শাহজাদপুর প্রতিনিধি, সিরাজগঞ্জঃ উজানের ঢল ও ভারি বর্ষণ কমলেও সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। শিশু সন্তান নিয়ে ঘরের চালে খোলা আকাশের নিচে বাস করছে এসব এলাকার মানুষ।
দ্বিতীয় দফা বন্যায় উপজেলার পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের রূপপুর নতুনপাড়ার চর ও নিচু এলাকার প্রায় দুই শতাধিক হতদরিদ্র তাঁত শ্রমিকের বাড়িঘর ও তাঁত কারখানা এখনও বন্যার পানিতে ডুবে আছে। ফলে এ সব বাড়িঘরের শ্রমজীবী মানুষের হাতে কোনো কাজ না থাকায় তারা অতি কষ্টে আছেন।
প্রতিটি বন্যা দুর্গত পরিবারে চরম খাদ্যাভাব দেখা দিয়েছে। তারা শিশু সন্তান নিয়ে ঘরের মধ্যে মাচা করে অথবা চৌকি উঁচু করে বন্যার পানির মধ্যে বাস করায় শিশুরা পানিতে পড়ে যাওয়ার শঙ্কা আছে। এদের অনেকের ঘরেই খাবার নেই।
জানা যায়, অনেকের তাঁতঘর পানিতে ডুবে যাওয়ায় কাপড় বুনোন বন্ধ। ফলে অর্থ কষ্টে মানবেতর জীবনযাপন করছে ২ শতাধিক হতদরিদ্র তাঁত পরিবার। এ সব বানভাসি মানুষের অভিযোগ তাদের উপজেলা পরিষদ ও পৌরসভা কার্যালয় থেকে কেউই খবর নেয়নি।
এমন কি গত ১৬ দিন ধরে তারা বন্যার পানিতে ডুবে থাকলেও তাদের ভাগ্যে জোটেনি কোনো ত্রাণসামগ্রী। ফলে তারা চরম মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
এ বিষয়ে শাহজাদপুর পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বন্যা দুর্গতদের তালিকা তৈরির কাজ চলছে। অচিরেই তাদের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হবে।
এ ছাড়া উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের বাড়িঘর ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। পানিবন্দি হয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন উপজেলার প্রায় ২০ হাজার মানুষ। বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে পাট, তিল, কাউন ও সবজি ফসল।
কৃষকেরা ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে। বন্যার কারণে কাঁচা ঘাসের মাঠ ডুবে যাওয়ায় গোবাদি-পশু নিয়ে গো-খামার মালিকরা বিপাকে পড়েছে। এদিকে শাহজাদপুর উপজেলার বন্যা দুর্গত গালা, সোনাতনী, কৈজুরি, জালালপুর ও খুকনি ইউনিয়নের মানুষ ত্রাণের অপেক্ষায় পথ চেয়ে আছে।
নতুন কোন লোক দেখলে বা শ্যালো নৌকার শব্দ পেলেই ত্রাণের আশায় ঘর থেকে ছুটে আসে। তাদের ঘিরে ধরে ত্রাণের জন্য আকুতি জানায়।
এ বিষয়ে শাহজাদপুর উপজেলার পিআইও আবুল কালাম আজাদ বলেন, এ পর্যন্ত উপজেলার বন্যাদুর্গত ৭৯০ পরিবারের মাঝে শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে, ১০ কেজি চাল, দুই কেজি চিড়া, এক কেজি চিনি, এক কেজি ডাল, নুডুলস তিন প্যাকেট ও এক লিটার তেল।