আভা ডেস্কঃ আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুইপক্ষের মধ্যে দফায় দফায় হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। উভয় গ্রুপের হামলায় রণক্ষেত্রে পরিণত হয় বিশ্ববিদ্যালয় আলাওল ও সোহরাওয়ার্দী হল।
বুধবার গভীর রাতে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী চলে এ সংঘর্ষ। এতে উভয়পক্ষের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার রাতে আলাওল হলের ২৩৪ নাম্বার কক্ষ নিয়ে বিজয় গ্রুপের এক কর্মীর সঙ্গে কনকর্ড গ্রুপের কর্মী ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী বোরহানুল ইসলামের ঝামেলা হয়। এর মীমাংসা করতে গেলে হিসাববিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও বিজয় গ্রুপের কর্মী আবীর হাসান তাকে চড়-থাপ্পড় দেন।
এ ঘটনার জেরে মঙ্গলবার রাতে ক্যাম্পাসে ট্রেন এলে জিরো পয়েন্টের কাছে আবীরকে পেয়ে মারধর করে বোরহান ও তার সহযোগীরা। এ নিয়ে বুধবার দিনভর ক্যাম্পাসে উত্তেজনা বিরাজ করে। পরে বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সোহরাওয়ার্দী হলের সামনে বিজয় গ্রুপ এবং শাহজালাল হলের সামনে কনকর্ড গ্রুপ অবস্থান নেয়। তাদের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে উভয়পক্ষের চারজন আহত হয়।
আহতরা হল- আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাকিবুল হাসান, রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের একই বর্ষের নেজামুল করিম, বাংলাদেশ স্টাডিজ বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের মো. রিফাত ও ইসলাম শিক্ষা বিভাগের মো. ফুয়াদ। গুরুতর আহত নেজাম ও ফুয়াদকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এ ঘটনার জের ধরে রাত দেড়টার দিকে সিক্সটি নাইনসহ একাধিক গ্রুপের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের এফ রহমান হলে থাকা বিজয় গ্রুপের নেতাকর্মীদের মারামারি হয়। এ সময় হলের লাইটগুলো ভেঙে দিলে দুই গ্রুপের নেতাকর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয়।
একপর্যায়ে হলের জানালা-দরজা ভাঙচুর চালান বিবদমান কর্মীরা। এ সময় ৬টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। রাত পৌনে ৩টায় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় ৫৭ জনকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করা হয়। সিক্সটি নাইন নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ জ ম নাসিরের অনুসারী এবং বিজয় শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মুহিবুল হাসান চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
গ্রেফতার: মধ্যরাতে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ ও ভাঙচুরের পর ৭ জনকে গ্রেফতার দেখিয়েছে হাটহাজারী থানা পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আবদুর রহিম। তিনি বলেন, আটককৃত ৫৬ জনের মধ্যে যাচাই-বাছাই করে ৫০ জনকে ছেড়ে দেয়া হয়।
বিজয় পক্ষের নেতা সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ ইলিয়াস বলেন, মধ্যরাতে শিবির স্টাইলে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল টিপুর নেতৃত্বে এ নৃশংস হামলা হয়েছে। আমাদের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছে।
ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপু বলেন, সন্ধ্যায় তিন হল থেকে বিজয়ের কর্মীরা আমাদের কর্মীদের বিতাড়িত করে। প্রশাসনকে বারবার অনুরোধ করলেও মধ্যরাতেও তাদের হলে ওঠার কোনো ব্যবস্থা করে দেয়নি প্রশাসন। রাতে তারা দুই হলে উঠতে গেলে হামলা চালায় বিজয়ের কর্মীরা।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এসএম মনিরুল হাসান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ শান্ত ও শিক্ষাবান্ধব রাখতে যে কোনো পদক্ষেপ নিবে।