বাংলাদেশী হজ্বযাত্রীর কোটা পুরন হচ্ছে না।

আভা ডেস্ক : প্রতিবছর হজযাত্রীর কোটা বাড়ানোর জন্য বিশৃঙ্খলা দেখা দিলেও এবার বাংলাদেশি হজযাত্রীর কোটাই পুরণ হচ্ছে না। কোটা নিয়ে প্রতিবার এজেন্সিগুলো হৈ চৈ করলেও এবার নীরব। সরকার সময় বাড়ানোর পরও শেষ সময়ে এজেন্সিগুলো হজযাত্রীর ভিসার আবেদনই জমা দেননি। ভিসার আবেদন না করায় শেষ পর্যন্ত মোট ৭২৭ হজযাত্রী যাচ্ছেন না হজে। ফলে এবার বাংলাদেশের হজযাত্রীর কোটা পুরণ হচ্ছে না।

এজন্য কারা দায়ী, হজযাত্রী নাকি হজ এজেন্সি তা খতিয়ে দেখবে সরকার। হজযাত্রী পাঠানো শেষ হলে বিষয়টি অনুসন্ধান শুরু করবে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৪ জন আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৭১৩ জন হজযাত্রী সর্বশেষ সময় পর্যন্ত ভিসার আবেদন জমা দেননি। ফলে তারা এবার হজে যাচ্ছেন না বলেই ধরে নিচ্ছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। আসলে কী কারণে এত বিপুল সংখ্যক হজযাত্রী যাচ্ছেন না তা এখনই চিহ্নিত করা যায়নি। নিজেরা যাচ্ছেন না নাকি এজেন্সিগুলোর গাফলতি আছে তা হজের পর খতিয়ে দেখবে সরকার।

শেষ পর্যন্ত হজযাত্রীর কোটা পুরণ না হওয়ায় ভবিষ্যতে কোটা বাড়ানোর যে আবেদন এজেন্সিগুলোর তা প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে। এতে দেশের ভাবমূর্তিও ক্ষুন্ন হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

শেষ পর্যন্ত কতজনের ভিসা হয়নি জানতে চাইলে হজ অফিসের পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম জানান, ৭২৭ জন হজযাত্রীর ভিসার আবেদন করা হয়নি। আমরা ধরে নিচ্ছি এই ৭২৭ জন হজে যাচ্ছেন না।

হজে যাচ্ছেন না, নাকি তারা এজেন্সিগুলোর কারণে যেতে পারছেন না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যেতে পারছেন না বললে ভুল হবে কারণ আমরা তো প্রস্তুত আছি, বিমানও রেডি আছে। কিন্তু হজযাত্রী যদি ভিসার আবেদন না করেন তাহলে যাবেন কি করে? তারা নিজেরা ইচ্ছা করে যাচ্ছেন না নাকি এজেন্সিগুলোর কারণে তা এখনই বলা যাচ্ছে না। হজযাত্রী পাঠানো শেষ হলে আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখবো।’

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ভিসার আবেদনের সময় বাড়িয়ে, এমনকি ১৫ শতাংশ রিপ্লেসমেন্টের পরও ৭২৭ হজযাত্রী হজে যাচ্ছেন না। তার মধ্যে বেসরকারি ব্যবস্থাপনার অনেক হজযাত্রী অসুস্থতাসহ নানা কারণে যেতে পারছেন না। তবে কারো কারো ক্ষেত্রে হজ এজেন্সিগুলোর গাফলতিও রয়েছে। সরকারি ব্যবস্থাপনায়ও অনেক হজযাত্রী ভিসার আবেদন জমা দেননি। এই ৭২৭ জন হজযাত্রীসহ বাংলাদেশের এক হাজারের বেশি হজযাত্রীর কোটা অপূর্ণ থাকছে। অথচ কোটা পুরণ করতে সরকার ভিসার আবেদনের সময় বাড়ায় এবং ১৫ শতাংশ রিপ্লেসমেন্টের সুযোগ দেওয়া হয় এজেন্সিগুলোকে। কিন্তু তারপরও বাংলাদেশের কোটা পুরণ হয়নি।

অভিযোগ আছে, বেশ কিছু এজেন্সির গ্রুপ লিডারদের কারণে অনেক হজযাত্রী এবার হজে যেতে পারছেন না। হজযাত্রীরা টাকা পরিশোধ করলেও গ্রুপ লিডাররা সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধ করেননি হজ এজেন্সিগুলোকে। ফলে তারা টাকা না পেয়ে অনেক হজযাত্রীর ভিসার আবেদন করেনি। এ কারণে এবার অনেক হজযাত্রী হজে যেতে পারছেন না। শুধু তাই নয়, অনেক হজ এজেন্সি প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়ে কম টাকা নিয়ে হজযাত্রীর নিবন্ধন করে। কিন্তু পরে বেশি টাকা দাবি করার কারণে সেই হজযাত্রী টাকা পরিশোধ না করায় এজেন্সিগুলো ওই হজযাত্রীর ভিসার আবেদন করেনি। এমন ঘটনাও রয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এত বিপুল সংখ্যক হজযাত্রী না যাওয়ার জন্য জড়িতদের খোজা হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে হজ অফিসের পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা এখনো এ বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করিনি। আমরা এখন হজযাত্রী পাঠানো নিয়ে ব্যস্ত। হজযাত্রী পাঠানো শেষ হলে বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখবো।’

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, হজযাত্রীর ভিসাসহ নানা সঙ্কটের কারণে এ পর্যন্ত অনেক হজ ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী হজে যাওয়ার অপেক্ষায় আছেন প্রায় ২৩ হাজার হজযাত্রী। তাদের ভিসা, টিকিট সবকিছু রেডি আছে। কয়েকদিনের মধ্যে পর্যায়ক্রমে তাদের সৌদি আরবে পৌঁছানো হবে।

এ বছর বাংলাদেশ থেকে মোট হজযাত্রী কোটা নির্ধারিত হয় এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন। বিগত বছরগুলোতে সরকারি কোটা ১০ হাজার রাখলেও পর্যাপ্ত হজযাত্রী না পাওয়ায় শেষের দিকে কিছু হজযাত্রী বেসরকারি কোটায় দিয়ে দিতে হয়। এতে বেশ ঝামেলা দেখা দেয়। এ কারণে এ বছর আগেভাগেই সরকারি কোটা কমিয়ে সাত হাজার ১৯৮ জন করা হয়। আর বেসরকারি কোটা দেওয়া হয় এক লাখ ২০ হাজার হজযাত্রী। কিন্তু ‘চূড়ান্ত নিবন্ধনের পর দেখা যায় এ কোটাও অপূর্ণ থেকে গেছে।

সরকারি ব্যবস্থাপনায় মোট ছয় হাজার ৭৯৮ জন নিবন্ধন করেন। এতে চারশো কোটা খালি থেকে যায়। আবার ৭৯৮ জন হজযাত্রীর মধ্যে ভিসার আবেদন না করায় হজে যাচ্ছেন না ১৪ জন। আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় সবার নিবন্ধন হলেও শেষ মুহূর্তে ভিসার আবেদন জমা না দেওয়ায় ৭১৩ জন হজযাত্রী হজে যাচ্ছেন না।

রাইজিংবিডি

Next Post

চীনের পশ্চিমের নিংশিয়া অঞ্চলে নতুন মসজিদ ভাংগায় বিক্ষোভ।

শুক্র আগস্ট ১০ , ২০১৮
আভা ডেস্ক: চীনের পশ্চিমের নিংশিয়া অঞ্চলে একটি বিশাল নতুন মসজিদ ভাঙ্গার সরকারি পরিকল্পনার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছে হুই সম্প্রদায়ের মুসলমানরা। ইসলাম ধর্ম পালনে নিষেধাজ্ঞা আরোপের অংশ হিসেবে সরকার এই পরিকল্পনা করছে বলে জানিযেছে রয়টার্স। দাপ্তরিকভাবে চীন ধর্মীয় স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দিলেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশটিতে মুসলমান অঞ্চলগুলোতে মৌলবাদের অজুহাতে ধর্ম পালনের ব্যাপারে কঠোরতা […]

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links