পটুয়াখালীতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি, বিধ্বস্ত হয়েছে ১০ হাজার বাড়িঘর ।

আভা ডেস্কঃ ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে পটুয়াখালীতে ৫ লাখ পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিধ্বস্ত হয়েছে ১০ হাজার বাড়িঘর।

এখনও জেলায় হালকা ও মাঝারি বৃষ্টিপাত এবং দমকা বাতাস অব্যাহত রয়েছে। সাগর উত্তাল রয়েছে। স্থানীয় নদ-নদীতে পানি স্বাভাবিকের চেয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। চরাঞ্চলগুলোতে সৃষ্টি হয়েছে জলবদ্ধতা।

অরক্ষিত বেড়িবাঁধ দিয়ে জোয়ারের পানি প্রবেশ করায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রাঙ্গাবালী উপজেলার মাঝেরচর, চরআন্ডা, চরমোন্তাজ, চালিতাবুনিয়াসহ একাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

এ ছাড়াও জেলা শহরের একাধিক স্থানে জোয়ারের পানি প্রবেশ করে জলবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। বিদ্যুৎবিহীন রয়েছে একাধিক উপজেলা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে জলোচ্ছ্বাসের ফলে পটুয়াখালীর নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানিতে তলিয়ে গেছে বাদাম, ফেলন, বিভিন্ন শাক-সবজি, মরিচের ক্ষেত ও আউশের বীজতলা। বিভিন্ন এলাকায় কাঁচা ঘরবাড়িসহ গাছ এবং বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙ্গে পড়েছে। বেশকিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

পানির চাপে রাঙ্গাবালীর কোড়ালিয়া লঞ্চঘাটের পন্টুন ডুবে গেছে। উপজেলার চরলতা মৌডুবী চরআন্ডা কাউখালী ও চরকাশেমের বিভিন্ন পয়েন্টে ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ থেকে পানি প্রবেশ করে আবারও প্লাবিত হয়েছে প্রায় ১০টি গ্রামের ৭৫০টি ঘরবাড়ি ও বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ।

এ ছাড়া কলাপাড়া উপজেলার লালুয়াতে ৭ কিলোমিটার অংশে বেড়িবাঁধ না থাকায় সেখানে প্রায় ৫শ’ ঘরবাড়ি প্লাবিত হয়েছে। এ সব দুর্গত মানুষদেরকে নিরাপদ আশ্রয়ে রাখা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তাদেরকে বাড়িতে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এ পর্যন্ত জেলায় ৮ হাজার ১২১টি ঘড়বাড়ি আংশিক এবং ২ হাজার ৩৫৫টি ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। জেলায় ৪ হাজার ৫৫৩ হেক্টর জমির ফসল আক্রান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর।

ঘূর্ণিঝড়টি উপকূল অতিক্রম করার সময় নদীতে পানির উচ্চতা ছিল বিপদসীমার পৌনে ৬ ফুট উপরে। এর ফলে জেলায় প্রায় ১৭০ মিটার বেড়িবাঁধ সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে এবং প্রায় ১৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে।

জেলায় মোট ৫ হাজার ৭৫৪টি পুকুর এবং ৬২৩টি ঘের পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ৮ কোটি ৯৬ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে মৎস্য বিভাগ। জেলার ৪০ ভাগ ম্যানগ্রোভ বাগান এবং অন্যান্য ১০ ভাগ গাছপালার ক্ষতি হয়েছে বলে জানান বিভাগীয় বন কর্মকর্তা।

পটুয়াখালী অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. হেমায়েত উদ্দিন এ সব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এ দিকে রাঙ্গাবালী উপজেলা কোড়ালিয়া লঞ্চঘাটের পল্টুন পানির নিচে তলিয়ে গেলে চরম দুর্ভোগে পড়েছে ওই অঞ্চলের মানুষগুলো।

এ প্রসঙ্গে পটুয়াখালী নৌবন্দরের উপ-পরিচালক খাজা সাদিকুর রহমান জানান, পল্টুনটি উদ্ধারের জন্য উদ্ধারকারী জাহাজ পটুয়াখালীর উদ্দেশে রওনা হয়েছে। দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে উদ্ধার কাজ সম্পন্ন হবে বলে জানান তিনি।

রাঙ্গাবালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মাশফাকুর রহমান জানান, আম্পানের প্রভাবে অরক্ষিত বেড়িবাঁধ দিয়ে জোয়ারের পানি প্রবেশ করায় রাঙ্গাবালী উপজেলার মাঝের চর, চরআন্ডা, চরমোন্তাজ, চালিতাবুনিয়াসহ পাঁচটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দিদের নৌকা-ট্রলারযোগে অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হচ্ছে।

কলাপাড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোহাম্মদ ওয়ালিউজ্জামান জানান, ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে কলাপাড়া উপজেলার দেবপুর, করমজাতলা, নিজামপুর, জালালপুরসহ বিস্তীর্ণ এলাকার ৭-৮ ফুট বেড়িবাঁধ আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এ দিকে পটুয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী হাসানউজ্জামান জানান, মির্জাগঞ্জ উপজেলার রামপুর, সুন্দ্রা কালিকাপুর, গলাচিপার পানপট্টি, রতনদিতালতলি, তুলাতলিসহ বিস্তীর্ণ এলাকার অন্তত ৬ কিলোমিটার বাঁধ আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

 

 

Next Post

চীনের চিরশত্রু তাইওয়ান নিকট যুক্তরাষ্ট্রের হেভিওয়েট অস্ত্র বিক্রি ।

বৃহস্পতি মে ২১ , ২০২০
আভা ডেস্কঃ তাইওয়ানের কাছে ১৮ কোটি মার্কিন ডলারের হেভিওয়েট টর্পেডো অস্ত্র বিক্রির অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। করোনাভাইরাস নিয়ে চীন-যুক্তরাষ্ট্র বিরোধ যখন তুঙ্গে, তখন সে আগুনে নতুন সলতে জোগানোর মতো কাজটা করল যুক্তরাষ্ট্র। চীন এমনিতে তাইওয়ানকে নিয়ে আগে থেকেই বিব্রত, টর্পেডো বিক্রির এই অনুমোদন দিয়ে বিতর্ক ও বিরোধে আরো ইন্ধন যোগাল ট্রাম্প […]

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links