নিজস্ব প্রতিনিধিঃ রাজশাহীতে চাকুরী দেওয়ার নাম করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া এক প্রতারকের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ হয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে । সংবাদ প্রকাশের জেরে সেই প্রতারককে সাময়িক বরখাস্থ করেন তার উদ্ধর্তন কর্মকর্তা । বরখাস্থ হয়ে সংবাদ প্রকাশের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির লক্ষে মিথ্যা বানোয়াট অভিযোগ দাখিল করে দুটি পত্রিকায় বিশেষ সুবিধার বিনিময়ে সংবাদ প্রকাশ করেন । তথ্য প্রমানাদিসহ সেই প্রতারকের সংবাদ প্রকাশ করলে তাকে বাঁচাতে মরিয়া হয়ে উঠে তার সহযোগীরা । সেই প্রতারক পশ্চিম রেলের জিএম দপ্তরের বার্তা বাহক । নাম জিয়াউর রহমান জিয়া ওরফে পিএস মিনিস্টার জিয়া ।
১ম ঘটনাঃ
রাজশাহী মহানগর ডিবি গত ২২ জুন চাকুরীর নামে প্রতারনা করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার মুল হোতা মহিবুল আলম তীমুকে আটক করেন । যাহার চন্দ্রিমা থানার মামলা নং ১৬ । ঐ মামলার অন্য সহযোগী পশ্চিম রেলের জিএম দপ্তরের কর্মরত জিয়াউর রহমান জিয়া । মামলার বরাতে জানা যায়, মোহনপুর থানাধীন মোহনপুর গোছা গ্রামের আঃ জলিলের পুত্র আতিকুর রহমানসহ কয়েকজনের নিকট থেকে চাকুরী দেওয়ার কথা বলে টাকা নেয় তীমু ও তার সহযোগীরা । চাকুরী না পেয়ে আতিকুর রহমান টাকা ফেরত পেতে চাপ দিলে থাকলে প্রতারকদয় উলটো তাকে অপহরন করে । অপহরণে পর তিনশত টাকার স্ট্যাম্পে ৭ লক্ষ টাকা লিখে স্বাক্ষর করে মারধর করেন আতিকুরকে । পরে সেখান থেকে বেঁচে মহানগর ডিবিতে লিখিত অভিযোগ দিলে স্বাক্ষরীত স্ট্যাম্পসহ মুল হোতা তীমকে আটক করেন ডিবি । কিন্তু সেখানে উপস্থিত অন্য আসামীরা এখনো পলাতক আছে । স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করা অন্য সহযোগীরা হলেন জিয়াউর রহমান সহ অন্যান্য আরও কয়েকজন । পরে সেই ঘটনার পর থেকে সাংবাদিকরা এই চক্রটির পেছনে অনুসন্ধান শুরু করে, বেড়িয়ে আসেন অপর সহযোগী জিয়ার নানা প্রতারনার চিত্র ।
২য় ঘটনাঃ
ঐ ঘটনার পর প্রতারক জিয়াউর রহমান জিয়ার খোঁজ খবর নিতে তার নিজ গ্রাম নন্দগাছি পুঠিয়ায় গেলে বেড়িয়ে আসে থলের বিড়াল । পুঠিয়াতেও কয়েকজনের সাথে প্রতারনা করেন জিয়া । রেলে চাকুরী সহ ব্যবসার কথা বলে মাইনুল সহ কয়েকজনের নিকট অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া যায় । এছাড়াও ভুক্তভুগিরা পুঠিয়া থানায় প্রতারক জিয়া ও তার দুলাভাই সোহরাবের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দেয় । যা অজ্ঞাত কারনেই তদন্ত অবস্থায় এ এস আই মাসুদের নিকট আছে । এলাকায় প্রতারক জিয়া একাধারে সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী, মন্ত্রীর পিএস পরিচয়ে এই প্রতারনা করেছে বলে ভুক্তভুগিরা জানান ।
৩য় ঘটনাঃ
চারঘাট এলাকায় দুই ব্যাক্তির নিকট প্রায় সাড়ে নয় লক্ষ টাকা চাকুরী দেওয়ার নামে প্রতারনা করেন জিয়াউর রহমান জিয়া । টাকা নিয়ে উলটো তাদেরকে নানা ভাবে হয়রানি করে আসছিল জিয়া । এর মধ্যে ভুক্তভুগি জমসেদের ছেলে মিলন সাহেব পশ্চিম রেলের জিএম বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন । সেই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সংবাদ প্রকাশ হয় ২৯ শে জুন । এরপর একের পর এক অভিযোগ আসেতে থাকে সাংবাদিকদের নিকট । একই এলাকার অপর ব্যাক্তি মুনসান সেও জিয়ার নিকট প্রতারনার শিকার হন । সেই ঘটনার সংবাদ প্রকাশ হয় ৩০ শে জুন ।
৪র্থ ঘটনাঃ
মন্ত্রীর পিএস পরিচয়ে এই সকল প্রতারনার চাঞ্চল্যকর তথ্য দেয় ভুক্তভুগি কয়েকজন । তারা বলেন জিয়ার ফোন নম্বরে ফোন দিলে জিয়া পিএস মিনিস্টার লিখা উঠে । সত্যতা যাচাইয়ে তার ব্যবহৃত মোবাইল নং ০১৬২২-৮৬০১৮২ তে ফোন দিলে দেখা যায় তা সঠিক । ট্রু কলারে ফোন দিলেই লিখা উঠতে থাকে জিয়া পিএস মিনিস্টার । এদিকে নিজেকে সাংবাদিক পরিচয়ে একটি সংবাদ মাধ্যমের নয় মানবাধিকার কর্মীর প্রেস লিখা কার্ড সামাজিক মাধ্যমে ছাড়েন । সেই কার্ডটি ব্যবহার করেও কয়েকজনের নিকট চাঁদা দাবি করেন সে । সরকারী চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারী হওয়া শর্তেও সে একের পর এক অপকর্ম পার পেয়ে গেলেও এবার পশ্চিম রেলের জিএম প্রাথমিক সতত্যা পেয়ে তাকে সাময়িক বরখাস্থ করেন । এতেই তাকে বাঁচাতে তার পৃষ্ঠ পোষকরা মরিয়া হয়ে উঠে । তারা তার বিরুদ্ধে চলমান তদন্তকে প্রভাবিত করতে মিথ্যা তথ্য দিয়ে পুলিশ কমিশনার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের পুর্বক সংবাদ প্রকাশ করেন । তারা জিএম পশ্চিমের বক্তব্য ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে তাকে বাঁচাতে প্রাণপন চেষ্টা করছে । সেই সকল সংবাদ মাধ্যমে লিখা হয় জিএমকে চাপ দিয়ে তাকে বরখাস্থ করা হয়েছে । যা জিএম বলেনি বলে জানিয়েছে জিএম পশ্চিম। এগুলোর মুল উদ্দোশ্য এই প্রতারককে বাঁচানোর ব্যথ প্র্যয়াস। অজ্ঞাত কারনে তার পেছনের সহযোগীদের কারনে অনেক ভুক্তভুগি তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিতে ভয় পায়, মামলা হামলার ভয়ে । যেখানে সাংবাদিক সংবাদ প্রকাশ করার পর, সে সাংবাদিককে হয়রানি করতে মিথ্যা তথ্য দিয়ে পুলিশ কমিশনারকে অভিযোগ করে, সেই অভিযোগের কপি দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করে, সেখানে ভুক্তভুগিদের অবস্থা কি হবে তা খুব সহজেই অনুমেয় । সেই সংবাদ মাধ্যমগুলোতেও অভিযোগের কপির ভুল ব্যাখ্যা প্রদান করেছে, ভুল তথ্য প্রচার করে কিছু তথ্য গোপন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে রাজশাহী মডেল প্রেস ক্লাবের সাংবাদিকরা । অভিযোগের বরাদে সংবাদে, তার বিরুদ্ধে হওয়া সংবাদ মাধ্যমগুলোকে হেয়পতিপন্ন করা হয়েছে বলেও অভিযোগ সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকদের ।
এ বিষয়ে জিয়ার বিরুদ্ধে প্রকাশিত করা সংবাদের সাংবাদিকের একাংশ বলেন, প্রকাশিত সংবাদের মিথ্যাচার ও তথ্য গোপন করার দায়ে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে । প্রথমে তাদের বিরুদ্ধে উকিল নোটিশ দেওয়া হবে । সংবাদের সংশোধনী না দিলে আইনগত প্রক্রিয়ায় ব্যবস্থা নেওয়া হবে । প্রয়োজনে তাদের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করাও হবে বলে জানান সাংবাদিকরা ।
একই দপ্তরে চাকুরী করেন জিয়া ও তার বউ আদরী । সেই সুযোগে অফিস না করেই হাজিরা হয়ে যায় জিয়ার । অভিযোগ আছে তার বউ আদরী খাতুনের বিরুদ্ধেও । সেও এতিম ও অসহায় বাবা হারা মৃত্যু কোটায় চাকুরী নেয় ২০১৫ সালে, যা আদৌও সত্য নয়, কারণ সেই সময় তার বাবা জীবিত ছিলেন।