আভা ডেস্ক : চট্টগ্রামের বিতর্কিত সাবেক ছাত্রলীগ নেতা নুরুল আজিম রনির বিরুদ্ধে সেই কোচিং সেন্টারের মালিককে অস্ত্রের মুখে তুলে নিয়ে ‘মিথ্যা স্বীকারোক্তি’ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। জোরপূর্বক ধারণকৃত স্বীকারোক্তির ৩টি ভিডিও পরে রনি তার ফেসবুকে ছেড়েছেন। এ ঘটনায় কোচিং সেন্টারের মালিক রাশেদ মিয়া বায়েজিদ বোস্তামি থানায় রনি ও তার ৪ সহযোগীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করলেও থানা পুলিশ অভিযোগকে মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করেনি। এর আগে গত ১৯ এপ্রিল নগরীর জিইসি মোড়ের অফিসে ঢুকে রাশেদকে চড়-থাপ্পড় দিয়ে ব্যাপক সমালোচিত হন রনি। উপর্যুপরি চড় মারার সেই ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে রনিকে ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার এবং এক চাঁদাবাজির মামলায় তাকে জেলে পাঠানো হয়।
বৃহস্পতিবার রাতে থানায় করা অভিযোগে রাশেদ মিয়া উল্লেখ করেছেন, টিউশন শেষে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুলের মোড়ে দাঁড়িয়ে ছাত্রের সঙ্গে নাশতা করছিলাম। এ সময় ৪টি মোটরসাইকেলে নুরুন্নবী সাহেদ, খোরশেদ আলম, মামুন ইসলাম ও রফিকুল ইসলাম সেলিমের নেতৃত্বে ১০-১২ জন অস্ত্রধারী আমাদের দু’জনকে ঘিরে ফেলে। পরে তারা মুঠোফোনে রনির সঙ্গে ফোনে কথা বলিয়ে দেয়। এ সময় রনি আমাকে বলে- ‘তোর কোনো সমস্যা হবে না, তুই ওদের সঙ্গে বাদশাহ মিয়া কমিউনিটি সেন্টারে যা। তা নাহলে ওদের সবার কাছে অস্ত্র আছে। ওরা তোকে খুনও করে ফেলতে পারে।’ পরে ওরা আমাকে প্রথমে মোটরসাইকেলে মুরাদপুরে বাদশাহ কমিউনিটি সেন্টারে নিয়ে যায়। সেখান থেকে ওরা আমাকে পাঁচলাইশের ওয়ার্ড কাউন্সিলর কফিল উদ্দিনের বাসায় নিয়ে যায়। পরে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে সাজানো বক্তব্য দেয়া এবং ১০০ টাকার স্ট্যাম্পে আগের মামলা প্রত্যাহারের কথা লিখে সেখানে স্বাক্ষর দিতে বাধ্য করা হয়। রাশেদ মিয়া শুক্রবার কান্নাজড়িত কণ্ঠে যুগান্তরকে সবই খুলে বলেন। তিনি বলেন, অস্ত্রের মুখে স্বীকারোক্তি নেয়ার পর ওরা আমাকে রাত ১২টার দিকে মোটরসাইকেলে ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল মোড়ে এনে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। পরে আমি দেখি তিনটি ভিডিও ওরা ফেসবুকে ছেড়েছে। বায়েজিদ থানার ওসি আতাউর রহমান খন্দকার যুগান্তরকে জানান, অস্ত্রের মুখে তুলে নেয়ার লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন রাশেদ মিয়া। তবে ঘটনার সত্যতা না পাওয়ায় এখনও তা মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হয়নি। রনির বিরুদ্ধে চাঁদাবাজিসহ আরও নানা অভিযোগ রয়েছে। এর আগে গত ৪ এপ্রিল চট্টগ্রাম বিজ্ঞান কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ জাহেদ খান বাদী হয়ে রনিসহ ছাত্রলীগের সাত নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে নগরীর চকবাজার থানায় ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে মামলা করেন। জাহেদ খানকে মারধর করারও একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়। জাহেদ খানের করা মামলায় নুরুল আজিম রনিকে ৪ জুন কারাগারে পাঠান আদালত। পরে ৭ জুন জামিন পান তিনি। এর আগে ২০১৬ সালে হাটহাজারী উপজেলার চাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ভোট চলাকালে একটি কেন্দ্র থেকে অস্ত্রসহ গ্রেফতার হয়েছিলেন ছাত্রলীগ নেতা রনি। এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও রনিকে পাওয়া যায়নি।
যুগান্তর