এনামুল হক রাশেদী, চট্টগ্রাম প্রতিনিধি। চলতি বর্ষার শুরুতেই চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী উপজেলার গন্ডামারা ইউনিয়নের শত শহস্র মানুষ পানিবন্দি হয়ে অবর্ননীয় দু:খ-দুর্দশায় দিনাতিপাত করছে। প্রাকৃতিক বড় কোন দুরযোগ ছাড়া এ এলাকার মানুষ কস্মিনকালেও এমন দুর্ভোগের স্বিকার হয়নি।গন্ডামারা-বড়ঘোনা এলাকায় প্রতিষ্টিতব্য এসএস পাওয়ার প্ল্যান্টের অপরিকল্পিত বালি ভরাটের কারনেই মুলত: জনগনের এ দুর্ভোগ।
ইউনিয়নের ৩,৪,৫,৬ ও ৯ নং ওয়ার্ডে হাজার হাজার একর ফসলি জমি চাষাবাদে নিদারুন অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে। এসএস পাওয়ার প্ল্যান্টের অপরিকল্পিত বালি ভরাটের কারনে এমন অনিয়ম ও দুর্দশার সৃষ্টি হলেও দেখ-ভালের যেন কেউ নেই। ৩ নং ওয়ার্ডের গন্ডামারা ব্রীজের পশ্চিমাংশে কাটাখালী এলাকায় ভরাটকৃত বালি বৃষ্টির পানি চাপে ভেঙ্গে লালপুরি বাড়ির শত শত ঘরবাড়িতে ঢুকে গেছে পানি। স্রোতে ভেসে আসা বালির নিচে তলিয়ে গেছে আবাদী জমি, চলাচলের রাস্তা, ব্যবহারের পুকুর, নালা-ডোবা এমনকি বাড়ি-ঘরের উঠানও। প্রবল বৃষ্টি মাথায় নিয়ে শত শত নারী-পুরুষ, বৃদ্ধ-যুবক সারাদিন প্রতিরোধ বাঁধ তৈরী করতে লড়াই করেও সম্ভব হয়নি বাড়ি-ঘরকে পানি থেকে রক্ষা করা। বৃষ্টির পানি জলকদর খালে নামার সমস্ত ড্রেনগুলো ভরাট হয়েই মুলত: সৃষ্টি হয়েছে এ জলাবদ্ধতার। একই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে পশ্চিম বড়ঘোনার রহমানিয়া রোডের মাথায় নতুন মার্কেট সংলগ্ন চারপাশের এলাকা ও ১ নং ওয়ার্ডের পশ্চিম গন্ডামারায়ও।
খাটখালী এলাকার আলেকদিয়ায় ভরাটকৃত বালিতে প্রায় ভরাট হতে চলেছে ইউনিয়নের পশ্চিমাংশের পানি চলাচলের একমাত্র খালটিও। রজনীবাগানে ভরাটকৃত বালির স্তুপ ভেঙ্গে তলিয়ে গেছে ইউনিয়নের সকালবাজার-খাটকালী যাতায়তের প্রধান সড়কটিও। ফলে খাটকালী, চকরিয়াখালী, পশ্চিম বড়ঘোনার আশকর আলী বাড়ি, ছাদেক আলী সিকদার বাড়ির শত শত মানুষের দৈনন্দিন জিবন দুর্বিসহ হয়ে পড়েছে। শুধু তা নয়, অত্র এলাকার শত শত আবাদী জমি স্থায়ীভাবে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে ডোবায় পরিনত হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, বর্ষার শুরুতে এমন পরিস্থিতি হলে পুরো বর্ষা মৌসুমে এ এলাকার মানুষের জিবন-যাপন দুর্বিসহ হয়ে উঠবে।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ১ নং ওয়ার্ডের মেস্বার আলী নবী থেকে জানতে চাইলে তিনি বলেন পূর্বে যেসব জায়গা দিয়ে গন্ডামারা ইউনিয়নের পানি চলাচল করত, বর্তমানে সিংহভাগ জায়গা এস আলমের দখলে এবং পানি যাওয়ার পথ বন্ধ করে দেওয়ার কারণে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।। তিনি আরও বলেন চেয়ারম্যান কে অবগত করব এবং এস আলমের সাথে কথা বলে সংকট উত্তরনের চেষ্টা করব। লালপুরি বাড়ির শিক্ষক মোহাম্মদ হোছাইন জানান, সমগ্র এলাকাবাসীর সহযোগিতায় এস আলম কতৃপক্ষ অত্র এলাকায় কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্প গড়ে তোললেও নিজেদেরে স্বার্থসিদ্ধি হওয়ার পর এস আলম কতৃপক্ষ এলাকার মানুষের সমুহ ক্ষতির কোন তোয়াক্কা না করে বেনিয়াদের মত আচরন করছে, যা অত্যন্ত দু:খজনক।
উল্লেখ্য: বাঁশখালী গন্ডামারা ইউনিয়নে ১৩২০ মে;ও; ক্ষমতার এস এস পাওয়ার প্ল্যান্ট বৃহত্তম কয়লা ভিক্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ চলমান। কতৃপক্ষ এলাকার মানুষের স্বার্থ রক্ষা করে পরিকল্পিত ভাবে কাজ করলে প্রকল্পের বাহির জনবসতির আজ এমন ক্ষয়-ক্ষতি ও জনগনের দু:খ-দুর্দশার সৃষ্টি হতনা। স্থানীয় জনগনে দাবী করেছে, ঘন বর্ষা শুরু হওয়ার আগেই বালি ভরাটকৃত সকল স্থাপনায় শক্ত প্রাচির ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা করে স্থানীয় অধিবাসীদের ক্ষয়-ক্ষতি থেকে রক্ষা করা হউক, অন্যথায় নতুন করে জনরোষের সৃষ্টি হতে পারে। এলাকার সাধারণ মানুষ মানবিক বিপর্যয় থেকে পরিত্রাণ চায়। এ ব্যাপারে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার জনগন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের আন্তরিক ও সক্রিয় সহযোগিতা কামনা করেছে।