দূর্গাপূজার উৎপত্তিস্থল পরিদর্শনে রাজশাহীর প্রশাসন 

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ দূর্গাপূজার উৎপত্তিস্থল তাহেরপুর শ্রী শ্রী দূর্গামাতা মন্দির পরিদর্শন করেন বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর,  জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ, পুলিশ সুপার সাইফুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বাগমারা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা শ্রী অনিল কুমার সাহা, বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ,এফ,এম আবু সুফিয়ান, বাগমারা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আমিনুল ইসলাম।

রবিবার (২২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় তাহেরপুর শ্রী শ্রী দূর্গা মাতার মন্দিরে আগত অতিথিদের আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাগমারা -৪ আসনের আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী, তাহেরপুর পৌর সভার মেয়র,তাহেরপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক,রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ কমিটির সদস্য অধ্যক্ষ মোঃ আবুল কালাম আজাদ এর পক্ষ থেকে তাহেরপুর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব আবু বাক্কার মৃধা মুনসুর, প্রধান অতিথি বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবীর মহোদয়কে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। তাহেরপুর পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুর রহমান বিপ্লব রাজশাহী জেলা প্রশাসক মোঃ শামীম আহমেদ কে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। তাহেরপুর পৌর যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক সোহেল রানা পৌর যুবলীগ, ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে রাজশাহী জেলা পুলিশ সুপার সাইফুর রহমান কে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

হিন্দু সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা প্রথম শুরু হয় রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার তাহেরপুরে। গত ৫৩৮ বছর আগে সম্রাট আকবরের শাসনামলে রাজা কংস নারায়ণ সে সময় ৯ লাখ টাকা ব্যয়ে শুরু করেন দুর্গাপূজা। দুর্গাপূজার উৎপত্তিস্থল হিসেবে তাই গর্ববোধ করেন তাহেরপুর বাসীরা। দুর্গাপূজার উৎপত্তিস্থল হিসেবে ইতিহাসখ্যাত তাহেরপুর হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের পুণ্যভূমির স্বীকৃতি আজও পায়নি। রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি আদায়ের জন্য হিন্দু সম্প্রদায়ের অনেক নেতারা অনেক চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন। তাদের মতে, রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে তাহেরপুরে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা গেলে প্রতি বছর শারদীয় দুর্গাপূজার সময় সারাদেশ ছাড়াও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বাঙালীদের মিলনামেলায় পরিণত হতো স্থানটি। এদিকে ১৪৮০ সালে সম্রাট আকবরের রাজত্বকালে বাংলার বারো ভূঁইয়ার অন্যতম রাজা রাজশাহীর কংস নারায়ণ তাহেরপুরের তাহের খানকে যুদ্ধে পরাজিত করেন। যুদ্ধজয়ের স্মৃতি ধরে রাখতে রাজ পুরোহিত রমেশ শাস্ত্রীর পরামর্শে রাজা কংস নারায়ণ দুর্গাপূজার আয়োজন করেন। তার আহ্বানে মা দুর্গা স্বর্গ থেকে সাধারণ্যে আবির্ভূত হন। সেই সময় ৯ লাখ টাকা ব্যয়ে কংস নারায়ণ প্রথম যে দুর্গাপূজার আয়োজন করেন, সেই প্রতিমা ছিল সোনার তৈরি। এরই ধারাবাহিকতায় আজ পর্যন্ত সারা বিশ্বের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব হিসেবে দুর্গাপূজা স্বীকৃত। দুর্গাপূজার গোড়ার কথা কালক্রমে যাতে হারিয়ে না যায় সে জন্য তাহেরপুরে রাজা কংস নারায়ণ প্রথম দুর্গাপূজা সৃষ্টি, মন্দির ও জায়গা রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়নের জন্য কমিটি গঠন করেছেন তাহেরপুর পৌর সভার মেয়র অধ্যক্ষ মোঃ আবুল কালাম আজাদ । এ কমিটি দুর্গাপূজার উৎপত্তিস্থল তাহেরপুরকে বাঙালী হিন্দুদের শারদীয় উৎসবের পুণ্যস্থান হিসেবে স্বীকৃতি পেতে বিভিন্ন পর্যায়ে সরকারের কাছে আবেদন করাও হয়েছে অনেক আগে।কিন্তু বার বার স্বীকৃতি আদায়ে ব্যর্থ হতে হচ্ছে। সে সময় আধুনিক দুর্গোৎসব পদ্ধতি পণ্ডিত রমেশ শাস্ত্রী প্রণীত। এ মহাযজ্ঞের প্রথম অনুষ্ঠান হয়েছিল রাজা কংস নারায়ণ রায়ের ব্যক্তিগত উদ্যোগে ষোড়শ শতাব্দির শেষ ভাগে। অনুষ্ঠানের স্থানটি ছিল বারনই নদীর পূর্ব তীরে রামরামা গ্রামের দুর্গামন্দিরে। প্রথম দুর্গাপূজার সেই স্থানটি এখন ধ্বংসস্তুপ। এলাকাবাসী স্থানটি সংরক্ষণ করে ধর্মীয় তীর্থস্থান ও পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলার দাবি জানিয়ে আসছে দীর্ঘদিন থেকে।

তাহেরপুর শ্রী শ্রী দূর্গা মাতার মন্দিরের সভাপতি নিশিত কুমার সোনা সাহা ও সাম্পাদক শ্রী রঞ্জিব কুমার রায় আগত সকল অতিথিদের কাছে দাবি জানিয়ে বলেন,ঐতিহাসিক এ স্থানটিকে পুণ্যভূমি হিসেবে ঘোষণা করা হলে এখানে পর্যটন নগরী গড়ে উঠবে। সারাবিশ্বের বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গের হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষের প্রতি বছর ঢল নামবে এখানে। বাড়বে সরকারের রাজস্বও। এরই ধারাবহিকতা ধরে রাখতে এ বছর মন্ডপে দুর্গাপুজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তবে সরকারী মতে পূজা মন্ডপে ব্যাপক আলোক সজ্জা ও বিভিন্ন ডিজাইনে সাজানো হয়েছে। এছাড়া মন্ডপে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তা। সার্বিক নিরাপত্তার জন্য আনসার বাহিনীর পাশাপশি পুলিশ বাহিনীও কাজ করছে।

Next Post

রাবি ছাত্রলীগের বিতর্কিতরা নতুন কমিটির বিলুপ্তি চায়

সোম অক্টো. ২৩ , ২০২৩
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ দীর্ঘ সাত বছর পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে ভাঙচুর, মারধর ও আন্দোলনের ঘটনা ঘটেছে। ঘোষিত এ কমিটিকে বিতর্কিত আখ্যা দিয়ে আন্দোলন শুরু করেন পদবঞ্চিত নেতারা। বিতর্কিত এ কমিটি বাতিল চান তারা। তবে আন্দোলনকারী নেতাদের বিরুদ্ধেও নানা বিতর্ক রয়েছে। ছাত্রলীগের এমন কর্মকাণ্ডে ক্যাম্পাসে […]

এই রকম আরও খবর

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links