মেসে একের পর এক চুরি, উদ্বিগ্ন রাবি শিক্ষার্থীরা

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ মহামারি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে গত ১৮ মার্চ দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ ঘোষণা করা হয়। তড়িঘড়ি করেই হল ও মেস ত্যাগ করেন শিক্ষার্থীরা।রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ১৫ দিন বন্ধের কথা থাকলেও সেটি গড়িয়েছে অনির্দিষ্টকালে।

এর ফলে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে যেতে পারেননি কোন শিক্ষার্থী। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘ দিনের বন্ধের সুযোগে, বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের এলাকার মেসগুলোতে বেড়েছে চোরের উপদ্রব। এতে উদ্বিগ্ন রাবি শিক্ষার্থীরা।

গত দুই মাসে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বিনোদপুর ও বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশন বাজারের, কাজলা,বিনোদপুর, তালাইমারীএলাকাসহ বিভিন্ন মেসে চুরির ঘটনা ঘটেছে।

সর্বশেষ মঙ্গলবার (১৪ জুলাই) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেশন বাজার এলাকার এক মেসের ৮টি তালা ভেঙে শিক্ষার্থীদের সমস্ত মালামাল চুরি হয়েছে। এমনকি চোরদের হাত থেকে রক্ষা পায়নি শিক্ষার্থীদের সার্টিফিকেটও।

ওই মেসের ভুক্তভোগীদের মধ্যে সমাজকর্ম বিভাগে শিক্ষার্থী সুজন আলী জানান, হঠাৎ করে ছুটির ঘোষণার কারণে বাসায় পড়ার জন্য কয়েকটা রিডিংশিট ছাড়া আর কিছুই নিয়ে যেতে পারেননি।

গত ১৫ জুলাই ফোনে কোন এক অপরিচিত লোক মোবাইলে কলে জানান, সারদার কোনো এক পরিত্যক্ত জায়গায় আমার সার্টিফিকেট ও কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পাওয়া গেছে।

বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য আমি তথ্যগুলো মিলিয়ে দেখি যে ওইগুলো সব আমারই কাগজপত্র। বিষয়টি মেস মালিককে ফোন দিয়ে অবহিত করি।

পরে মেসের এক সহকর্মী শিক্ষার্থী জানায়, ফ্যান, টিভি, বাল্ব, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, বই-খাতা, পোশাক, লেপ-তোষক এমনকি টিউবওয়েলের মাথাটাও চোরেরা নিয়ে গেছে।

বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন মেহেরচন্ডির মহসীন মেসে থাকেন বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী তৌহিদুল হক তুহিন। তিনি জানান, হঠাৎ করে ছুটি ঘোষণার কারণে আমার সব কাগজপত্র ট্রাংকে রেখে গিয়েছিলাম। কিন্তু কয়েকদিন পরেই মেসে চুরি হয়।চোরেরা,আমার ট্রাংকসহ লাগেজ, লেপ-তোষক, প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র নিয়ে গেছে। পরে,সার্টিফিকেটগুলো রাজশাহীর আরেকটি উপজেলা সারদায় গিয়ে পাই।

আমরা ১৬ জন একই মেসে থাকি। আমার রুমমেটের সার্টিফিকেট এখনও পাওয়া যায়নি। এই পরিস্থিতিতে একের পর এক চুরি সত্যিই দুঃখজনক।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ৩৫ হাজার শিক্ষার্থীর এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসন সুবিধা রয়েছে মাত্র ৮ হাজার শিক্ষার্থীর। বাকি ২৭ হাজার শিক্ষার্থী আবসিক হলের বাইরে মেসে কিংবা ভাড়া বাসায় থেকে পড়াশোনা করেন।

যাদের মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য পরিমাণই মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে আসা। মেস ভাড়া সংকটের মধ্যে এখন বেড়েছে চোরের উপদ্রব। এ কারণে আতঙ্কে দিন পার কারছেন রাবির অধিকাংশ শিক্ষার্থী।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র উপদেষ্টা (অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত) ও প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, স্টেশন বাজার সংলগ্ন একটি মেসের চুরির ঘটনা শুনে আমি ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে ফোন দেই। এবং সব ধরনের আইনি সহায়তার আশ্বাস দেই। কিন্তু পরবর্তীতে ওই ছাত্র আমার সাথে আর যোগাযোগ করেনি। এসব অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় সব ধরনের সহায়তায় রাবি প্রক্টরিয়াল বডি সর্বদা তৎপর রয়েছে।

জানতে চাইলে চন্দ্রিমা থানার অফিসার ইনচার্জ সিরাজুম মনির ও মতিহার থানার ইনচার্জ মাসুদ পারভেজ উভয়েই বলেন, চুরির বিষয়টি তারা শুনেছেন।এখন পর্যন্ত কোনো শিক্ষার্থী থানায় কোন মৌখিক বা লিখিত অভিযোগ করেনি।

তবুও ছাত্রাবাস এলাকায় চুরি এড়াতে পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে এবং চিন্হিত চোরদের ধরার চেষ্টা চলছে।

 

Next Post

শিক্ষার্থীদের শতভাগ প্রযুক্তি সহায়তার দাবিতে ছাত্র মৈত্রীর মানববন্ধন

রবি জুলাই ১৯ , ২০২০
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ শতভাগ শিক্ষার্থীকে প্রযুক্তি সহায়তা ও বিনামূল্যে উচ্চগতির ইন্টারনেট প্যাকেজ প্রদানে সরকারী প্রনোদনার দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৯ জুলাই রোববার, বেলা সাড়ে ১১টায় রাজশাহী সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে এ মানববন্ধনের আয়োজন করেন বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রী। মানববন্ধন থেকে বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রীর নেতৃবৃন্দ দাবি করেন, শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তি সহায়তা ও বিনামূল্যে উচ্চগতির ইন্টারনেট প্যাকেজ […]

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links