আভা ডেস্ক: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতেও পারে আবার বর্জনও করতে পারে ‘বাম গণতান্ত্রিক জোট’। বামপন্থী আটটি রাজনৈতিক দলের নতুন এই মোর্চার শরিক কয়েকটি দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন আভাস মিলেছে। ওই নেতারা জানিয়েছেন, নির্বাচনব্যবস্থার সংস্কার ছাড়া নির্বাচনে অংশ নেওয়া হবে অর্থহীন ও পণ্ডশ্রম।
আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দ্বি-দলীয় রাজনৈতিক ধারার বিপরীতে জনগণের আস্থাশীল একটি বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে গত ১৮ জুলাই আত্মপ্রকাশ করে এই বাম জোট। এরপর ৫ আগস্ট নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কারের জন্য ৫৪ দফা সুপারিশ তুলে ধরা হয় জোটের পক্ষে। তারা সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতি চালু করারও দাবি জানিয়েছে।
জোটের অন্যতম শরিক দল বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, ‘অতি সম্প্রতি অনুষ্ঠিত সিটি করপোরেশন নির্বাচনগুলোতেও যা দেখা গেল, তাতে নির্বাচনব্যবস্থার আমূল সংস্কার প্রয়োজন। এ ছাড়া জনগণের ভোটে নির্বাচন অসম্ভব।’ তিনি বলেন, ‘শুধু একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা হলেই নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ হবে—এমন কোনো গ্যারান্টি নেই। নির্বাচন গ্রহণযোগ্য করতে হলে কালো টাকা, পেশিশক্তি ও সাম্প্রদায়িকতা বন্ধ করতে হবে। সে জন্য আমরা সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির দাবি তুলেছি।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমরা জোটগতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এগুলোর বাস্তবায়ন না হলে নির্বাচন বর্জনও করতে পারি।’
বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘নানা পদের নির্বাচনী জোটের কথা শোনা যায়, তবে আমরা অন্য কোনো জোটে যাচ্ছি না। আমরা জোট করেছি মানুষের অধিকার আদায় করতে, শুধু নির্বাচন নিয়ে কোনো জোটে
আমরা নেই। আমরা দাবি তুলেছি, নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কার চাই, সেটা না করতে পারলে নির্বাচন করে কী হবে? তবে নির্বাচনে যাব কি না সে বিবেচনা পরে করব।’
জোটের সমন্বয়ক ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘আন্দোলন-সংগ্রাম করে মানুষের অধিকার আদায় করতেই আমরা জোট গঠন করেছি। আমরা নির্বাচনব্যবস্থার সংস্কার চাই, সে জন্য কর্মসূচি দিয়েছি। বর্তমান নির্বাচনব্যবস্থা বহাল থাকলে আসলে সুষ্ঠু নির্বাচন অসম্ভব।’
গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু বলেন, ‘আসলে নির্বাচনে যাওয়ার আগে প্রয়োজন নির্বাচনব্যবস্থার সংস্কার। দীর্ঘদিন ধরে তো আমরা নির্বাচন দেখছি, কালো টাকা, পেশিশক্তি থেকে বেরোতে পারিনি। ঘুরেফিরে আওয়ামী লীগ-বিএনপির দ্বি-দলীয় চক্রেই আটকে আছি। নির্বাচনব্যবস্থার সংস্কার ছাড়া এ থেকে মুক্তি নেই। আমরা মানুষের মুক্তির একটি রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তুলতে চাই। যদি নির্বাচনেও যাই, তা হবে আন্দোলনের অংশ।’
বাম গণতান্ত্রিক জোটের শরিক অন্য দলগুলো হলো—গণসংহতি আন্দোলন, বাসদ (মার্ক্সবাদী), বাংলাদেশের ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগ ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক আন্দোলন।
কালেরকণ্ঠ