সেবা দিতে এসে বিপাকে ডাঃ ফেরদৌস, ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে ।

আভা ডেস্কঃ কারোনা মহামারীর সময় দেশের মানুষের সহায়তার জন্য যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে এসেছেন ডা. ফেরদৌস খন্দকার। তবে রোববার বিকালে বিমানবন্দরে অবতরণের পর বাড়িতে ফিরতে পারেননি তিনি।

তার অ্যান্টিবডি পজিটিভ হওয়ায় তাকে যেতে হয়েছে প্রতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে। তাকে রাখা হয়েছে হজ ক্যাম্পের পাশে ড্রাগ ট্রেনিং সেন্টারে।

এদিকে বিমানবন্দরে নেমেই বিপাকে পড়েছিলেন বলে অভিযোগ করেছেন ডা. ফেরদৌস। তাকে বিমানবন্দর থেকে প্রথমে বের হতে দেয়া হয়নি বলেও অভিযোগ তার।

শাহজালাল বিমানবন্দরের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহরিয়ার সাজ্জাদ আজ সোমবার সংবাদমাধ্যমকে বলেন, গতকাল বিকালে কাতার এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে বিমানবন্দরে আসেন ডা. ফেরদৌস খন্দকার। আমরা জেনেছি, আগে তার করোনা হয়েছিল। তার অ্যান্টিবডিও পজিটিভ ছিল। তার মাধ্যমে যেন কারো আক্রান্ত হওয়ার সুযোগ না থাকে, সেজন্য তাকে ড্রাগ ট্রেনিং সেন্টার প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। সেখানে তার ১৪ দিন থাকার কথা রয়েছে।

‘এখন তিনি চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে আছেন। সেখানে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে। তারপর তাকে ছাড়া হবে কি হবে না, সেই সিদ্ধান্ত চিকিৎসকরা নেবেন।’

কোয়ারেন্টিনে রাখা প্রসঙ্গে ডা. ফেরদৌস বলেন, আমার ব্লাড টেস্টে এসেছে অ্যান্ডিবডি পজিটিভ, আমার কিন্তু কোয়ারেন্টিনের প্রয়োজন নেই। আমি কাকে বোঝাব বলুন। এই ল্যান্ডের হয়তো এটাই নিয়ম, আমি শুধু বলব আমি এসেছি। আমি এসেছি, আমার মতো এই দুটি হাত না থাকলেও হয়তো কিছু হবে না। এরকম অজস্র হাজার সহস্র ফেরদৌস খন্দকার আপনাদের মাটিতে আছে। তাও বুকের ভেতর সে ভালোবাসা নিয়ে আমি এসেছি। আমাকে ভালোবাসা না দেন, ধিক্কার না দেন। আমি একজন মানবদরদী, ডাক্তার হয়ে, মানুষ হয়ে প্রধানমন্ত্রীর হাতকে শক্ত করব। বিরুদ্ধচারণ হচ্ছে, আমি এই ভূখণ্ডে থেকে ফাইট করব, আপনাদের পাশে দাঁড়াব, আমৃত্যু আপনাদের সঙ্গে আছি। আশা করি আপনারাও আমাকে গ্রহণ করবেন সেভাবে।

নিউইয়র্ক প্রবাসী বাংলাদেশি ডাক্তার ফেরদৌস খন্দকার ম্যানহাটনের প্রাচীনতম মাউন্ট সিনাই হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ।

করোনাকালে মৃত্যুপুরী নিউইয়র্কে নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঘরে ঘরে গিয়ে করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দিয়ে ‘সুপার হিরো’ বনে যান ‌ডা. ফেরদৌস। বাংলাদেশে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা দিতে রোববার তিনি দেশে ফেরেন।

তবে এয়ারপোর্ট এসে বিপাকে পড়েন ‌ডা. ফেরদৌস। তাকে বিমানবন্দর থেকে প্রথমে বের হতে দেয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন তিনি।

এমনকি বাংলাদেশের ফ্রন্টলাইনের যোদ্ধা, চিকিৎসক ও নার্সদের জন্য আনা ৮টি সুটকেসভর্তি মাস্ক, গ্লাভস ও পিপিই বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ রেখে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেন এই প্রবাসী চিকিৎসক। ট্যাক্স দিতে না পারায় সেগুলো রেখে দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

ডা. ফেরদৌস খন্দকার আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে ফেসবুকে লাইভে এসে বলেন, ‘আমি আমার প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ থেকে বলছি। আশা করি, আপনারা ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি। গতকাল বিকালে একবুক আশা নিয়ে এসেছিলাম আপনাদের পাশে দাঁড়াব বলে। আসার পর বিমানবন্দরে বুঝতে পারলাম যে, আসলে কিছু দুষ্ট মানুষ আমার পেছনে লেগেছে। যেহেতু আমার নামের পেছনে খন্দকার আছে, তাই তারা রাষ্ট্রময় করতে চেয়েছে আমি খুনি খন্দকার মোশতাকের আত্মীয়। বলতে চেয়েছে, খুনি রশিদেরও আত্মীয়। এগুলো নিয়ে আমি খুব বেশি চিন্তা করতে চাই না। এগুলো নিয়ে কথা বলতেও চাই না।’

তিনি বলেন, ‘আপনারা ভালো আছেন প্রিয় দেশবাসী? যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি কমিউনিটির পাশে আমি ছিলাম। প্রথম দিকে কিছু জটিলতা ছিল। পরে মানুষ সেটা সাদরে গ্রহণ করেছেন। তাই আমি এক বুক আশা নিয়ে আপনাদের পাশে এসেছি। আপনাদের পাশে থাকব। এই ক্রান্তিকালে আপনারা আমায় গ্রহণ করবেন তো? আপনারা প্রস্তুত? আমিও আছি কিন্তু আপনার পাশে।’

সঙ্গে নিয়ে আসা সুটকেস রেখে দেয়া হয়েছে অভিযোগ করে ফেরদৌস বলেন, ‘প্রায় আটটি সুটকেস নিয়ে এসেছিলাম। সেখানে মাস্ক, গ্লাভস ও পিপিই এনেছিলাম ফ্রন্টলাইনের যোদ্ধা, চিকিৎসক ও নার্স ভাই-বোনদের দেব বলে। করোনার এই ক্রান্তিকালে এগুলোর নাকি ট্যাক্স দিতে হবে, রেখেই দিল। সঙ্গে আনতে পারিনি। আপনাদের কেউ যদি থাকেন, ছাড়িয়ে নিয়ে যান। ফ্রন্টলাইনের যে কাউকে দিতে পারেন, আমার কোনো দাবি নেই। আমি এসেছি আপনাদের পাশে। আমি আমার কাজটুকু করেছি। আপনাদের মধ্যে কেউ যদি দায়িত্বপ্রাপ্ত থাকেন, বাকি কাজটুকু করবেন। যেকোনো একটি হাসপাতালে দিয়ে দেবেন, আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ। আগামী পরশু থেকে আমি করোনা নিয়ে কথা বলব।’

Next Post

২৪ ঘন্টায় ৪২ জনের মৃত্যু এ নিয়ে মোট করোনায় মৃত্যু ৯৩০ জন ।

সোম জুন ৮ , ২০২০
আভা ডেস্কঃ গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও ৪২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মোট মৃত্যু হয়েছে ৯৩০ জনের। নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ২৭৩৫ জন। সব মিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৮ হাজার ৫০৪ জন। সোমবার (০৮ জুন) দুপুর আড়াইটার দিকে করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত অনলাইন স্বাস্থ্য বুলেটিনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক […]

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links