রাজশাহী পবা উপজেলায় প্রশাসনের নাকের ডগায় চলছে অবৈধ পুকুর খনন, প্রশাসন নিরব

নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজশাহীর পবা উপজেলা শস্য ভান্ডার খ্যাত রামচন্দ্রপুর খরখরি, দারুশা, অঞ্চল গুলোর উর্বর ফসলী জমি দিন দিন উজাড় করা হচ্ছে। ৩ ফসলী জমিগুলো ভেকু দিয়ে কেটে তৈরি করা হয়েছে বড়-বড় দীঘি। এ যেন পবা উপজেলায় পুকুর খননের মহোৎসব। ফলে এখানে যেমন কমছে কৃষি জমি, তেমনি পুকুর আর জলাশয়ের কারণে ফসলের মাঠে সৃষ্টি হচ্ছে জলাবদ্ধতা। তেমনি মাটি বহনে নতুন রাস্তায় দফায় দফায় নষ্ট হচ্ছে। ঘটছে সড়ক দুর্ঘটনা।

পবা উপজেলায় নিয়ম নীতিকে  না মেনে অপরিকল্পিত ভাবে পুকুর খনন চলতে থাকায় ফসল উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। উপজেলা মৎস্য অফিসের তথ্য মতে, রাজশাহীতে গত কয়েক বছরে মাছ চাষ কয়েকগুণ বেড়েছে। তবে অতিমাত্রায় কমেছে কৃষিজমির পরিমাণ ১৫ হাজার হেক্টরও বেশি। অপরিকল্পিত পুকুর খননে জলাবদ্ধতায় প্রতি বছরই ব্যাপক ফসলহানি হচ্ছে। চাপও বাড়ছে পরিবেশের ওপর।

পরিবেশ অধিদফতরের কর্মকর্তা বলেন, পুকুর খননে ভূমির শ্রেণী পরিবর্তন হওয়ায় পরিবেশগত প্রতিকূলতার আশঙ্কা বাড়ছে। তবে স্থানীয় প্রশাসনের যথাযথ ভুমিকা না থাকায় এ অপরিকল্পিত পুকুর খননের  প্রতিযোগীতা থামানো যাচ্ছেনা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,পবা উপজেলার সারেংপুর মাদ্রাসার পিছনে বিস্তীর্ণ মাঠে ২৫ বিঘা ফসলী জমিতে পুকুর খনন করছে রফিক হাজী নামে রামচন্দ্রপুর কলেজের শিক্ষক তাকে সহায়তা করছে যুবলীগ নেতা পরিচয় দানকারী পেট্রলপাম এ কর্মরত এমদাদ।

অপর দিকে পবার নামো পারা এলাকায় বরেন্দ্রর পাইপ উঠিয়ে পুকুর খনন করছে আরেক নেতা পরিচয় দানকারী হাবিব ও রাসেল। এদিকে, আওয়ামী লীগ নেতা নবিবুর রামচন্দ্রপুর কালচিকায় কলার বাগান সাবার করে পুকুর খনন করছে আর সেই মাটি বিক্রি করছে পাসের ইট ভাটায়। পবার মেজ ভালামে ধানের ক্ষেত ও আম গাছ কেটে পুকুর খনন করছে রবি নামে আরও একজন। ভালামের মেম্বার স্বপন, বরগাছির শরিফুল আরও অনেকে।

দারুশায় ইকবাল নামে এক আওয়ামী লীগ নেতার পিএস ৬০/৮০ বিঘা জমির পুকুর কাটছেন। দারুশা এলাকার হুজরীপাড়া ইউনিয়নে সাহাপুর গ্রামে ১২-১৫ বিঘা জমি কেটে পুকুর খননের কাজ চলছে।

প্রত্যাক্ষদোষী ও স্থানীয়রা বলছেন, স্থানীয় আওয়ামী লীগের ছত্রছায়ায় প্রভাব বিস্তার ও প্রশাসন ম্যানেজ করেই চলছে পুকুর খনন। এতে করে আবাদি জমির পরিমান দিন দিন কমে আসছে। সড়ক পথ নষ্ট হচ্ছে, পরিবেশ পড়ছে হুমকিতে।

একটি সুত্র নিশ্চিত করে বলেন, পবায় বিঘা প্রতি পুকুর খননে প্রশাসন ম্যানেজে লাগে ২০ হাজার টাকা। ঐ টাকার ভাগ যায় ইউএনও অফিস, এসি ল্যান্ড অফিসসহ সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ প্রশাসনের নিকট। পুকুর খননকারীদের বক্তব্য প্রশাসন ম্যানেজ ছাড়া একটি পুকুরে এক কাঠা জায়গা কাটার ক্ষমতা নেই কারো। এমন্তব্যস্থায় পবায় চলছে পুকুর কাটার মহাৎসব। যেন দেখার কেউ নেই।

এ বিষয়ে পুকুর খননকারীদের কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন,আমরা উপজেলা প্রশাসনসহ সকলকে ম্যানেজ করেই পুকুর খনন করছি, আপনার নিউজ করা দরকার হলে নিউজ করেন।

এ বিষয়ে পবা উপজেলা নির্বাহী অফিসার লসমী চাকমা  বলেন, পবা উপজেলায় পুকুর খনন বন্ধে প্রশাসন তৎপর রয়েছে। প্রশাসনের উদ্যোগে কয়েকবার ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা করা হয়েছে। জমির শ্রেণী বদল করে আবাদি জমিতে পুকুর দীঘি খনন করা বেআইনি ও দন্ডনীয় অপরাধ।

Next Post

রাজশাহীতে বিভাগীয় সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত

মঙ্গল ফেব্রু. ২২ , ২০২২
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ রাজশাহীতে বিভাগীয় সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ (মঙ্গলবার) রাজশাহী বিভাগীয় সমন্বয় সভা বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিভাগীয় কমিশনার জি এস এম জাফরউল্লাহ্ এনডিসি এ সভায় সভাপতিত্ব করেন। সমন্বয় সভায় স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয় যে, আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি সারা দেশের ন্যায় রাজশাহী বিভাগের প্রতিটি […]

এই রকম আরও খবর

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links