নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীতে শত কোটি টাকা মূল্যের ১৮টি বালুমহালের টেন্ডারের দরপত্র (সিডিউল) আটকে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের একজন প্রভাবশালী নেতার দাপটে ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের একটি চক্রের কারসাজিতে অন্য ব্যবসায়ীদের কাছে সিডিউল বিক্রি করা হচ্ছে না। সিডিউল না পেয়ে ব্যবসায়ীরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ঘুরছেন। কিন্তু সিডিউল দেওয়া হচ্ছে না সিন্ডিকেটের বাইরে কোনো ব্যবসায়ীকে।
বালু ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, বিগত ১০ বছর ধরে সরকার দলের এক নেতা রাজশাহীর বালু সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করছেন। তাঁর নেতৃত্বে রাজশাহীতে গড়ে উঠা বালু সিন্ডিকেট নামে বেনামে সবকটি বালুমহাল ইজারা ও দখলে নিয়ে শত শত কোটি কোটি টাকার বালু উত্তোলন করা হয় পদ্মা নদী থেকে। সেই ধারাবাহিকতায় এবারেও টেন্ডার আহ্বান করার পর থেকেই আলোচিত সিন্ডিকেট সক্রিয় হয়ে উঠেছেন সবকটি ঘাটের নিয়ন্ত্রণ নিতে।
ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে আরো জানান, চলতি ১৪২৫ বাংলা সনে জেলার চারঘাট, বাঘা ও গোদাগাড়ীতে পদ্মা নদীর ১৪২ হেক্টর আয়তনের মোট ১৮টি বালুমহালের ইজারা হয়নি উচ্চ আদালতে মামলা চলার কারণে। সম্প্রতি সংশ্লিষ্ট মামলাটি উচ্চ আদালতে নিস্পত্তি হওয়ায় রাজশাহী জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে ১৪২৫ বাংলা সনের অবশিষ্ট ৬ মাসের জন্য গত ২৪ সেপ্টেম্বর টে-ার আহ্বান করা হয়। সে অনুযায়ী আগামি ৯ অক্টোবর সিডিউল কেনার শেষদিন এবং ১০ অক্টোবর দুপুর একটার মধ্যে তা দাখিল করতে হবে। কিন্তু আগ্রহী তালিকাভুক্ত বালু ব্যবসায়ীরা গত এক সপ্তাহ ধরে জেলা প্রশাসকের এসএ শাখায় ঘুরেও সিডিউল কিনতে পারছেন না।
জেলার চারঘাট উপজেলার বালু ব্যবসায়ী আকসেদ আলী জানান, তিনি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের তালিকাভুক্ত বালু ব্যবসায়ী। তাঁর হাল নাগাদ লাইসেন্স রয়েছে। কিন্তু তিনি গত কয়েক দিন দরে বালুমহালের লিজ পেতে সিডিউল কেনার জন্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখায় গেলেও তাঁর কাছে সিডিউল বিক্রি করা হয়নি। ওই শাখার কর্মচারিরা তাঁকে বলছেন, ‘উপরের নির্দেশের কারণে সিডিউল সকলের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে না।’
এভাবে সিন্ডিকেটের বাইরে আর কোনো ব্যবসায়ীর কাছে বালুমহালের সিডিউল বিক্রি করা হচ্ছে না বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এসএ শাখার এক কর্মচারি জানান, এখন পর্যন্ত রাজশাহীর বালুমহালের একটি সিডিউলও সিন্ডিকেটের বাইরে কাউকে দেওয়া হয়নি। শুধুমাত্র বালু সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িতদের সিডিউল দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে রাজশাহী জেলা প্রশাসক ও বালুমহাল ইজারা কমিটির সভাপতি এসএম আব্দুর কাদের বলেন, বালুমহালের ইজারা টেন্ডারের শর্তানুযায়ী তালিকাভুক্ত বৈধ লাইসেন্সধারীরা সিডিউল কিনতে পারবেন। অনেকেই সিডিউল কিনতে গিয়ে ফিরে এসেছেন এমন অভিযোগ তার জানা নেই বলে জানান তিনি।
কালেকশন