কোটা এখন ফোটা কোথায়?

বাংলাদেশে শিক্ষার্থীদের তুমুল আন্দোলনের মুখে গত ১২ই এপ্রিল সংসদে সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা বাতিলের ঘোষণা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

কিন্তু সেই ঘোষণার পর আড়াই মাস পার হলেও এখনো কোন বিজ্ঞপ্তি জারি হয়নি, যা নিয়ে আন্দোলনকারীরা মাঝে মধ্যেই উদ্বেগ ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।

ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী আর প্রতিবন্ধীদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা করতে ক্যাবিনেট সচিবের নেতৃত্ব একটি কমিটি কাজ করার কথা। সে বিষয়েও কোন সিদ্ধান্তের কথা জানা যায়নি।

এরই মাঝে বুধবার সংসদে কোটা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কিছু বক্তব্য নতুন করে সংশয়ের জন্ম দিয়েছে।

সংসদে বিরোধী নেতা রওশন এরশাদ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল রাখার দাবি করলে তা উড়িয়ে দেননি প্রধানমন্ত্রী। উপরন্তু তার বক্তব্যের প্রশংসা করেন তিনি।

শেখ হাসিনা সংসদে বলেন, ”আমি বলে দিয়েছি থাকবে না। সেই থাকবে না’কে কিভাবে কার্যকর করা যায়, সেজন্য ক্যাবিনেট সেক্রেটারিকে দিয়ে একটি কমিটি করে দেয়া হয়েছে, যাতে এটা বাস্তবায়ন করা যায়। তবে আমি ধন্যবাদ জানাই মাননীয় বিরোধী দলীয় নেতাকে যে, তিনি বলেছেন মুক্তিযোদ্ধাদের কোটা থাকতে হবে। অবশ্যই মুক্তিযোদ্ধাদের জন্যই তো আজকে স্বাধীন।”

নতুন আন্দোলনের প্রস্তুতি শুরু

তার এই বক্তব্য আর কোটা সংস্কারে সরকারের দীর্ঘসূত্রিতা নতুন করে সংশয়ে ফেলেছে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের।

বৃহস্পতিবার কোটা সংস্কারের পক্ষের শিক্ষার্থীরা নিজেরা একটি বৈঠক করেছেন যেখানে পুনরায় আন্দোলন শুরুর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে প্রচলিত ব্যবস্থায় ৫৬ শতাংশ আসনে কোটায় নিয়োগ দেয়া হয়ে থাকে। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ রয়েছে মুক্তিযোদ্ধা কোটা। ১০ শতাংশ রয়েছে নারীদের জন্য। আরো রয়েছে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য কোটা।

বেশ কয়েক বছর ধরেই এই কোটা ব্যবস্থা সংস্কারে আন্দোলন করছে শিক্ষার্থীরা। তবে এপ্রিল মাসে তাদের আন্দোলন তীব্রতর হলে সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে কোনা বাতিলের ঘোষণা আসে।

যদিও আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের দাবি ছিল, পুরোপুরি বাতিল নয়, কোটা ব্যবস্থা সংস্কার করে ১০ থেকে ১৫ শতাংশে নামিয়ে আনতে হবে।

আন্দোলনকারী একজন নেতা নুরুল হক বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রকাশ্যে সংসদে কোটা বাতিলের ঘোষণা দিয়েছিলেন। এরপর তারা আমাদের সঙ্গে আরো কয়েকবার মিটিং করে সময় নিয়েছেন। মন্ত্রীপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠনের কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু সেই কমিটিও এখনো গঠিত হয়নি, কোন কাজও করেনি। তাহলে কোটা সংস্কারের কি হলো?”

কোটা সংস্কার আন্দোলনের আরেক নেতা লুৎফুন্নাহার লুমা বলছেন, “সাতই মে’র মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারির কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু এখন প্রায় তিনমাস হতে চললো, কোন ঘোষণা আমরা দেখতে পাইনি। বরং গতকালের প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য তার আগের বক্তব্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এখন আমরা নেতা ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবো।”

শনিবার এ বিষয়ে চূড়ান্ত ঘোষণা দেয়া হবে তিনি জানান।

গত কয়েকদিনে বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি জেলা শহরে কোটা সংস্কারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে।

অন্যদিকে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল রাখার পক্ষেও আন্দোলন করছে মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সন্তানদের নানা সংগঠন।
মার্চে ঢাকায় কোটা সংস্কারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল (ফাইল ফটো)
মার্চে ঢাকায় কোটা সংস্কারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল (ফাইল ফটো)
কত সময় লাগা উচিৎ?

কিন্তু এরকম একটি বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি হতে সরকারের জন্য কতটা সময় দরকার?

সাবেক মন্ত্রীপরিষদ সচিব ও সাবেক উপদেষ্টা আকবর আলী খান বলছেন, আসলে পুরো ব্যাপারটি সরকারর ইচ্ছার ওপর নির্ভর করে।

তিনি বলছেন, “কতদিনের মধ্যে এটি করতে হবে, কেতাবে তো এরকম কোন ফর্মুলা লেখা নেই। চাইলে সরকার এটি দুইদিনেও করতে পারে, আবার ছয়মাসও সময় লাগতে পারে। কোন আইন তো নেই। এটা সরকারের ইচ্ছার ওপর সম্পূর্ণ নির্ভরশীল।”

কোটা সংস্কারের বিষয় সর্বশেষ জানতে সরকারি শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, তারা কেউ প্রকাশ্যে মন্তব্য করতে রাজি হননি। এখনো এ বিষয়ে নতুন কোন তথ্য নেই বলে তারা জানিয়েছেন। যে কমিটি গঠনের কথা বলা হয়েছে, সেই কমিটির বিষয়েও তারা পরিষ্কার কোন তথ্য দিতে পারেননি।

বিবিসি বাংলা

Next Post

বিকিনিতে সারা, ইন্টানেটে ভাইরাল।

শুক্র জুন ২৯ , ২০১৮
আভা ডেস্ক: ভারতের গোয়ায় ছুটি কাটাতে গেছেন টেলিভিশন অভিনেত্রী সারা খান। আর সেখানে গিয়ে বিকিনি পরে ছবি শেয়ার করলেন অভিনেত্রী, যা ইতিমধ্যেই ইন্টারনেটে ঝড় তুলেছে। সারার ইনস্টাগ্রামে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে কখনও সুইমিং পুলে মায়ের সঙ্গে রয়েছেন সারা আবার কখনও বোনের সঙ্গে। আবার কখনও ‘গার্লস গ্যাং’-এর সঙ্গে সময় কাটাতে দেখা […]

এই রকম আরও খবর

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links