রাজশাহী সুগার মিলস লিমিটেডে আয় বহির্ভূত ব্যয়, সেই ব্যয়ে নানা অনিয়ম

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ রাজশাহী জেলার একমাত্র ভারী রাষ্ট্রায়ত্ত্ব শিল্প প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের অধীনস্থ রাজশাহী সুগার মিলস্ লিমিটেড বর্তমানে অত্যন্ত লাজুক অবস্থায় রয়েছে, যা বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় বিগত কয়েক বছর যাবৎ প্রকাশিত হলেও এখনও এই প্রতিষ্ঠানটিতে দুর্নীতি বন্ধ হয়নি। উক্ত প্রতিষ্ঠানটিতে প্রায় ৮০০ থেকে ৯০০ জন শ্রমিক কর্মচারী এবং প্রায় ৩৮ জন কর্মকর্তা কর্মরত আছেন। প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মরত শ্রমিক-কর্মচারী এবং কর্মকর্তাদের থাকার আবাসন ব্যবস্থা রয়েছে। ভবনগুলো পুরোনো হলেও বিভিন্ন সময়ে প্রতিষ্ঠানটিতে পণ্য ও সেবা প্রকল্পের অনুদানের টাকা হতে মেরামত কার্যক্রমের মাধ্যমে তাদের থাকার সুব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, যে সকল শ্রমিক-কর্মচারীদের নামে বাসা বরাদ্দ রয়েছে তাদের বেতন হতে বাড়ি ভাড়া কর্তন করা হলেও প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তাদের বাসা ভাড়া কর্তন করা হয় না। প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন বাসায় কর্মকর্তারা  বসবাস করলেও তাদের বাসাগুলো পরিত্যাক্ত বাসা হিসেবে প্রায় ১ যুগ যাবৎ দেখিয়ে আসছেন।  এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে আরও জানা যায়, রাজশাহী সুগার মিলস্ লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালকের নির্দেশে প্রতিমাসে অর্থ বিভাগ হতে পরিত্যাক্ত বাসায় বসবাসরত কর্মকর্তাদের বাড়ি ভাড়া ভাতা সহ বেতন প্রদান করছেন এবং সকল কর্মকর্তার নিকট হতে উক্ত বাড়ি ভাড়া বাবদ ভাতার কিছু অংশ (কর্তনকৃত বাড়ি ভাড়া ভাতার ৫০%) প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহজাহান কবির প্রতিমাসেই আত্মসাৎ করছেন। এই বিষয়ে সাম্প্রতিক সময়ে অডিটে ধরা পড়লেও প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবরের মতো অডিটরদের ঘুষ দিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার মাধ্যমে সরকারি অর্থ/সম্পত্তি আত্মসাৎ বা ক্ষতিসাধন করে আসছেন।

এ বিষয়ে তার কাছ থেকে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, কর্মকর্তাদের জন্য বরাদ্দকৃত বাসাগুলো পরিত্যাক্ত হলেও বসবাসরত কর্মকর্তারাই নিজ খরচে ঠিক করে বাসাগুলোতে থাকছেন। আর প্রতিমাসের বেতনে সঙ্গে তাদের বাড়ি ভাড়া বাবদ ভাতা প্রদানের বিষয়টি তিনি স্বীকার করেন ও ভুল হয়েছে বলে জানান। অন্যদিকে প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত মহাব্যবস্থাপক বিষয়টি এড়িয়ে যান। রাষ্ট্রায়ত্ব প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে এ ধরনের কর্মকান্ড কোনভাবেই কাম্য নয় এবং চাকুরি বিধির/নীতিমালার পরিপন্থি। যেখানে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বর্তমান দুর্নীতির বিষয়ে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন এবং রাষ্ট্রায়ত্ত্ব শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো বাঁচানোর জন্য বর্তমান সরকার বদ্ধ পরিকর হলেও এ ধরনের কিছু দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের জন্য প্রতিষ্ঠানগুলো দিন দিন বড় অংকের লোকসান গুনছে।

শুধুমাত্র বাসা ভাড়া বরাদ্দ  বা আত্নস্বাত এর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় সেখানকার উদ্ধর্তন অফিসাররা। তাঁরা জড়িয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির উন্নয়নমুলক কাজে নামে নানা অনিয়ম দুর্নীতিতে। সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটির প্রকৌশলীরা নানা সংষ্কার ও মেরামত কাজে লোপাট করছেন। কমিশন ভিত্তিক আরএফকিউ এর মাধ্যমে পছন্দের ঠিকাদারদের কাজ দিচ্ছেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রকৌশলীরা।

২০২১-২০২২ অর্থ বছরে প্রায় ১৪৪ কোটি টাকা অনুকুলে ১০১ কোটি ৩৫ লাখ ৬২ হাজার ব্যয় করেছেন সুগার মিলস কতৃপক্ষ। কতৃপক্ষ বলছেন উৎপাদন খরচ ১০১ কোটি ৩৫ লাখ ৬২ হাজার টাকা।

অনুসন্ধানে জানা যায়, মাসের পর মাস বেতন আটকে থাকলেও বরাদ্দ টাকা লোপাটে চলে মহাউৎসব। ওপেন টেন্ডার নাই। আছে আরএফকিউ নামে কমিশন বানিজ্য। অভিজ্ঞ বা লাইসেন্সধারী কোন ঠিকাদার নয়, পছন্দের মানুষ বা নিজে করছেন কাজ। সম্প্রতি পানির পাম্প মোটর বসানোর কাজ পায় বাংলাদেশ স্যানেটারী নামে একটি প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটি মালিক বাবুল ইন আরএফএল এর ডিলার। ৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা পানির পাম্প বসানোর কাজটিতে নতুন কোন মেশিন না লাগিয়ে বিল করায় সেখানে হট্টগোলও বাঁধে। পুরাতন মেশিন মেরামত করে বিলের টাকা উত্তোলন করার চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ করেন নাম প্রকাশে অনেচ্ছুক কর্মরত কর্মচারীদের এক অংশ।

কাজের বিষয়টি নিশ্চিত করে ইঞ্জিনিয়ার সামিউল ইসলাম বলেন, গন্ডগোল হওয়ায় একটি পক্ষ আপনাদের মিথ্যা অভিযোগ দিচ্ছেন। সঠিক প্রক্রিয়ায় নতুন মোটর বসানো হয়েছে।

Next Post

নাটোরে স্বামীর পুরুষাঙ্গ কেটে দিলো স্ত্রী!

শনি মার্চ ৫ , ২০২২
আভা ডেস্কঃ নাটোরে স্বামী মসির সরকারের (৫৫) পুরুষাঙ্গ কেটে দিলো স্ত্রী পপি বেগম (৪০)। নাটোর সদরের দরাপপুর এলাকায় এই ঘটনার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ৪ মার্চ শুক্রবার নাটোর সদরের লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের দরাপপুর শেখেরহাট গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। আহত মসির সরকার একই গ্রামের নজির সরকারের ছেলে। এলাকাবাসী জানায়, পারিবারিক কলহের জেরে ঘটনাটি […]

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links