আভা ডেস্কঃ লাদাখ সীমান্তের গালোয়ান উপত্যাকায় চীন ও ভারতের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়েছে। সোমবার রাতে প্রতিবেশি দেশদুটির মধ্যে এ সংঘাত বাধে। এতে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ২০ জওয়ান নিহত হন। ভারতের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, সংঘর্ষে উভয় দেশের সেনা সদস্যরা হতাহত হন। এছাড়া ৪৫ চীনা সদস্য নিহত হয়েছেন। তবে, চীনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে বিস্তারিত কোনো কিছু জানানো হয়নি।
আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম গার্ডিয়ান বলছে, লাদাখের গালোয়ান উপত্যাকায় ভারতীয় সেনাবাহিনী টহল দেয়ার সময় চীনা সেনাবাহিনীর সামনে সংকীর্ণ গিরিপথের সামনে পৌঁছায়। এ সময় ভারতীয় সেনা কর্মকর্তাকে ধাক্কা মেরে নদীর তীরে ফেলে দিলে উভয় দেশের সেনা সদস্যদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। দুই দেশের কমপক্ষে শতাধিক সেনা শারিরীক লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় ঘটনাস্থলে সেনা কর্মকর্তাসহ তিন ভারতীয় সেনা নিহত হন। পরে তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নিচে নেমে আসায় আরও আহত ১৭ সেনা নিহত হন।
এদিকে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভি দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে জানায়, ৬ জুন চীন-ভারতের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের সামরিক বৈঠক হয়। এতে অধিকৃত ভারতীয় ভূখণ্ড পর্যায়ক্রমে ছেড়ে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় চীন। সেই কাজ পরিদর্শনের জন্য সেখানে গিয়েছিলেন নিহত ভারতীয় কর্নেল বিএল সন্তোষের নেতৃত্বে শতাধিক জওয়ান।
পরিদর্শনে থাকা দলটি গালোয়ান উপত্যাকায় গিয়ে দেখতে পান সেখানে তাঁবু গেড়ে বসে আছেন চীনা সীমান্ত রক্ষীরা। খবরে বলা হয়, তাদের তাঁবু থেকে বের করে সেগুলো ভাঙতে থাকেন ভারতীয় সেনারা। এ ছাড়া কিছু কিছু তাবুতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। এরপরই কাঠের তক্তা, লোহার রড, কাটা তার জড়ানো বাটামসহ চীনা বাহিনীর আরও সেনা জড়ো হতে থাকে। শুরু হয় দু’পক্ষের হাতাহাতি ও সংঘর্ষ।
এর পরেই ওই এলাকায় উভয়পক্ষ সেনা উপস্থিতি বাড়ায়। কোনো রকম গুলি ছাড়াই বাটাম, রড, কাঁটাতার জড়ানো তক্তা নিয়ে হামলা চালায় একে অপরের ওপর। টানা ছয় ঘণ্টা ধরে চলে সংঘর্ষ। এতে অনেক গালোওয়ান নদীতে পড়ে ভেসে যান। অনেকে আহত হলেও, হিমাঙ্কের নিচে তাপমাত্রা নেমে যাওয়ায় মৃত্যু হয় অনেকের। ভারতের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, সংঘর্ষে তাদের ২০ সেনা নিহত হয়েছে। পাশাপাশি ৪৫ চীনা সেনা নিহতের দাবি করা হয়।