নিজস্ব প্রতিনিধিঃ রাজশাহীতে শিশু ও তার মাকে অপহরণের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে এক এসআই ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে। মোবাইল ফোনের কল রেকর্ডসহ তদন্তে উঠে এসেছে ওই এসআই ও তাঁর স্ত্রীর নাম।
এ নিয়ে পুলিশের ভিতরেই ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এপিবিএনে কর্মরত ওই এসআই এবং তাঁর স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করতে এরই মধ্যে পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তার কাছে অনুমতি চেয়েছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।
রাজশাহী নগরীর বোয়ালিয়া থানায় দায়েরকৃত ওই মামলার তদন্তকারী গোলাম মোস্তফা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে আসামিকে গ্রেপ্তারের স্বার্থে তিনি তাঁর নাম প্রকাশ না করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত মার্চ রাজশাহী নগরীর শালবাগান এলাকা থেকে সবনাম সুলতানা পাখি নামের এক গৃহবধূ তাঁর ৮ বছরের মেয়েসহ নিখোঁজ হোন। এ ঘটনার পরে ওইদিনই গৃহবধূর স্বামী আবুল কালাম আজাদ বাদী হয়ে নগরীর বোয়ালিয়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে (অপহরণ) একটি মামলা দায়ের করেন। এই মামলা দায়েরের পর পুলিশ ভিকটিমকে উদ্ধারে মাঠে নামে।
মামলায় বাউল শিল্পী ডলার, তাঁর পরিচিত সাউফুর রহমান ডেভিড ও ডেভিডের স্ত্রী নুপুরকে আসামি করা হয়। এরপর ভিকটিম পাখির মোবাইলের কললিস্ট ধরে আসামিদের গ্রেপ্তারে মাঠে নামে। তাদের মধ্যে ডলার আত্মসমর্পণ করেন ও অন্য দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
মামলার নথিসূত্র মতে, ডলার, ডেভিড ও নুপুরকে পুলিশকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করে। কিন্তু তাদের নিকট থেকে তেমন কোনো তথ্য আদায় করতে পারেনি। এই ঘটনার সঙ্গে বাউল শিল্পী ডলার জড়িত নাই-এমনটিও প্রায় নিশ্চিত হয় পুলিশ। তবে ভিকটিমের কললিস্ট ধরে পুলিশ নিশ্চিত হয়, ওই ঘটনার সঙ্গে রাজশাহী নগরীর রাজপাড়া থানার সাবেক এক এসআই ও তাঁর স্ত্রী জড়িত রয়েছে।
এরপর পুলিশ ওই এসআইএয়ের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে দফায় দফায় কথা বলেন। কিন্তু তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যেতে শুরু করেন। এমনকি তাঁর স্ত্রীও বিষয়টিও এড়িয়ে যেতে থাকেন। অথচ ওই পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রীসহ তাঁর সঙ্গে ভিকটিম পাখি অপহরণের দিন থেকে শুরু করে তার আগে ও পরে সবচেয়ে বেশি যোগাযোগ হয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
তবে ভিকটিমিরে মোবাইল ফোন এখন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। ফলে ভিকটিমকে উদ্ধার করা যাচ্ছে না।
নগরীর বোয়ালিয়া থানার একটি বিশ্বস্ত সূত্র নিশ্চিত করেছে, এই ঘটনার পরে মামলার তদন্তের স্বার্থে ওই এসআই ও এবং তাঁর স্ত্রীকে গ্রেপ্তারের জন্য বোয়ালিয়পা থানা থেকে এরই মধ্যে পুলিশের উর্দ্ধথন কর্তৃপক্ষের কাছে অনুমতিও চাওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে এসআই’র স্ত্রীকে গ্রেপ্তারেরও নির্দেশ দিয়েছেন নগর পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা। সে অনুযায়ী ব্যস্থা নেওয়া হচ্ছে বলেও জানা গেছে।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘এই মামলায় একজন পুলিশ কমকর্তা ও তাঁর স্ত্রী জড়িত রয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। আমরা তাদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চালাচ্ছি। দুই-একদিনের মধ্যেই হয়তো ওই পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রী গ্রেপ্তার হতে পারেন। তবে গ্রেপ্তারের আগে তদন্তের স্বার্থে তাদের নাম প্রকাশ করা যাচ্ছে না।’
এস/এল