নিজস্ব প্রতিনিধিঃ বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশের সকল মানুষের জীবিকা, খাদ্য এবং পুষ্টির নিরাপত্তা অধিকার-মানবাধিকার নিশ্চিত করতে ‘খাদ্য অধিকার আইন’ প্রণয়নের দাবিতে রাজশাহী অলকার মোড় থেকে এক সাইকেল র্যালীর আয়োজন করা হয়। পরিবর্তন ও খাদ্য নিরাপত্তা নেটওয়ার্ক (খানি), বাংলাদেশ যৌথ উদ্যোগে এই কমসূচির আয়োজন করা হয়। অলকার মোড়ে কর্মসূচির সুচনা কালে বক্তব্য দেন ইউমেন ইন্টার প্রেনার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশে-ওয়েব রাজশাহী শাখার সভাপতি আঞ্জুমান আরা লিপি, পরিবর্তন পরিচালক রাশেদ রিপন, প্রোগ্রাম অফিসার সোমা হাসান এবং উন্নয়ন কর্মী হাসিবুল হাসান পল্লব।
এ সময় বক্তারা বলেন, ‘খাদ্যের অধিকার শুধুই রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক অধিকার নয়, বরং মানবাধিকারের অংশ। মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণাপত্রের ২৫ এর (১) অনুচ্ছেদে,খাদ্য অধিকারের বিষয় পষ্ট করে বলা আছে। তবে এই অধিকার শুধু মাত্র ক্ষেত্র বিশেষে জরুরী অবস্থায় খাদ্যের সরবরাহ যোগান নয়, বরং আইনী কাঠামো ও ফলপ্রসূ কৌশলের মাধ্যমে সকলের জীবন ও জীবিকার নিশ্চয়তা প্রদান ও সব সময় খাদ্য ও পুষ্টির সরবরাহের অধিকার নিশ্চিত করাকে বোঝায়।
যেহেতু খাদ্যের অধিকার একটি মানবাধিকার, তাই নাগরিকের খাদ্য অধিকার নিশ্চিত করার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। আর এই দায়িত্ব তখনই পালন করা সম্ভব হবে, যখন একটি ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব হবে। সেটি করতে হলে খাদ্য অধিকার আইনপ্রণয়নের কোন বিকল্প নেই।
এ সময় বক্তারা আরো বলেন, ইন্টারন্যাশনাল ফুড পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রকাশিত বিশ্ব খাদ্য নিরাপত্তা সূচক-২০২০ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১০৭টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৭৫, যেখানে বাংলাদেশ ক্ষুধা সূচকে ‘গুরুতর মাত্রা’ ক্যাটাগরিতে অবস্থান করছে। দেশে প্রায় ৪ কোটি মানুষ পুষ্টিহীনতার শিকার এবং প্রায় ৪৪ শতাংশ নারী রক্তস্বল্পতায় ভোগেন। প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল দুর্গম এলাকার দলিত, আদিবাসী, বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও শহরের নিম্নআয়ের মানুষের মধ্যে পুষ্টিহীনতা বেশি।
করোনাকালে এই অবস্থা আরও গুরুতর আকার ধারণ করেছে। লকডাউন চলাকালীন সময়ে দেশের শহরাঞ্চলে মানুষের ৪৭ শতাংশ ও গ্রামের মানুষের ৩২ শতাংশ খাবারের পরিমাণ কমেছে। সরকারি তথ্য মোতাবেকই দেশেরপ্রায় পৌনে ৪ কোটিমানুষ (দরিদ্র ২১.৮ শতাংশ) পর্যাপ্ত খাবার গ্রহণ করতে পারতোনা। যা সরাসরি মানবাধিকারের লংঘন।