নিজস্ব প্রতিবেদক, নাটোর:
অবৈধ পুকুর খনন বন্ধে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) তৎপর থাকলেও এবার নাটোরের জেলা প্রশাসক শাহিনা খাতুন নিজেই পুকুর খনন বন্ধে মাঠে নেমেছেন। বুধবার বিকেল তিনটা থেকে অভিযানের প্রথম দিনে নাটোর সদর এবং বাগাতিপাড়া এই দুটি উপজেলায় জেলা প্রশাসক শাহিনা খাতুনের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় অবৈধ ভাবে পুকুর খনন করার সময় পরিত্যাক্ত অবস্থায় তিনটি এসকেভেটর জব্দ করা হয়।
জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে বিশেষ অভিযানের অংশ হিসেবে বুধবার দুপুর তিনটার সময় থেকে ৫টি গাড়ী নিয়ে অভিযানে বের হন জেলা প্রশাসক শাহিনা খাতুন। অভিযানের শুরুতে নাটোর সদর উপজেলার তেলকুপি ফকির পাড়া রফিকুল ইসলামের পুকুরে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসময় অভিযানের খবর পেয়ে পালিয়ে যান অবৈধ ভাবে পুকুর খননের সাথে জড়িতরা। পরে পরিত্যাক্ত অবস্থায় একটি এসকেভেটর জব্দ করা হয়।
এছাড়া অপর অভিযানে বাগাতিপাড়া উপজেলার কালির মোড় লুৎফর রহমান এবং বিল গোপাল হাটি এলাকার বাসিন্দা রাজশাহী টিটিসি কলেজের শিক্ষক খাদেমুল ইসলামের পুকুরে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসময় পরিত্যাক্ত অবস্থায় আরো দুটি এসকেভেটর জব্দ করা হয়। বিল গোপাল হাটি এলাকার বাসিন্দা রাজশাহী টিটিসি কলেজের শিক্ষক খাদেমুল ইসলাম রাজশাহীর অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনারের কাছে মৌখিক ভাবে পুকুর খননের অনুমতি পেয়েছেন বলে দাবী করেন। এসময় সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) শামীম ভুঁইয়া চ্যালেঞ্জ করলে তিনি ঔদ্বধ্যপূর্ণ আচরণ করেন।
অবৈধ পুকুর খননের বিরুদ্ধে বিশেষ এই অভিযানে অতিরিক্তি জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মোহাম্মাদ সাইদুজ্জামান, নাটোর সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার জেসমিন আক্তার বানু, সহকারী কমিশনার (ভূমি) শামীম ভুঁইয়া, সহকারী কমিশনার রুলি বিশ্বাস, আদনান চৌধুরি, সুমিত সাহা, পুলিশ প্রশাসন সহ গণমাধ্যম কর্মীরা অংশগ্রহন করেন।
নাটোর সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার জেসমিন আক্তার বানু বলেন, অবৈধ পুকুর খননের বিরুদ্ধে আমি এবং এসিল্যান্ড প্রতিনিয়ত অভিযান পরিচালনা করে যাচ্ছি। পুকুর খননের জন্য এসকেভেটর এর ব্যাটারি পর্যন্ত জব্দ করা হয়েছে। আগে যে পরিমান পুকুর খনন হচ্ছিল, এখন অনেকটা কমে এসেছে। তারপরও আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এবষিয়ে নাটোরে জেলা প্রশাসক শাহিনা খাতুন সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, কিছু অসাধু লোকজন আবাদি জমি কেটে অভৈধ ভাবে পুকুর খনন করে আসছে। সংশ্লিষ্ট উপজেলার ইউএনও এবং এসিল্যান্ডরা পুকুর খননের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান করে আসছে। তারপরও কিছু কিছু এলাকায় প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে পুকুর খনন করছে। এবার আমরা অবৈধ পুকুর খনন বন্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করেছি। কোন ভাবেই কেউ যেন আবাদি জমি নস্ট করে পুকুর তৈরী করতে না পারে সেজন্য আমি নিজেই মাঠে নেমেছি। পুকুর খনন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।