মোহনপুরে অবৈধ ইটভাটায় পুড়ছে কাঠ

মোহনপুর প্রতিনিধিঃঃ রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার মধ্যে অবৈধভাবে চলছে ইটভাটা। গাছের খড়ি স্তূপ করে রেখে পোড়ানো হচ্ছে এসব ইটভাটায়।

সরজমিনে মোহনপুর উপজেলার ঘাসিগ্রাম ইউনিয়নের ঝালপুকুর গ্রামের নিকটবর্তী স্থানে কৃষি জমির উপর অবস্থিত আজিজুল হক সহ কয়েকজন সুবিধাভোগী ব্যক্তির অবৈধ ইটভাটা। দেশের সব অবৈধ ইটভাটা ও ইটভাটার জ্বালানি হিসেবে কাঠের ব্যবহার হাইকোর্ট সাত দিনের মধ্যে বন্ধের নির্দেশ দিলেও তোয়াক্কা করছেন না এই আজিজুল দিং। তাদের ইটভাটার চারিদিকে ফলজ (আম) গাছ ছাড়াও শত শত বিঘা জমিতে আলু চাষ শুরু করেছে সাধারণ কৃষকরা। অপরদিকে সেই সমস্ত কৃষি জমির ফসলের মাঝখানে অবৈধ প্রন্থায় মাটি সংগ্রহ করে পাহাড় গড়ে তা দিয়ে বানানো হচ্ছে নিম্ন মানের ইট। আর এ ইট পুড়াতে আশপাশ হতে নানান কৌশলে গাছ কেটে সংগ্রহ করা হচ্ছে গুলসহ অসংখ্য ডালপালা। তাদের এমন কাঠের ব্যবহারে পরিবেশ নষ্ট করে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে ঝালপুকুর আদিবাসি পাড়া, চক-বেলনা, বেলনা, ভড়ভড়াইল, আত্রাই, পারিলাডাঙ্গা গ্রাম সহ অসংখ্য গ্রামের জনসাধারণ। ভাটার সন্নিকটে অবস্থিন বেলনা টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইন্সটিটিউট এবং আত্রাই অগ্রণী ডিগ্রী কলেজের শতশত শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ কেশরহাট টু কামারগাঁ রোডের যাতায়াত করা যাত্রী ও পথচারীরা। এই ইটভাটার কোন নিদিষ্ট নাম খোঁজে না পাওয়া গেলেও বানানো ইটে এএমএসএস ইংরেজি অক্ষরের লিখা দেখা গেছে।

কোন নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে প্রশাসনের চোঁখ ফাঁকি দিয়ে এসব ইটভাটা চলা নিয়ে ইটভাটা মালিক আজিজুল হক বলেন, ডাম চিন্নির ভাটার কোন অনুমোদন সরকারি ভাবে পাওয়া যায় না। অনেক আগে প্রশাসন আমাদের ইটভাটায় অভিযান চালিয়েছে, এবার এখনো প্রশাসন কিছু বলেনি। শুধু আমাদের ভাটায় কাঠ পুড়ানো হয় না বরং অনেক ভাটায় কাঠ-খড়ি পুড়িয়ে ইট তৈরি করা হচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসীর অনেকেই বলেন, ভাটাটির আকার এমন হওয়ায় আমরা হতবাক। টিন আর ডামের সিট ব্যবহার করে সামান্য কয়েক ফুট উচু দিয়ে ইটভাটার ধোয়া ছড়ানোর কারনে পরিবেশ দূষিত হওয়ার পাশাপাশি আমাদের রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। এমন অনবিরত ধোয়ার কারনে আমদের শরীরে অচিরেই ফুসফুসের সমস্যায় শ্বাসকষ্ট, লিভার অকেজ, কাশি, টিবি ও কিডনির রোগ এবং ক্যনসারসহ নানান মরনব্যধি রোগে ভুগতে হবে। আমরা এমন অবৈধ ভাটা চিরতরে বন্ধ চাই। এছাড়া ভবিষ্যৎ প্রজন্ম নিয়ে আমরা বিপাকে পড়বো। এখন পর্যন্ত যেহেতু প্রশাসন যেখানে ব্যবস্থা নিচ্ছে না সেখানে আমরা কিভাবে প্রতিরোধ করবো। এমন কি পত্রিকায় আমাদের নাম প্রকাশ করলেও আমরা বিপদে পড়বো।

ঘাসিগ্রাম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আফাজ উদ্দিন বলেন, আমাদের ইউনিয়নে আমার চেয়ে উপরের দ্বায়িত্ব সম্পূর্ণ ব্যক্তিরা রয়েছেন। সুতরাং আমি এবিষয়ে মন্তব্য করতে চাই না।

এ বিষয়ে ঘাসিগ্রাম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগেন সাধারণ সম্পাদক মোবারক আলী বলেন, সরকারের অনুমিত নিয়ে নিয়ম মেনে যদি কেউ ইটভাটা চালায় তাহলে আমার কোন আপত্তি নাই। তবে এভাবে ইটভাটা চালানোর আইনগত ভিত্তি আছে বলে আমি মনে করি না। সরকারের নির্দেশ না মেনে কীভাবে এ ধরণেন ইটভাটা চলছে আমি বলতে পারব না।’ তবে আমি এমন ঝুকিপুর্ণ অবৈধ ইটভাটা বন্ধ চাই।

এবিষয়ে মোহনপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাবিহা ফাতেমাতুজ্ জোহরা বলেন, আমি যোগদানের পর ইটভাটায় অভিযানে এখনো যাইনি, তবে অচিরেই অবৈধ ইটভাটায় অভিযান পরিচালনা করা হবে। নিয়মের বাইরে কোনো ইটভাটা চলতে দেওয়া যাবে না।

এবিষয়ে রাজশাহী পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক  মোঃ কবির হোসেন বলেন, রাজশাহী জেলার বিভিন্ন উপজেলায় অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযান চালু রয়েছে। জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Next Post

নতুন নামে আসতে পারে গুড় : পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী'র সাথে ব্যবসায়ীদের মতবিনিময়

শনি ডিসে. ১০ , ২০২২
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ রাজশাহী বাঘা উপজেলার আড়ানীতে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ রাজশাহী জেলা কার্যালয়ের আয়োজনে গুড় উৎপাদক, ব্যবসায়ী ও জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক অবহিতকরন সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (১০ ডিসেম্বর) সকাল ১১ টায় আড়ানী মনোমহিনী উচ্চ বিদ্যালয় স্কুল হল রুমে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।  উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আখতার […]

এই রকম আরও খবর

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links