পশ্চিম রেলওয়ে প্রধান প্রকৌশলী দপ্তরে কমিশনে মিলে কাজ, দূর্নীতিবাজদের প্রাপ্তি পদোন্নতি

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ “যে যায় ল্কাকায় সেই হয় রাবন” প্রবাদটি যেন রাজশাহী পশ্চিম রেলওয়ে প্রধান প্রকৌশলী পদটির জন্যই প্রযোজ্য। এই পদে যিনি আসেন তিনিই জড়িয়ে পড়েন নানা অনিয়ম আর দূর্নীতিতে। অতি দূর্নীতির মাধ্যমে অল্প সময়ে বিপুল পরিমানে অর্থ হাতিয়ে আবার উর্ধতন মহলকে ম্যানেজও করেন তারা। পরে তারাই আবার পান গুরুত্বপূর্ণ পদ। বিভিন্ন সময়ে এই দপ্তরটিকে ঘিরে নানা অনিয়ম আর দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। কিন্তু দূর্নীতি বা অনিয়ম বন্ধ হয়নি। বরং পদ্ধতি বদল হয়ে দূর্দান্ত গতিতে চলছে দুর্নীতি। সাবেক প্রধান প্রকৌশলী রমজান আলীর বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম দূর্নীতির কথা উঠে আসে বিভিন্ন গণমাধ্যমে। তার দুর্নীতির তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া সুপারিশও করেছেন দুদক। এ অবস্থার মধ্যে তার পদোন্নতিও হয়েছে, তিনি রেলের শীর্ষ কর্তা ব্যক্তি। এরপর আল ফাত্তাহ মাসউদুর রহমানের অনিয়ম দুর্নীতি সংবাদ তো সবার জানা। এরপর সেই পদে আসেন প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম ফিরোজী। এবার তার বিরুদ্ধেও উঠেছে নানা অনিয়ম আর দুর্নীতির অভিযোগ।  তার ব্যালাষ্ট (পাথর) সরবরাহে অনিয়মের কমিশন গ্রহনসহ নানা অনিয়মের সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। এখন মনিরুল ইসলাম ফিরোজী ইজিবির নামে করছেন ভাওতাবাজি। কারসাজি করে পছন্দের ঠিকাদারকে দেওয়া হচ্ছে কমিশনভিত্তিক কাজ।

যোগদান করে একজন ঠিকাদারের কাছ থেকে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা ঘুষ নিয়েছেন। কোটি টাকার ফাইল পাসের নামে এই টাকা দিয়েই তিনি এই পদে অধিষ্ঠিত হয়েছিলেন। সাবেক ডিজি শামসুজ্জামানের আত্নীয় পরিচয়ে আফসার বিশ্বাস রেল অঙ্গনে বাগিয়ে নিয়েছেন অনেক কাজ৷ সেই কাজেও হয়েছে দূর্নীতি। এরপরও সেই দুর্নীতিবাজকে পাথর সরবরাহের কাজ দিয়েছেন বর্তমান প্রকৌশলী। এই সংবাদও বিভিন্ন পত্র পত্রিকার প্রকাশ হয়েছে।

তবে সম্প্রতি রেল মন্ত্রীর ভাতিজা পরিচয়ে অ্যাপোলো ও লাবণ্য নামে দুইজনকে একের পর এক ঠিকাদারি কাজ দিচ্ছেন তিনি। এদিকে পাকশির রাজা ও রবি নামে দুই সিন্ডিকেটে জিম্মি প্রকৌশলী।  কমিশনে গুটি কয়েকজন ঠিকাদার ঘুরে ফিরে কাজ করছেন। এতে বঞ্চিত হচ্ছেন প্রকৃত নিম্ন দরদাতা ঠিকাদাররা। সরকার হারাচ্ছে বিপুল পরিমানে রাজস্ব ও উন্নত মানের কাজ।

ওপেন টেন্ডার নামে গোপন ফাইল তৈরী, প্রকাশিত টেন্ডার অতি চালাকির সহিত পারচেজ করাসহ ইজিপি ও আরএফকিউতে শুধুমাত্র কমিশন বানিজ্য হচ্ছে কোটি কোটি টাকার। প্রতিটি কাজে প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম ফিরোজীর পক্ষে কাজ করেন টিএসও আরিফুল ইসলাম।  তিনি মুলত সকল কাগজপত্র এমনকি প্রধান প্রকৌশলীর কর্মকাণ্ডের নথিপত্র সংগ্রহ করে রাখেন। কোন ঠিকাদার কত পার্সেন্ট কমিশনে কাজ পাবেন তাও ঠিক করে দেন তিনি। দীর্ঘদিন যাবৎ তিনি দপ্তরটির বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন।

এদিকে প্রতিটি কাজে প্রধান প্রকৌশলী নেন ১০% কমিশন, বাকী ৫% কমিশন যায়, টিএসও, এও, পিএ সহ অন্যান্যদের পকেটে।

অভিযোগ আছে প্রধান প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম ফিরোজী সপ্তাহে একদিন অফিস করেন। তিনি কারো ফোন রিসিভ করেন না।

এ বিষয়ে কথা বলতে প্রধান প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম ফিরোজীর সরকারি নম্বরে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তাই তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

জানতে চাইলে টিএসও আরিফুল ইসলাম বলেন এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারবো না। স্যারের আদেশেই আমি সব কাজ করি।আমি কোন বক্তব্য দিতে পারবো না। আপনারা স্যারের সঙ্গে কথা বলেন।

উল্লেখ্য, রেলপথ পরিকল্পনা বিভাগ সূত্রে জানা যায়, রেলওয়ের মাঠ পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা কর্মকর্তাদের প্রায় ৮০ শতাংশই বিভিন্ন প্রকল্পে কাজ করছেন। বিশেষ করে ২০০৯ সালের পর থেকে রেলে ব্যাপক উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। ইতিমধ্যে ১৩টি বড় প্রকল্পের কাজ সমাপ্ত হয়েছে।

৩৫টি প্রকল্পে রেলওয়ের প্রকল্প পরিচালক (পিডি) রয়েছে ৩৫ জন। পাশাপাশি প্রতিটিতে রেলের প্রায় ১২ থেকে ১৫ জন কর্মকর্তা কাজ করছেন। রেলপথ যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ ও সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রেলের দু-অঞ্চলের (পূর্ব ও পশ্চিম) প্রধান প্রকৌশলীর দায়িত্ব সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

অথচ পূর্বাঞ্চল রেলের প্রধান প্রকৌশলী এবং  পশ্চিমাঞ্চল রেলের প্রধান প্রকৌশলী একাধিক প্রকল্পের পরিচালক (পিডি)। অভিযোগ রয়েছে, তারা রেলপথে নয়, সর্বোচ্চ নজরদারি করছেন প্রকল্পে। এই প্রকল্পে আছে অকল্পনীয় সুবিধা।

প্রসঙ্গত, এও সামাদ এর আগে জুয়া খেলার দায়ে রাজশাহী মহানগর ডিবি পুলিশের হাতে আটক হয়ে জেলেও গিয়েছিলেন। এরপর পরই তিনি হেড ক্লাক থেকে এও পদে পদোন্নতি পেয়ে যায়। অপরদিকে জনস্রোত আছে পিএ ইমরান মাদক আসক্ত, তার ড্রপ টেষ্টের দাবিও করেন অনেকে। ইমরান নিজেকে দপ্তরের সর্বসর্বা ভাবেন। ফাইল নিয়ে চিফের কাছে যাওয়ার জন্যও লাগে কমিশন।

Next Post

নারীর সম অধিকার নিশ্চিত হলেই দেশ উন্নত হবে- গোলাম মোহাম্মদ কাদের

মঙ্গল মার্চ ৮ , ২০২২
আভা ডেস্কঃ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা জনবন্ধু গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, নারী পুরুষের সম অধিকার নিশ্চিত হলেই দেশ যথার্থভাবে উন্নত হবে। তিনি বলেন, দেশে মোট জনগোষ্ঠির মধ্যে অর্ধেক নারী সমাজ যদি বৈষম্যের শিকার হয় তাহলে সার্বিক উন্নয়ন বাধাগ্রস্থ হবে। অথচ আমাদের দেশের নারী সমাজ সকল ক্ষেত্রে দক্ষতার […]

এই রকম আরও খবর

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links