আবারো চারঘাট থানার ওসি সাংবাদিকে ফাঁসিয়ে দিলো মাদক মামলায়।

নিজস্ব প্রতিবেদক:
এবার রাজশাহীর চারঘাটে সাংবাদিককে ইয়াবা ও ফেনসিডিল দিয়ে ফাঁসানো হয়েছে বলে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। বুধবার বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে চারঘাট থানা পুলিশের একটি দল এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে। আটক ওই সাংবাদিক হলেন দৈনিক যুগান্তর এবং সানশাইনের চারঘাট প্রতিনিধি মিজানুর রহমান।

পুলিশের বিরুদ্ধে মাদক ও মামলা ‘বাণিজ্য’, তল্লাশির নামে হয়রানি এবং লুটপাটসহ বিভিন্ন অনিয়মের খবর প্রকাশ করায় সাংবাদিক মিজানের বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে বলে মনে করছেন স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা। পুলিশের এ ধরনের অনৈতিক কর্মকাণ্ডের রাজশাহীর গণমাধ্যমকর্মীসহ রাজনৈতিক ও সামাজিক মহলে চলছে তোলপাড়। চরম ক্ষোভ এবং অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন সাংবাদিক এবং রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ।

তবে পুলিশ দাবি করেছে, মিজানকে অনেক লোকজনের সামনে তল্লাশি করা হয়েছিলো। তখন অনেকের সামনেই তার পকেট থেকে ইয়াবা এবং মোটরসাইকেলে রাখা আমের ব্যাগ থেকে ফেনসিডিল বের করা হয়েছে।

মিজানকে আটকের প্রতিবাদ জানিয়ে চারঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফখরুল ইসলাম বলেন, সাংবাদিক মিজান এ সময়ের সাহসী সন্তান। তিনি দীর্ঘদিন থেকে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কলম সৈনিক হিসাবে অত্যন্ত সোচ্চার। পুলিশ যে ‘অপকর্মটি’ করেছে, তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। আমি এ ধরনের ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। পাশাপাশি সাংবাদিক মিজানের নামে যেন মামলা না দেয়া হয় তার দাবি জানাচ্ছি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে চারঘাট পৌরসভার সামনে দিয়ে মোটরসাইকেলযোগে রাজশাহী নগরীতে ফিরছিলেন সাংবাদিক মিজান। এসময় চারঘাট থানা পুলিশের এসআই শরিফুল ইসলামসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য তার পথরোধ করেন। এরপর মিজানকে জোরপূর্বক থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। থানায় নেয়ার পরে এসআই শরিফুল ওসি নজরুল ইসলামসহ অন্য পুলিশ সদস্যদের চিৎকার করে একটি ব্যাগ দেখিয়ে বলেন ফেনসিডিল ও ইয়াবা পাওয়া গেছে। এ সময় ব্যাগে ২২ বোতল ফেনসিডিল ও ৭০ পিস ইয়াবা পাওয়া গেছে বলে এসআই শরিফুল উল্লেখ করেন। এরপর মিজানকে ওসির কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়।

ঘটনা জানার পর চারঘাট প্রেসক্লাবের সভাপতি মোজাম্মেল হকের নেতৃত্বে সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে যান। এ সময় সাংবাদিক মিজান প্রেসক্লাবের সদস্যদের বলেন, আমাকে জোরপূর্বক এসআই শরিফুলসহ পুলিশের সদস্যরা থানায় তুলে এনছেন। এরপর পরিকল্পিতভাবে বলছেন, আমার কাছে ফেনসিডিল ও ইয়াবা পাওয়া গেছে। ইতোপূর্বে চারঘাট থানায় কর্মরত এসআই উৎপল ও শরিফুলসহ কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তার মাদক ব্যবসায়ীদের সাথে সংশ্লিষ্টতা, মামলা দিয়ে নিরীহ মানুষকে ফাঁসানোসহ বিভিন্ন অনিয়মের সংবাদ পরিবেশন করায় আমাকে পরিকল্পিতভাবে ফাঁসানো হয়েছে। বুধবার রাত সাড়ে ১০ টায় এ রিপোর্ট লেখার সময় সাংবাদিক মিজান চারঘাট থানায় ওসির কক্ষে আটক ছিলেন।

সাংবাদিক মিজানকে হয়রানির ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কাজী শাহেদ বলেন, মাদকবিরোধী অভিযান সরকারের মহৎ উদ্যোগ। এ ধরনের উৎদোগকে বিতর্কিত করতে কতিপয় পুলিশ সদস্য নিজেদের অপকর্ম আড়াল করতে গণমাধ্যমকর্মীদের কণ্ঠরোধ করতে চাইছেন। আর এরই ধারাবাহিকতায় সাংবাদিক মিজানকে মাদকদ্রব্য দিয়ে ফাঁসানো হয়েছে। এ ঘটনার সাথে জড়িত পুলিশ সদস্যদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। পাশাপাশি সাংবাদিক মিজানের মুক্তি দিতে হবে। অন্যথায় গণমাধ্যমকর্মীরা কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে বলে মন্তব্য করেন এ সাংবাদিক নেতা।

  1. অভিযোগ অস্বীকার করে চারঘাট থানার ওসি নজরুল ইসলাম বলেন, সাংবাদিক মিজানের ব্যাগ থেকে ফেনসিডিল ও ইয়াবা পাওয়া গেছে। তাকে পরিকল্পিতভাবে ফাঁসানোর অভিযোগ সঠিক না বলে দাবি করেন ওসি।

Next Post

রাজশাহীতে বিউটি পার্লারের জরিমানা।

বৃহস্পতি জুন ৭ , ২০১৮
নিজস্ব প্রতিবেদক: জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয় মহানগর এলাকার কয়েকটি বিউটি পার্লারে অভিযান চালানো হয়। এসময় ৬টি বিউটি পার্লারসহ মোট ৬টি প্রতিষ্ঠানকে ২৪ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। সহকারী পরিচালক হাসান-আল-মারুফ ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এর ধারা ৩৭ অনুযায়ী এ জরিমানা করেন। নগরীর হেতেম খাঁ রোডে […]

এই রকম আরও খবর

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links