আভা ডেস্ক : পড়ন্ত বিকেল। রাজধানীর সেগুনবাগিচা এলাকার একটি গলিপথ। পথচারীর আনাগোনাও কম। যাত্রীবিহীন রিকশার সারি। গলিপথের পাশে এক তরুণের দিকে হাত বাড়াচ্ছেন রিকশা চালকেরা। দু’একজন পথচারীও তাদের সঙ্গে শামিল হয়েছেন। তরুণের কাছে কী যেন নিয়ে কোমরে গুঁজছেন তারা। এরপর দ্রুতই চলে যাচ্ছেন, তারাই বলছেন নেও নেও, দ্রুত পালাও…।
নির্জন গলিতে হঠাৎ সারি সারি খালি রিকশার জটলা দেখে চোখ আটকে গেল। বৃহস্পতিবার (০৬ সেপ্টেম্বর) বিকেল পৌনে চারটার দিকে ওই গলিতে কয়েক মিনিট অবস্থান করে জানা গেল এটি একটি মাদকের হাট!
কয়েক মিনিট পর দ্বিতীয় পর্যায়ে আবারো সারি সারি খালি রিকশা আসতে লাগলো ওই গলিতে। আবারও ওই তরুণ। নেভি-ব্লু জিন্সের প্যান্টের সঙ্গে মেরুন রঙের পাঞ্জাবি পরা ওই তরুণ পকেট থেকে কাগজে মোড়ানো প্যাকেট বের করছেন, সেগুলো নিচ্ছেন রিকশাচালকেরা, সঙ্গে আছেন আরও দু’একজন যুবক।
প্যাকেট নিয়ে সামনে যাওয়ার সময় জিটিভির গলিতে এক রিকশাচালকের সঙ্গে কথা হলো। তিনি বললেন, শুকনা, গাঁজা। দাম একশ টাকা প্যাকেট। প্রতিদিনই কিনি, সিগারেটের সঙ্গে মিশিয়ে খাই। খাওয়ার অভ্যাস হয়ে গেছে, কী করবো বলেন?
মাদকের কেনাবেচা হচ্ছে- জানতে পেরে মোবাইল ফোনে ভিডিও করা শুরু করতেই আরও কয়েক প্যাকেট বিক্রি করে সটকে পড়লো ওই তরুণ। রিকশা চালকদেরও বললো যাও যাও।
আবাসিক এলাকার ওই গলিতে তখন একটি মাত্র দোকান খোলা, ইলেকট্রিক-মেকানিক্যালের কাজ করা হয় সেখানে। দোকানের একজন কর্মচারীর সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হওয়া গেল এখানে প্রতিদিন গাঁজা বিক্রি করা হয় এভাবে।
প্রতিবাদ করেন না কেন? জানতে চাইলে ওই কর্মচারী বলেন, ‘যান হারাতে চাই না। এদের সঙ্গে বড় চক্র জড়িত’।
ওই কর্মচারীর সঙ্গে আলাপচারিতার মধ্যে একজন প্রাইভেট কারের চালক পার্কিং করা গাড়ি থেকে বের হয়ে বললেন, এদের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহসও কারো নাই।
ওই চালক আরো বললেন, ভাই ভিডিও করেছেন, আপনাকে ওই ছেলেটি মার্ক করেছে।
সাংবাদিক পরিচয় জেনে তিনি আরো বললেন, ভাই চলে যান, বলা যায় না বিপদও হতে পারে। ওদের পেছনে বড় শক্তি আছে।
সতর্ক করে বেশিক্ষণ সেখানে দাঁড়াতে বারণ করেন ওই প্রাইভেটকার চালক।
https://youtu.be/1krwmzC6daQ
বাংলানিউজ