের দায় এড়াতে পারে না বলেও মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, স্যোশাল মিডিয়া পৃথিবীর বাস্তবতা। মানুষ এখন স্যোশাল মিডিয়া যত ব্যবহার করে বা দেখে, অন্য মিডিয়ার ক্ষেত্রে তত সময় ব্যয় করে না। আমরা দেখতে পাচ্ছি সময়ে সময়ে এই স্যোশাল মিডিয়া ব্যবহার করে আমাদের দেশে এবং অন্যান্য দেশেও অস্থিরতা তৈরি করা হয়। এটি ব্যবহার করে চরিত্রহনন ও নানা ধরনের মিথ্যা সংবাদও পরিবেশন করা হয়। কোনো পত্রিকা বা টেলিভিশনের মাধ্যমে যদি এ ধরনের কাজ করা হয়, আমাদের দেশের আইন অনুযায়ী সেই পত্রিকা বা টেলিভিশন কর্তৃপক্ষ দায়ী হয়, তাহলে এ ধরনের কাজের জন্য স্যোশাল মিডিয়া কর্তৃপক্ষ কেন দায়ী হবে না?

স্যোশাল মিডিয়া সার্ভিস যারা দিচ্ছে, তাদের অবশ্যই দায়িত্ব আছে বলেও জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, তাদের সুবিধা ব্যবহার করে যদি কেউ অনৈতিক, দেশ-সমাজ-রাষ্ট্রবিরোধী এবং চরিত্রহননকারী কাজ করে, তাহলে তো নিশ্চয়ই যিনি সার্ভিস দিচ্ছেন তার দায় থাকে। সুতরাং সেই দায় তারা এড়াতে পারে না। আমার দেশ থেকে তারা কোটি কোটি টাকার ব্যবসা করবে, কর দেবে না, আবার এ সুবিধা ব্যবহার করে আমার দেশে এবং বিদেশ থেকে অস্থিরতা তৈরি করার চেষ্টা করা হবে, সেজন্য তারা দায়ী থাকবে না- এটি তো হতে পারে না।

ড. হাছান জানান, এ সমস্ত কারণেই বিভিন্ন দেশে আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। আমেরিকা, সিঙ্গাপুর, যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের অনেক দেশ এবং ভারতেও নতুন আইন করা হয়েছে এবং হচ্ছে। সুতরাং আমাদের দেশেও অবশ্যই এটি করতে হবে।

আমাদের দেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ৩৮ ধারায় স্যোশাল মিডিয়ার সার্ভিস প্রোভাইডারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ রয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন, চরিত্রহনন, সমাজে অস্থিরতা বা সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা তৈরি- এ ধরনের অপরাধমূলক কাজে স্যোশাল মিডিয়ার সার্ভিস ব্যবহার করা হলে সেই সার্ভিস প্রোভাইডারদের জরিমানাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এছাড়াও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় প্রয়োজনে আরও একটি নতুন আইন করার বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছে এবং সেই লক্ষ্যে কাজ করছে বলেও জানান ড. হাছান।

 

Next Post

দলের খারাপ সময়ে বহু নেতা সেটিংয়ে চলে যান, সোহেল ।

শুক্র আগস্ট ৭ , ২০২০
আভা ডেস্কঃ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রয়াত সভাপতি শফিউল বারী বাবুর স্মরণ সভায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবীব উন নবী খান সোহেল বলেছেন, দলের খারাপ সময়ে বহু নেতা সেটিংয়ে চলে যান। বাবুরা সেটিংয়ে যাননি। কারণ সে ছিল দলের প্রতি ডেডিকেটেড। রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলন’ নামক সংগঠনের উদ্যোগে […]

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links