নারীদের বঙ্গমাতার আদর্শ ধারণের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

আভা ডেস্কঃ নারী সমাজকে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের আদর্শ ধারণ করে ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত হয়ে মানুষের কল্যাণে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেছেন, শুধু চাওয়া-পাওয়া, ভোগ-বিলাসিতাই জীবন নয়; মানুষের জীবনে, মানুষের কল্যাণে কাজ করার অনেক সুযোগ আছে। আদর্শ নিয়ে চললে মানুষের জন্য অনেক অবদান রাখা যেতে পারে।

সোমবার বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯২তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন এবং ‘বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব পদক-২০২২ প্রদান’ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানে নিজ সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন সরকারপ্রধান।

গোপালগঞ্জ প্রান্ত থেকে যুক্ত ছিলেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) শাহিদা সুলতানা। দুস্থ নারীদের স্বাবলম্বী হতে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে সেলাই মিশন বিতরণ করেন তিনি।

এ অনুষ্ঠানে রাজনীতি, অর্থনীতি, শিক্ষা, সমাজসেবা এবং স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে পাঁচ নারীকে বঙ্গমাতা পদক দেয়া হয়।

বঙ্গমাতার অবদানকে চিরস্মরণীয় করার লক্ষ্যে প্রতি বছর আটটি ক্ষেত্রে নারীদের অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ‘ক’ শ্রেণিভুক্ত সর্বোচ্চ জাতীয় পদক ‘বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব পদক’ দেয়া হয়ে থাকে।

অনুষ্ঠানে বঙ্গমাতার জীবনের নানা দিক তুলে ধরে তার মেয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তিনি কখনও সংসারিক ব্যাপারে আমার আব্বাকে কিছু চিন্তাই করতে দেননি। অর্থাৎ, যেহেতু আব্বা রাজনীতি করেন এবং রাজনীতির কাজটা তিনি জানতেন, আব্বা দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন, এ দেশের মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। সেটা উপলব্ধি করেই তিনি সব সময় পাশে থেকে প্রেরণা দিয়ে গেছেন।

‘কখনও একজন স্ত্রী হিসেবে কোনো দাবি তিনি করেননি; বরং আমার বাবার যা কিছু প্রয়োজন ছিল, সেটা তিনিই দেখতেন।’

মুক্তিযুদ্ধচলাকালীন ধানমন্ডির একটি বাসায় বন্দি থাকার স্মৃতি তুলে ধরে শেখ মুজিবুর রহমান ও ফজিলাতুন্নেছা দম্পতির বড় সন্তান শেখ হাসিনা বলেন, ‘একাত্তরে আমার বাবাকে গ্রেপ্তার করা হলো, আমার মাকেও গ্রেপ্তার করা হলো। সেখানেও কিন্তু তিনি ভেঙে পড়েননি। তখনও তার আত্মবিশ্বাস ছিল, এ দেশ স্বাধীন হবেই।

‘তিনি এই বিশ্বাসটা নিয়েই সব সময় ছিলেন এবং তার এই বিশ্বাসের জোরটাই বোধ হয় আমার বাবার জন্য অনেক সহায়ক ছিল।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমার আব্বার খুব সৌভাগ্য ছিল যে, আমার মায়ের মতো একজন জীবনসাথী পেয়েছিলেন। সেই সাথে সাথে আমার দাদা-দাদির কথাও বলব। বাবা-মা তার সংসারের বড় ছেলেকে লেখাপড়া শিখাচ্ছে সেই যুগে, অজপাড়া গাঁ টুঙ্গিপাড়া থেকে। তাকে কলকাতার হোস্টেলে রেখে পড়াচ্ছেন। তারপর তাদের আকাঙ্ক্ষা থাকে বড় ছেলে টাকা-পয়সা কামাই করে বাবা-মাকে দেবে, উল্টো আবার আব্বাকে আমার দাদা-দাদিও যেমন দিয়েছেন, আমার মাও তার টাকা-পয়সা দিতেন।

‘আমার আব্বা এ রকম একজন জীবনসাথী ও বাবা-মা পেয়েছিলেন বলেই আমাদের সংগ্রামে সাফল্য অর্জন করা, দেশের স্বাধীনতা অর্জন করা সহজ হয়েছিল।’

তিনি বলেন, ‘যদি আব্বা আমার মায়ের মতো এই ধরনের জীবনসাথী না পেতেন, যদি সব সময় স্বামীকে বিরক্ত করত যে, না এটা চাই, ওটা চাই, মন্ত্রী থেকে কেন পদত্যাগ করল, মন্ত্রীর বাড়ি ছেড়ে আমাকে যেতে হবে কেন? এত আয়েশে থেকে সেখান থেকে চলে যাবে নাজিরাবাজারের গলিতে?

‘আমার মা কিন্তু কখনও এই কথা বলেননি। জীবনে যখন যে অবস্থা এসেছে, সেই অবস্থা মানিয়ে চলার একটা তার অদ্ভুত শক্তি ছিল। আমাদেরও তিনি সেভাবে শিক্ষা দেয়ার চেষ্টা করেছেন।’

Next Post

‘আদিবাসী’র স্বীকৃতি চান পাহাড়িরা

সোম আগস্ট ৮ , ২০২২
আভা ডেস্কঃ আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস সামনে রেখে দেশের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংবিধানিক পরিচয় ‘আদিবাসী’ করার দাবি জোরাল হয়েছে। তিন পার্বত্য জেলাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বর্ণাঢ্য আয়োজনে মঙ্গলবার উদ্‌যাপন হবে দিনটি। বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের পার্বত্য অঞ্চলের সাধারণ সম্পাদক ইন্টুমনি তালুকদার দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের আদিবাসী সম্প্রদায়। আমাদের মৌলিক অধিকার এবং সাংবিধানিক […]

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links