আভা ডেস্ক: গোমাংস খেলেও শূকরের মাংস খেতে রাজি নন বুদ্ধিজীবীদের একাংশ৷ তাঁরা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ধর্মনিরপেক্ষতার প্রমাণ দিতে শিবসেনার সঙ্গে বসে শূকরের মাংস খাবেন না৷
ভাষা ও চেতনা সমিতির আহ্বানে ২০১৫ সালের ৩০ অক্টোবর ধর্মতলায় প্রকাশ্যে গোমাংস খেয়েছিলেন বুদ্ধিজীবীদের একাংশ৷ তাদের মধ্যে বিশেষ পরিচিত মুখ সিপিএম নেতা প্রাক্তন মেয়র তথা আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য এবং তৃণমূল ঘনিষ্ঠ কবি সুবোধ সরকার৷ সেই ঘটনার পাল্টা হিসেবেই প্রকাশ্যে শূকরের মাংস খাওয়ানোর কর্মসূচি নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ শিবসেনা৷
সংগঠনটির দাবি, সম্প্রীতি রক্ষার বার্তা দিতেই ২৯ জুন বিকাল চারটের সময় সল্টলেকের করুণাময়ীতে প্রকাশ্যে শূকরের মাংস খাওয়ানো হবে৷ সেখানে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস), সিপিএম ও তৃণমূল কংগ্রেস বুদ্ধিজীবীদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে৷
অন্যান্য বুদ্ধিজীবী ছাড়াও সিপিএমের সাংসদ মহম্মদ সেলিম, আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য এবং কবি সুবোধ সরকারকেও হোয়াটসঅ্যাপে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বলে kolkata24x7 নিউজ পোর্টাল-কে জানিয়েছেন রাজ্যের শিবসেনা সাধারণ সম্পাদক তথা মুখপাত্র অশোক সরকার৷ তাঁর বক্তব্য, ‘‘গোমাংস খেয়ে প্রতিবাদ জানানো গেলে শূকরের মাংস খেয়েও প্রতিবাদ জানানো উচিত৷ সেইসঙ্গে তাঁর সংযোজন, ‘‘কে, কী খাবেন, সেটা অবশ্যই তাঁর ব্যক্তিগত বিষয়৷ কিন্তু, গোমাংস খেয়ে যাঁরা সম্প্রীতির বার্তা দিয়েছিলেন, শূকরের মাংস খেয়েও সম্প্রীতির বার্তা দেওয়ার জন্য তাঁদের কাছে রাজ্য শিবসেনা আর্জি রাখছে৷’’
তবে শিবসেনার এই নিমন্ত্রণ রাখতে পারবেন না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন তৃণমূল ঘনিষ্ঠ কবি সুবোধ সরকার৷ আমেরিকার বঙ্গ সম্মেলনে যোগ দিতে গিয়েছেন তিনি৷ ফিরবেন ১১-১২ জুলাই৷ সুবোধ সরকারের কথায়, “প্রথমত আমি কোনও হোয়াটসঅ্যাপে নিমন্ত্রণ পাইনি৷ আর দ্বিতীয়ত, এগুলো কী ধরণের মানুষিকতা বুঝতে পারছি না৷ ধর্মনিরপেক্ষতা প্রমাণ দিতে কী আমাদের বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে মাংস খেয়ে বেরাতে হবে? আমার বন্ধু-বান্ধব সবাই জানেন আমি কতটা ধর্মনিরপেক্ষ৷তার প্রমাণ দিতে আমি শূকরের মাংস খাব না৷”
তবে বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, “নিমন্ত্রণ পেলে অবশ্যই তিনি শূকরের মাংস খেতে যাবেন৷ রসিকতার সুরে বললেন, আমাকে এখনও কিছু বলেনি৷ তবে ডাকলে নিশ্চয়ই যাবো৷ ফ্রি-তে মাংস খাওয়ার এমন সুযোগ কেউ ছাড়ে নাকি!”
এবিষয়ে সিপিএম সাংসদ মহঃ সেলিমের কড়া জবাব, “এসব ব্যাপারে আমি কোনও মন্তব্য করব না৷ আমি রাজনীতি করি, তামাশা করি না৷”
পশ্চিমবঙ্গ শিবসেনার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই কর্মসূচীতে আরএসএস, সিপিএম ও তৃণমূল কংগ্রেসের অন্যান্য বুদ্ধিজীবীদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে৷ এই আমন্ত্রণ পেয়েছেন কিনা জানার তৃণমূলপন্থী বুদ্ধিজীবী কবীর সুমনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়৷ তার বক্তব্য, “আমি সব মাংস খাই কিন্তু তা-বলে শিবসেনার সঙ্গে বসে শূকরের মাংস খাব না৷”
কলকাতা ২৪*৭