আভা ডেস্ক: সাবধান, আর একটি হলুদ কার্ড দেখলেই বসতে হবে সাইডবেঞ্চে! লিওনেল মেসি, হাভিয়ের মাশ্চেরানো, নিকোলাস ওটামেন্ডি, এভার বানেগা, গাব্রিয়েল মার্কাদো ও মার্কোস একুনা এই ছয় আর্জেন্টাইনের মাথায় হয়তো কথাটা জোরেশোরেই ঘুরপাক খাচ্ছে।
ফিফার নিয়ম-নীতি পড়ে এমন তথ্যই পাওয়া গেল। দুই ম্যাচে হলুদ কার্ড দেখলে পরের ম্যাচে খেলতে পারছেন না ওই খেলোয়াড়। তাতে বেশ দুশ্চিন্তাতেই আছেন রাশিয়া বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া একাধিক তারকা খেলোয়াড়। কেবল আর্জেন্টিনা নয়, পর্তুগালের প্রাণভোমরা ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো, ব্রাজিলের স্বপ্নসারথি নেইমারও আছেন এই তালিকায়। একটা উদাহরণ দিলে বিষয়টি আরও পরিস্কার হয়ে যাবে। গ্রুপ পর্বে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে কোস্টারিকার বিপক্ষে একটা হলুদ কার্ড দেখেছেন নেইমার। সেক্ষেত্রে অনুষ্ঠিত হয়ে যাওয়া শেষ ম্যাচ, অর্থাৎ সার্বিয়ার বিপক্ষে আরেকটা হলুদ কার্ড দেখলেই শেষ ষোলোতে মেক্সিকোর সঙ্গে কাটা পড়তেন নেইমার। অবশ্য এখনও ডেঞ্জার জোনেই আছেন ব্রাজিলিয়ান সেনসেশন। নকআউট পর্বে মেক্সিকোর বিপক্ষে হলুদ কার্ড পেলেই পরের ম্যাচে খেলতে পারবেন না নেইমার। সবচেয়ে বেশি চিন্তাটা মেসিদের নিয়ে। গ্রুপ পর্বের তিন ম্যাচ মিলিয়ে মোট ছয়টি হলুদ কার্ড জমা পড়েছে আলবিসেলেস্তেদের। যার মধ্যে আইসল্যান্ডের বিপক্ষে কোনো হলুদ কার্ড দেখেনি দু’বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। তবে গ্রুপ পর্বের দ্বিতীয় ম্যাচে এসে পুরোই উল্টো রূপ। তিন-তিনজন দেখেন হলুদ কার্ড। তারা হলেন- ওটামেন্ডি, মারকাদো ও একুনা। নাইজেরিয়ার বিপক্ষে বাঁচা-মরার ম্যাচে নামেননি একুনা। তবে বাকি দু’জন খেলেছেন। যদিও সুপার ঈগলদের সঙ্গে হলুদ কার্ড খাওয়ার মতো কোনো ট্যাকেল দেননি মারকাদো-ওটামেন্ডি। তাতেই বেঁচে থাকল নকআউট পর্বে ফ্রান্সের বিপক্ষে তাদের মাঠে নামার আশা। তবে এখনও কাটেনি শঙ্কা। ৩০ জুন কাজান অ্যারেনায় ফরাসিদের বিপক্ষে খেলতে নেমে যদি হলুদ কার্ড দেখেন তাহলে পরের ম্যাচে বসে থাকবে হবে। এরপর গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচেও হলুদ কার্ড পেয়েছে হোর্হে সাম্পাওলির ছাত্ররা। ওই ম্যাচেও গুনে গুণে তিনটা। দলের মূল তারকা লিওনেল মেসিও বাদ যাননি। ম্যাচের একেবারে অন্তিম মুহূর্তে এসে কার্ড দেখেন পাঁচবারের বর্ষসেরা এই স্টার। তাতেই দেখা দিল সংশয়। নকআউট পর্বে ফ্রান্সের বিপক্ষে একটু ভেবেচিন্তেই খেলতে হবে আর্জেন্টিনার দলনেতাকে। না হলে পরের ম্যাচে নিষেধাজ্ঞার ঘরে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। একই কাতারে আছেন আর্জেন্টিনার মাঝমাঠের দুই ভরসা মাশ্চেরানো ও বানেগা। এদিকে গ্রুপ পর্বে ইরানের বিপক্ষে হলুদ কার্ড দেখা রোনালদোর নামটা আছে লাল ফিতায় বাঁধা। ৩০ জুন রাশিয়ার সোচিতে নকআউট পর্বের লড়াইয়ে উরুগুয়ের বিপক্ষে নামবে পর্তুগাল। সে ম্যাচে যদি কোনো কারণে হলুদ কার্ড দেখেন সিআর সেভেন। তাহলেই গেল। পরের ম্যাচে তিনি থাকবেন নিষিদ্ধ। এ রকম শঙ্কার মাঝে আছে টুর্নামেন্টের আরেক ফেভারিট ব্রাজিলও। কেবল নেইমারই নন, আরও দু’জন- ফিলিপ কুতিনহো ও ক্যাসেমিরো। সুইজারল্যন্ডের বিপক্ষে হলুদ কার্ড দেখেছিলেন ক্যাসেমিরো। এরপর আরও দুই ম্যাচ খেলেছেন। দেখেননি কোনো কার্ড। দেখলে বসে থাকতে হতো এক ম্যাচ। সার্বিয়ার বিপক্ষে সে চিন্তা মাথায় নিয়েই বোধ হয় মাঠে নামেন এই তিন ব্রাজিলিয়ান। পাশাপাশি অন্যরাও ছিলেন সতর্ক। সে জন্যই হয়তো গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে একটা কার্ডও দেখেননি তিতের শিষ্যরা।
এতসব দুঃসংবাদের মাঝে একটা সুখবরও আছে। গ্রুপ পর্বে হলুদ কার্ড খাওয়া কোনো খেলোয়াড় যদি কোনোমতে কোয়ার্টার ফাইনাল পার করতে পারেন তাহলেই রক্ষা! কারণ কোয়ার্টার ফাইনালের পর পেছনের হিসাব-নিকাশ বাদ পড়ে নতুন হিসাব শুরু হবে। এ ছাড়া যদি কোনো খেলোয়াড় সেমিফাইনালে এসে হলুদ কার্ড দেখেন তাহলে তার ফাইনাল খেলতে কোনো বাধা নেই।
যুগান্তর