শেখ হাসিনা বলেন, দেশের জন্য যখন যেটা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে আমরা যথেষ্ট সচেতন এবং সেই পদক্ষেপ অনুযায়ী কাজ করছি।

আভা ডেস্কঃ পরিবর্তিত বিশ্বের সঙ্গে তাল মেলাতে সক্ষম একটি আধুনিক, সুদক্ষ ও পেশাদার সশস্ত্র বাহিনী গড়তে সরকারের দৃঢ়প্রত্যয়ের কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জন্যই আমরা সশস্ত্র বাহিনীর জন্য নতুন নতুন অস্ত্রশস্ত্র জোগাড় থেকে শুরু করে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা এবং বিভিন্ন জায়গায় নতুন করে সেনানিবাসও গড়ে তুলেছি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোববার সকালে মিরপুর সেনানিবাসের শেখ হাসিনা কমপ্লেক্সে ন্যাশনাল ডিফেন্স কোর্স (এনডিসি) ২০১৯ ও আর্মড ফোর্সেস ওয়ার কোর্স (এএফডব্লিউসি কোর্স) ২০১৯ এর গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এসব কথা বলেন।

জাতীয় সংসদের স্পিকার, মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, সংসদ সদস্য, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, তিন বাহিনীপ্রধান, মুখ্য সচিব, উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও অধ্যাপক, বিশিষ্ট নাগরিক, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত এবং মিলিটারি অ্যাটাচিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজের কমান্ড্যান্ট লেফটেন্যান্ট জেনারেল শেখ মামুন খালেদ অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ দেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ফোর্সেস গোল-২০৩০’র আলোকে একটি আধুনিক, পেশাদার ও প্রশিক্ষিত সশস্ত্র বাহিনী প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আমরা আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র জোগাড় এবং প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছি। তিনি বলেন, জাতির পিতা ১৯৭৪ সালে আমাদের সশস্ত্র বাহিনী পরিচালনার যে নীতিমালা করে যান, তারই আলোকে আমরা ফোর্সেস গোল ২০৩০ প্রণয়ন করেছি। আমাদের সশস্ত্র বাহিনীকে আরও শক্তিশালী ও যুগোপযোগী করতে সেটাই সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ।

শেখ হাসিনা বলেন, দেশের জন্য যখন যেটা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে আমরা যথেষ্ট সচেতন এবং সেই পদক্ষেপ নিচ্ছি। কারণ আমরা একটা পেশাদার ও প্রশিক্ষিত সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তুলতে চাই। তিনি বলেন, শান্তিরক্ষী মিশনে গিয়ে আধুনিক যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে যেন আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা চলতে পারে, যুদ্ধ সরঞ্জামের সঙ্গে যেন তাদের পরিচিতি থাকে এবং তারা যেন যে কোনো ক্ষেত্রে ভূমিকা পালনে দ্বিধাগ্রস্ত না হন, সেজন্য প্রশিক্ষণ ও আধুনিক যুদ্ধাস্ত্রের বিষয়ে আমরা সচেতন।

সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশে তিনি বলেন, এই দেশ আপনাদের এবং আমাদের সবার- এই চিন্তা থেকেই এদেশকে আমরা আগামীর পথে এগিয়ে নিয়ে যাব। প্রশিক্ষণ কোর্সে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন দেশের সদস্যদের উদ্দেশ্যে শেখ হাসিনা বলেন, আপনারাই হবেন আমাদের গুডউইল অ্যাম্বাসেডর। কারণ, আপনারা একটি বছর এখানে থেকে বাংলাদেশকে চিনেছেন, জেনেছেন, সবার সঙ্গে মিশেছেন এবং আপনারা দেখেছেন যে, বাংলাদেশের মানুষ সাধারণভাবে খুব আন্তরিক ও বন্ধুসুলভ। কাজেই, আপনারা আমাদের শুভবার্তা নিয়ে যাবেন নিজ দেশে। তিনি আরও বলেন, ‘সিকিউরিটি থ্রু নলেজ’ অর্থাৎ ‘জ্ঞানেই নিরাপত্তা’- ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজের এই মূলমন্ত্রে অনুপ্রাণিত হয়ে দেশকে স্থিতিশীল, টেকসই উন্নয়ন, আত্মনির্ভরশীলতা এবং সর্বোপরি গৌরবময় অবস্থানের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবসময় একটা কথা মনে রাখবেন, অনেক রক্ত দিয়ে এ স্বাধীনতা অর্জন। কোনোক্রমেই আমরা একে ব্যর্থ হতে দিতে পারি না। বাংলাদেশ হবে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ।

প্রায় ৮৫ জন সশস্ত্র বাহিনী, জনপ্রশাসন এবং বিদেশি সামরিক কর্মকর্তা ‘এনডিসি কোর্স-২০১৯’-এ এবং সশস্ত্র বাহিনীর ৩৮ জন কর্মকর্তা ‘এএফডব্লিউসি কোর্স-২০১৯’-এ অংশ নেন। ১৬টি দেশের সামরিক কর্মকর্তা এতে অংশ নেন। দেশগুলো হচ্ছে- চীন, মিসর, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, সৌদি আরব, কুয়েত, মালয়েশিয়া, নেপাল, নাইজেরিয়া, ওমান, পাকিস্তান, শ্রীলংকা, তানজানিয়া, যুক্তরাজ্য, মালি ও নাইজার।

আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে সমাদৃত এই ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ তার সরকারের হাত ধরে যাত্রা শুরু করেছিল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৮ সালে মাত্র ১৫ জন নিয়ে এর যাত্রা শুরু মাত্র দুই কোটি টাকা ব্যয়ে। তিনি বলেন, শুরুটা হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ। একবার শুরু করলে এটি একদিন বিশ্বব্যাপী খ্যাতি অর্জন করবে এবং আজকে সেটাই আমরা দেখতে পাচ্ছি।

সশস্ত্র বাহিনীকে আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার প্রতীক আখ্যায়িত করে শেখ হাসিনা বলেন, এ দেশের জনগণের সেবা করাটা আমাদের সবারই দায়িত্ব। এই সাধারণ মানুষের অর্থেই তো আমাদের বেতন-ভাতা সবকিছু। কাজেই তাদের জীবনযাত্রাটা সুন্দর করাই আমাদের লক্ষ্য।

বাংলাদেশকে উন্নত সমৃদ্ধিশালী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য সরকার একটি পরিকল্পিত উন্নয়নের পথে দেশকে পরিচালিত করছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়েছি। আশু করণীয় কী- সেটাও আমরা ঠিক করেছি এবং ভবিষ্যতের বাংলাদেশকে কীভাবে গড়ে তুলব, সে পরিকল্পনাও আমরা প্রণয়ন করেছি।

উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশ গ্র্যাজুয়েশন লাভ করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২০২১ সালে স্বাধীনতার জয়ন্তীতে দেশকে মধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সাল নাগাদ দক্ষিণ এশিয়ার একটি উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলব।

শেখ হাসিনা বলেন, যে দুঃখ ও দারিদ্র্য আমরা দেখেছি, ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে তা যেন আর দেখতে না হয়, সেজন্য আমরা একটি সুন্দর বাংলাদেশ গড়ে রেখে যেতে চাই এবং উন্নয়নের এই ধারাবাহিকতা যেন অক্ষুণ্ণ থাকে, সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।

পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত এনডিসি ও ডিএসসিএসি’র পরিচালনা পর্ষদের যৌথ সভায়ও যোগদান করেন।

যুগান্তর

 

Next Post

‘বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক স্বাভাবিক। এ সম্পর্ক প্রভাবিত হবে না। এ সম্পর্ক মধুর, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ।

সোম ডিসে. ১৬ , ২০১৯
আভা ডেস্কঃ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন বলেছেন, বাংলাদেশের নাগরিক নয়, এমন কেউ যদি ভারত থেকে দেশে প্রবেশ করে, তবে তাদের ফিরিয়ে দেয়া হবে। ভারতে অবৈধভাবে যদি বাংলাদেশিরা থাকেন তাদের তালিকা চাওয়া হবে। রোববার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারতের সঙ্গে তুলনায় আমাদের অর্থনৈতিক অবস্থা […]

এই রকম আরও খবর

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links