আভা ডেস্কঃ দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া শিশু রবিনকে অপহরণের ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়ের অভিযোগে আমতলী এমইউ বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী সাজেদা আক্তারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
রোববার দুপুরে আমতলী পৌর শহরের লোদা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, আমতলী পৌর শহরের লোদা এলাকার মিজানুর রহমান ঢাকার নিউ মার্কেট এলাকার স্টার হোটেলে চাকরি করেন। তার স্ত্রী রিনা বেগম ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে আমতলী পৌর শহরের গ্রামের বাড়িতে বসবাস করছেন।
গত বৃহস্পতিবার অজ্ঞাত পরিচয়ে মোবাইল ফোনে নারী কণ্ঠে মিজানুর রহমানের কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে।তার দাবিকৃত টাকা না পেলে মিজানুর রহমানের শিশুপুত্র আমতলী একে হাই স্কুল সংলগ্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র রবিনকে অপহরণ ও ঘরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে সপরিবারে হত্যার হুমকি দেয়।
এ বিষয়ে মিজানুর রহমান ওইদিন রাতে ঢাকার নিউমার্কেট থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। রোববার সকালে মিজানুর রহমান প্রতারকের দেয়া বিকাশ নম্বরে ১০ হাজার টাকা পাঠিয়ে দেয়।
ওই প্রতারক বিকাশ এজেন্ট মালিক আল আমিনের কাছে টাকা আসার বিষয়টি নিশ্চিত হয়।কিন্তু বিকাশ এজেন্ট মালিক ভোটার আইডি কার্ড ছাড়া টাকা দেয়া যাবে না বলে তাকে জানিয়ে দেয়।
এদিকে মিজানুর রহমান টাকা পাঠিয়ে মহসীন নামের তার এক স্বজনকে ওই বিকাশ নম্বর এবং প্রতারকের মোবাইল নম্বর দিয়ে দেয়। মহসীন কৌশলে প্রতারকের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলে প্রেমের অভিনয় করে প্রতারকের অবস্থান এবং বিকাশ এজেন্ট সম্পর্কে নিশ্চিত হন।
মহাসীনের কথায় ওইদিন দুপুর ২টার দিকে থানা পুলিশ আমতলী এমইউ বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে প্রতারককে শনাক্ত করে।পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে প্রতারক সাজেদা দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে এবং তার সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোন টয়লেটে ফেলে দেয়।
এ সময় পুলিশ প্রতারক সাজেদাকে গ্রেফতার করেন এবং ওই মোবাইল ফোন উদ্ধার করেন। সাজেদা আকতার পৌর শহরের লোদা গ্রামের মো.শহীদুল ইসলামের কন্যা।এ ঘটনার পরপরই বিদ্যালয়ের শিক্ষক পরিষদ সভা ডেকে ওই ছাত্রীকে বিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করেছেন।
মো. মিজানুর রহমান বলেন, গত বৃহস্পতিবার ফোনে আমার কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে। এ টাকা না দিলে আমার শিশুপুত্র রবিনকে অপহরণ করে নিয়ে যাবে এবং ঘরে আগুন দিয়ে সপরিবারে হত্যার হুমকি দেয়।আমি তার দাবিকৃত টাকা থেকে ১০ হাজার টাকা বিকাশে দিয়েছি।
তিনি আরও বলেন,এ ঘটনায় আমি ঢাকার নিউমার্কেট থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছি।
বিকাশ এজেন্ট মালিক আল আমিন বলেন, নারীকণ্ঠে মোবাইল নম্বরে ফোন দিয়ে ১০ হাজার টাকা আসার বিষয়টি জানতে চায়।আমি তাকে ভোটার আইডি কার্ড ছাড়া টাকা দেয়া যাবে না বলে জানিয়ে দেই।
আমতলী থানায় গ্রেফতারকৃত স্কুলছাত্রী সাজেদা আক্তার বিকাশে টাকা আনার কথা অস্বীকার করে বলেন, আমি কাউকে হুমকি দেইনি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শাহ আলম কবির বলেন, ওই ছাত্রীকে বিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
আমতলী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মনোরঞ্জন মিস্ত্রি বলেন,খবর পেয়ে প্রতারক সাজেদাকে বিদ্যালয় থেকে গ্রেফতার করেছি।তদন্তসাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
যুগান্তর