আমার চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই: প্রধানমন্ত্রী

আভা ডেস্কঃ নিজের জন্য চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার যে স্বপ্ন নিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশ স্বাধীন করেছেন, শত কষ্ট, আঘাত, বাধা সয়েও সেই স্বপ্ন পূরণ করতে চান তিনি।

বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধু মেডেল ফর ডিপ্লোম্যাটিক এক্সিলেন্স’ পদক বিতরণ অনুষ্ঠানে গণভবন প্রান্ত থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন সম্পাদিত ‘শেখ হাসিনা বিমুগ্ধ বিস্ময়’ নামের একটি গ্রন্থ তুলে ধরা হয়। চন্দ্রাবতী অ্যাকাডেমি থেকে প্রকাশিত বইটিতে স্থান পেয়েছে ৭৫ লেখকের ৭৫টি প্রবন্ধ ও ৭৫টি দুর্লভ আলোকচিত্র।

বিষয়টি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন, ‘আমার জন্য বই, আমার জন্মদিন, আমার চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই। আমি কোনো কিছু চাই না। আমার জন্য কিছু করা হোক, সেটাও আমার কামনা না। আমি জাতির পিতার আদর্শ বুকে ধারণ করে দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাবার লক্ষ্য নিয়েই কাজ করে যাচ্ছি। আমার কোনো চাওয়া-পাওয়া নেই।’

’৭৫-এর ১৫ আগস্টের নির্মমতার কথা স্মরণ করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। ভারাক্রান্ত গলায় তিনি বলেন, ‘আমি তো আমার বাবা-মা সব হারিয়েছি, কিন্তু আমি একটাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যত কষ্ট, যত আঘাত, বাধা আসুক; যে স্বপ্ন নিয়ে আমার বাবা এই দেশ স্বাধীন করেছেন সেই স্বপ্ন পূরণ করতেই হবে। বাংলাদেশ হবে ক্ষুধা দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ। দারিদ্র্য বলে, মঙ্গা বলে দেশে কিছু থাকবে না।’

‘বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ সুন্দরভাবে বাঁচবে, উন্নত জীবন পাবে’- এটাকেই নিজের জীবনের লক্ষ্য বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘সেই লক্ষ্য স্থির রেখে আমার পথ চলা। আজকে আমরা উন্নয়নশীল দেশ, ইনশাল্লাহ বাংলাদেশ একদিন উন্নত দেশ হিসেবে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে।’

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের সময় দেশের আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে আজকে আমরা অনেক দূর এগিয়ে গেছি। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে আমরা উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছি। এটাই হচ্ছে আমাদের বড় অর্জন। বাংলাদেশকে আমরা সামনের দিকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।’

বঙ্গবন্ধুর দেয়া পররাষ্ট্রনীতি মেনেই বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে যাচ্ছি। তা ছাড়া, সমগ্র বিশ্বব্যাপী জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা বাহিনীতে অবদান রেখে যাচ্ছি। আমরা ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক শান্তি সম্মেলন খুব সফলভাবে বাংলাদেশে আয়োজন করেছি এবং সুদূরপ্রসারী ঢাকা ঘোষণা আমরা গ্রহণ করেছি।’

রোহিঙ্গা প্রসঙ্গটি সামনে এনে পৃথিবীর প্রতিটি জনপদের মানুষের শান্তি ও মানবাধিকার রক্ষায় সবার প্রতি সহযোগিতার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘বাস্তুচ্যুত, মিয়ানমারের নিপীড়িত, নির্যাতিত যে মানুষগুলো, রোহিঙ্গা, আমরা তাদের আশ্রয় দিয়েছি। আমরা আশা করি বিশ্বের সব মানুষের মানবাধিকার এবং শান্তি যেন রক্ষা পায়। এ ক্ষেত্রে সবার সহযোগিতা আমরা কামনা করি।’

বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠা ও মানবতাবাদী কূটনীতিতে বঙ্গবন্ধুর অবদান চিরস্মরণীয় করতে রাখতে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর মাহেন্দ্রক্ষণে প্রথমবারের মতো ‘বঙ্গবন্ধু মেডেল ফর ডিপ্লোমেটিক এক্সিলেন্স’ অ্যাওয়ার্ড প্রবর্তন করেছে সরকার।

এবার সম্মাননা পেয়েছেন ঢাকায় সংযুক্ত আরব আমিরাতের সাবেক রাষ্ট্রদূত সাইদ আল মোহাম্মদ মেহরি এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম ইউনিটের সচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল খুরশেদ আলম (অব.)।

প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে বিজয়ীদের হাতে পদক তুলে দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।

পদক বিজয়ী দুই কূটনীতিককে অভিনন্দন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের অকৃত্রিম বন্ধুরাষ্ট্র সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত সাইদ মোহাম্মদ আল মেহরি বাংলাদেশে দায়িত্ব পালনকালে আমাদের দুই দেশ এবং জনগণের মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্ককে আরও নিবিড় করতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।

‘পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিটের সচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল মো. খুরশেদ আলম (অব.) দীর্ঘদিন ধরে সমুদ্রসীমা নির্ধারণ ও সুনীল অর্থনীতি নিয়ে কাজ করছেন। আমাদের সরকারের আমলে ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা বিজয়ের অভিযাত্রায় তিনি অত্যন্ত পেশাদারত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন।’

এই পদক প্রবর্তনের মধ্য দিয়ে দেশের কূটনীতিকরা নিজ নিজ অবস্থান থেকে পেশাদারত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালনে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনে অনুপ্রাণিত হবেন বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘আমাদের বন্ধুপ্রতিম দেশগুলোর কূটনীতিকগণও তাদের স্ব-স্ব দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক নতুন শিখরে উন্নীত করতে উৎসাহিত হবেন।

‘আমরা চাই সবার সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক অটুট থাকুক। আমাদের আর্থ-সামাজিক উন্নতির মাধ্যমে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। বাংলাদেশ হবে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা।’

Next Post

পানামা পেপারস-কাণ্ডে ঐশ্বরিয়াকে তলব

সোম ডিসে. ২০ , ২০২১
আভা ডেস্কঃ পানামা পেপারস কেলেঙ্কারিতে বলিউডের নন্দিত তারকা ও ভারতের প্রথম মিস ওয়ার্ল্ড ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চনের নাম আসায় তাকে তলব করেছে দেশটির অর্থনৈতিক দুর্নীতি তদন্তে গঠিত ইনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। দেশটির সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার নয়াদিল্লির লোকনায়ক ভবনে জিজ্ঞাসাবাদ করতে ডাকা হয়েছে সাবেক মিস ওয়ার্ল্ড ঐশ্বরিয়া রাইকে। জানা গেছে, […]

এই রকম আরও খবর

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links