আভা ডেস্কঃ ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী উচ্চ রক্তচাপ থাকা যেসব ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে প্যারাসিটামল খান, তাদের হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়তে পারে। সম্প্রতি এক গবেষণা থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
যুক্তরাজ্যের এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা বলছেন, যেসব রোগী দীর্ঘদিন ধরে প্যারাসিটামল খাচ্ছেন, তাদের স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয়গুলো চিকিৎসকদের চিন্তা করা দরকার।
এ বিষয়ে নিশ্চিতভাবে জানার জন্য আরও বেশি মানুষের ওপর বেশি সময় ধরে গবেষণা চালানো প্রয়োজন বলে মত দিয়েছেন অন্য গবেষকরা।
বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে বলা হয়, স্কটল্যান্ডে ২০১৮ সালে অন্তত ৫ লাখ মানুষকে প্যারাসিটামল খাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছিল। এই সংখ্যা দেশটির জনসংখ্যার ১০ শতাংশ।
সার্কুলেশন সাময়িকীতে সম্প্রতি এই গবেষণা-বিষয়ক নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণার ট্রায়ালে উঠে এসেছে, ‘প্যারাসিটামলের কারণে তৈরি হওয়া উচ্চ রক্তচাপ’ হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের অন্যতম প্রধান কারণ।
নিবন্ধে জানানো হয়, যুক্তরাজ্যে প্রতি তিনজনের একজন উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভুগে থাকেন। তারা যদি প্যারাসিটামল খেতে থাকেন তাহলে তাদের আরও বেশি স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হতে পারে।
গবেষণার সমীক্ষায় ১১০ জন স্বেচ্ছাসেবীকে বেছে নেয়া হয়। তাদের দুই সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন ৪টি করে প্যারাসিটামল খেতে দেয়া হয়।
এই স্বেচ্ছাসেবীদের দুই-তৃতীয়াংশ উচ্চ রক্তচাপের কারণে প্যারাসিটামল খাচ্ছিলেন।
সমীক্ষায় উঠে এসেছে, প্যারাসিটামলের কারণে তৈরি হওয়া উচ্চ রক্তচাপ হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের অন্যতম প্রধান কারণ।
তবে লন্ডনের সেইন্ট জর্জেস ইউনিভার্সিটির ফার্মাকোলজি ও থেরাপিউটিকসের শিক্ষক ড. দিপেন্দর গিল বলেছেন, ‘এখনও এ সম্পর্কে অনেক তথ্য অজানা রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘প্যারাসিটামল খাওয়ার ফলে রক্তচাপ বাড়ার সমস্যা দীর্ঘদিন ধরে থাকে কি না, তা পরিষ্কার নয়। প্যারাসিটামলের জন্য বেড়ে যাওয়া রক্তচাপের কারণে হৃদরোগ তৈরি হতে পারে কি না, তাও নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি।’
যুক্তরাষ্ট্রের একটি গবেষণায় এর আগে উঠে এসেছিল, দীর্ঘ মেয়াদে প্যারাসিটামলের ব্যবহার হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায়। তবে এই দুটির মধ্যে সরাসরি সম্পর্ক আছে কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এডিনবরার গবেষকরা বলছেন, ‘প্যারাসিটামল কীভাবে রক্তচাপ বাড়ায়, সে সম্পর্কে তারা পরিষ্কারভাবে ব্যাখ্যা দিতে পারছেন না।’
তবে তারা আশা প্রকাশ করেছেন, তাদের গবেষণা থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে প্যারাসিটামল প্রেসক্রাইব করার বিষয়টি নিয়ে নতুন করে গবেষণা শুরু হবে।
গবেষণাটির অর্থায়ন করেছে ব্রিটিশ হার্ট ফাউন্ডেশন। তারা বলছে, ডাক্তার ও রোগীদের প্রতিনিয়ত চিন্তা করা উচিত যে, ‘প্যারাসিটামলের মতো অপেক্ষাকৃত ক্ষতিহীন’ ওষুধও আমাদের খাওয়া উচিত কি না।